এসো শান্তির পথে চলি by সালমা সেতারা

আল্লাহ পাককে সকাল-সন্ধ্যা স্মরণ করাটাই তো আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের একত্মবাদকে লালন করা। ভালোবেসে তার আনুগত্য করা।সৃষ্টির সেরা মানুষ। আমরা সৃজিত। যেহেতু সৃজনকর্তা কর্তৃক সৃজিত সেহেতু আমরা সৃজন বৈশিষ্ট্যই স্রষ্টার ওপর পরম নির্ভরশীলতায় আত্মসমর্পণে শান্তি লাভ করতে পারি। আল্লাহ পাক আমাদের পালনকর্তা।


এ অনুভব আমাদের মাঝে নিরন্তর স্পন্দিত হচ্ছে। পরিতাপের বিষয়, আমরা তা অনুভব করার শক্তি হারিয়ে ফেলছি। পাপের ও বিস্মরণের ধুলোয় সে পবিত্র স্পন্দন স্তিমিতপ্রায়!
এ জন্যই আমরা জীবনের সকল কর্মের দায় স্বেচ্ছায় নিজেদের অলক্ষ্যে নিজেদের কাঁধে নিয়ে পার্থিব জীবনকে ক্লান্ত করে তুলছি। পদে পদে আমাদের বিপন্নতা ঘিরে ফেলছে।
আল্লাহ পাক সূরা নূরে বলেছেন, সেসব লোক যাহাদিগকে ব্যবসা-বাণিজ্য, ক্রয়-বিক্রয় আল্লাহর স্মরণ থেকে এবং নামাজ কায়েম ও জাকাত প্রদান থেকে বিরত রাখে না তারা ভয় করে সেদিনকে, যেদিন তাদের অন্তর ও দৃষ্টি বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে। (সূরা নূর :৩৭)
আল্লাহ পাক এখানে কাদের কথা বলেছেন, যারা ভয় করে সেই দিনকে? তারা হলো, ব্যবসা-বাণিজ্য, ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে যারা আল্লাহ পাকের নির্দেশনা মেনে চলে ও তার স্মরণ থেকে একটুও বিস্মৃত হয় না। 'যারা হয়' তাদের কথা বলেছেন শেষ বিচারের দিনে তাদের অন্তর ও দৃষ্টি বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে।
মানুষ তো পাঁচটি ইন্দ্রিয় দ্বারাই কাম, ক্রোধ, মোহ, মদ, মাৎসর্যের শিকারে পড়ে যায়। অপরপক্ষে এই পাঁচ শক্তি দিয়েই জ্ঞান লাভ ও ভালো-মন্দের বিচারও করতে পারে। অনুভব-উপলব্ধি যাই বলি না কেন এ পাঁচ শক্তির দ্বারাই সম্পাদন হয় মানুষের দৈনন্দিন কার্যক্রম।
আল্লাহ পাক এ ৫ শক্তির প্রতি লক্ষ্য রেখেই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ অবশ্য পালনীয় অর্থাৎ 'ফরজ' করেছেন। এই পাঁচ শক্তি থেকে ব্যক্তি নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার অপর পিঠেই শান্তির বসবাস। আল্লাহর সন্তুষ্টি প্রাপ্তিও একই সঙ্গে লাভ করা যায়। তাহলে আর অযথা দুশ্চিন্তা হয় না, অযথা দায়বদ্ধতা কাঁধে চাপে না, অন্যায় প্ররোচনায় তাড়িত ভাব থেকে অস্থিরতা আসে না। জিঘাংসা তাড়িয়ে বেড়ায় না। সমাজের, প্রকারান্তরে রাষ্ট্রের অনিষ্ট চিন্তা মনে আসে না।
এসব দুষ্কর্ম থেকে নিজেদের যদি সহজ-সরল পথে অর্থাৎ আল্লাহ পাকের নির্দেশিত পথে পরিচালিত করি, তাহলেই হলো শান্তির পথে চলা।
আমরা যে যেমন পেশায় নিয়োজিত সেই পেশার প্রতি আল্লাহ পাকের কী কী নির্দেশনা আছে তা জেনে নিতে ও পালন করতে চেষ্টা করি। আল্লাহ পাকের মনোনীত যে ধর্ম, সে ধর্ম চিরকল্যাণকর। সে ধর্ম শান্তির ছায়াপথ। যার নাম 'ইসলাম'। ইসলাম অর্থ শান্তি ও আত্মসমর্পণ। এই আত্মসমর্পণ শুধু রমজানেই শেষ নয়। বোধ ও চেতনার শুরু থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হওয়াই সমর্পিত হওয়া।
 

No comments

Powered by Blogger.