প্রকৃতির বাড়ি প্রযুক্তির গাড়ি

বিল গেটসের বাড়ি যুক্তরাষ্ট্রের লেক ওয়াশিংটনের পাশে একেবারে প্রকৃতির মধ্যে ৬৬ হাজার বর্গফুটের বাড়ি বিল গেটসের। যুক্তরাষ্ট্রের এক নম্বর ধনী বিল গেটসের বড় পরিচয় বিশ্বসেরা সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফট করপোরেশনের পুরোধা তিনি। সিটিজেন কেইন ছবির প্রধান চরিত্র জানাডুই হয়ে উঠেছে এ বাড়ির নাম।


বাড়িটিতে রয়েছে দারুণ সব প্রযুক্তির সমন্বয়। বিশাল প্রসাদসম এ বাড়িটি তৈরি করতে সময় লেগেছিল সাত বছর এবং খরচ হয়েছিল ছয় কোটি তিন লাখ ডলার।
প্যাসিফিক লজ ধরনের নকশায় তৈরি এ বাড়িটিতে রয়েছে ব্যক্তিগত বিশাল গ্রন্থাগার। রয়েছে বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি সার্ভার-ব্যবস্থা, যার সঙ্গে যুক্ত নানা বিষয়। যাঁরা অতিথি হিসেবে এ বাড়িতে আসবেন, তাঁদের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ তাপমাত্রা, সংগীত, আলো থেকে শুরু করে সবকিছুই নিয়ন্ত্রিত হয় সুনিপুণভাবে। এ ক্ষেত্রে অতিথিকে একটি ছোট পিন নিজের পোশাকের সঙ্গে যুক্ত করতে হয়, যা তাঁর পছন্দ অনুযায়ী সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। অনেকটা ভার্চুয়াল ট্যুরের মতোই সবকিছু তৈরি করা। সব মিলিয়ে ১০০টি মাইক্রোকম্পিউটার ব্যবহার করা হয়েছে বিভিন্ন কাজে। প্রতিটি ঘরে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঘরের বিভিন্ন তথ্য জানানোর ব্যবস্থাও আছে। এ বাড়িটি ভূমিকম্প প্রতিরোধক। প্রযুক্তির দারুণ সমন্বয়ও রয়েছে বাড়িটিতে। চারপাশে সবুজ গাছগাছালিতে বেষ্টিত বাড়িটির পাশেই থাকা হ্রদের স্বচ্ছ পানিতেও রয়েছে অতিথিদের জন্য সময় কাটানোর সুযোগ। একেবারে হাল আমলের প্রযুক্তির সমন্বয়ে তৈরি বাড়িটিতে রয়েছে সাতটি শোবার ঘর, ২৪টি টয়লেট, ১০টি স্নানঘর, ছয়টি রান্নাঘর এবং আগুন নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা।

বিল গেটসের গাড়ি
গাড়ির ব্যাপারে বেশ শৌখিন বিল গেটস। তাই তাঁর সংগ্রহে রয়েছে একাধিক গাড়ি। মজার বিষয় হচ্ছে, বিলের প্রিয় গাড়ির মধ্যে অন্যতম হচ্ছে পোর্শে গাড়ি। সময় ও আয়োজন হিসেবে গাড়ি ব্যবহার করেন বিল গেটস। এ তালিকায় শীর্ষে আছে পোর্শে ৯৩০ ট্রুবো। বিশ্বের অন্যতম দ্রুতগতির গাড়ি হচ্ছে পোর্শে। গাড়িটির গতি ঘণ্টায় ১৯৫ মাইল। মূলত স্পোর্টস কার হিসেবেই পরিচিত এটি। বিল গেটসের গাড়ির তালিকায় আরও আছে পোর্শের ৯৫৯ কোপ মডেলের কার। আছে পোর্শে ৯১১ কনভার্টিবল। এ গাড়িগুলো নিজের পছন্দেই কিনেছেন তিনি। গাড়িগুলোতে প্রযুক্তির দারুণ সব ব্যবহার রয়েছে, যা বিলকে আকৃষ্ট করার ক্ষেত্রে কাজ করেছে।

