ইরাকে সিরিজ বোমা হামলা নিহত ১০৭, আহত ২১৪

ইরাকে গত দুই বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সিরিজ বোমা হামলায় অন্তত ১০৭ জন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২১৪ জন। গতকাল সোমবার দেশটির ১৩টি শহরে এই হামলা হয়েছে। জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদা নতুন করে হামলার হুমকি দেওয়ার পরপরই এসব সহিংসতার ঘটনা ঘটল। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কেউই হামলার দায় স্বীকার করেনি।


গতকাল সোমবার ভোররাত থেকে ইরাকের বিভিন্ন স্থানে হামলা শুরু হয়। সারা দেশে অন্তত ২১টি বিস্ফোরণ হয়। ২০১০ সালের পর দেশটিতে এত বড় হামলা আর হয়নি। ওই বছর ১০ মে বিভিন্ন স্থানে বোমা হামলায় ১১০ জন মারা যান। গতকাল সবচেয়ে বড় হামলাটি হয়েছে বাগদাদের উত্তরাঞ্চলে তাজি শহরে। সেখানে একটি আবাসিক ভবনের সামনে বোমার বিস্ফোরণে সবচেয়ে বেশি লোক মারা গেছে। একটি হামলার পর উদ্ধারকর্মীরা যখন ঘটনাস্থলে ছুটে যান, তখন সেখানে আরেকটি হামলা হয়। দুটি বিস্ফোরণে কমপক্ষে ৪২ জনের মৃত্যু ও ৪০ জন আহত হয়