মার্ক জাকারবার্গের বাড়ি
বিশ্বের অন্যতম তরুণ বিলিওনিয়ার মার্ক জাকারবার্গ। সামাজিক যোগাযোগের সাইট ফেসবুকের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গের বাড়িটি অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার পালো আল্টোতে। ফেসবুকের প্রধান কার্যালয় থেকে মাত্র ১০ মিনিটের দূরত্ব মার্কের বাসা। বাড়িটির আয়তন ৫১ হাজার ৬১৭ বর্গফুট। এটি ১৯০৩ সালে নির্মিত। বাড়িটিতে রয়েছে পাঁচটি শোবার ঘর, পাঁচটি স্নানঘর ইত্যাদি। দোতলা এ বাড়িতে রয়েছে আলাদা সুইমিং পুল, মিউজিক জোন, বড় রান্নাঘরসহ নানা আয়োজন। খুব বেশি জাঁকজমক না হলেও বাড়িটির অন্দর দারুণভাবে সাজানো হয়েছে। নানা ধরনের ফুলের গাছের সমারোহ রয়েছে মার্কের বাড়িতে। রয়েছে খোলা বারান্দার মতো দারুণ এক জায়গা, যেখানে রয়েছে অতিথিদের জন্য আড্ডা দেওয়ার ব্যবস্থা। খুব বেশি প্রযুক্তিসুবিধা নেই মার্কের বাড়িতে। তবে রয়েছে নান্দনিকতার সুনিপুণ ছোঁয়া আর প্রকৃতি তো আছেই।

মার্ক জাকারবার্গের গাড়ি
গাড়ির ব্যাপারেও একেবারে খুব বেশি শৌখিন নন মার্ক জাকারবার্গ। সব সময় ব্যবহারের জন্য মার্কের প্রিয় গাড়ির তালিকায় রয়েছে একুরা টিএসএক্স। নিজেই গাড়ি চালাতে পছন্দ করেন তিনি।
একুরা টিএসএক্স গাড়ির ইঞ্জিনটি ২০১ অশ্বশক্তির (হর্স পাওয়ার)। নিজের পছন্দের সঙ্গে মিল
থাকায় এ গাড়িটিই প্রিয় মার্ক জাকারবার্গের। উন্নত বৈশিষ্ট্যের গাড়িটিতে রয়েছে চামড়ার ইন্টেরিয়র, স্বয়ংক্রিয়ভাবে বায়ু নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা, সাতটি স্পিকার যুক্ত সাউন্ড সিস্টেম, স্যাটেলাইট রেডিও, তারহীন ব্লুটুথ, হ্যান্ডসফ্রি লিংক ইত্যাদি। এ গাড়িটি নিজের পছন্দসই জায়গায় যাওয়ার সময়ই শুধু ব্যবহার করেন মার্ক।

সের্গেই ব্রিনের বাড়ি
গুগলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা সের্গেই ব্রিনের বাড়ি যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের গ্রিনউইচ স্ট্রিটে। তিন হাজার ৫০০ বর্গফুটের এ বাড়িটি তৈরিতে খরচ হয়েছে ৮৫ লাখ ডলার। চারটি শোবার ঘর, তিনটি স্নানঘর, এক হাজার ২০০ বর্গফুটের ব্যক্তিগত টেরেস ইত্যাদি আছে এতে। খুব বেশি বড় কিংবা আলাদা কিছু না হলেও অন্দরসজ্জার সুনিপুণ কাজ করা হয়েছে বাড়িটিতে। সবুজ ঘাসের তৈরি বাড়ির সামনের লনে রয়েছে গাছের সমারোহ। সুন্দরভাবে বিছানো ঘাস আর চারপাশ সবুজে ঘেরা বাড়িটির বেশ কিছু বৈশিষ্ট্যই অন্য বাড়ি থেকে আলাদা করে দেয় বাড়িটিকে।

সের্গেই ব্রিনের গাড়ি
গাড়ির ব্যাপারে দারুণ শৌখিন গুগলের এই সহ-প্রতিষ্ঠাতা। নিজের পছন্দের গাড়ির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে টয়োটা প্রিয়াস। দারুণ বডির জন্যই গাড়িটি বেশি পছন্দ ব্রিনের। দারুণ গতি গাড়িটির। মাত্র ১১.৭ সেকেন্ডে গতিবেগ ১০০ কিলোমিটারে উঠতে পারে। এ ছাড়া ব্রিনের গাড়ির তালিকায় রয়েছে টেসলা রোডস্টার। এ স্পোর্টস কারটি নিজের খুব পছন্দের গাড়ি হওয়ায় পছন্দসই জায়গায়ই শুধু ব্যবহার করেন তিনি। গাড়ির ব্যাপারে শৌখিন সের্গেই ব্রিন নিজের পছন্দগুলো মিলে যায়, এমন গাড়িকেই বেশি গুরুত্ব দেন।
তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া, বর্নরিচ ডট কম

No comments

Powered by Blogger.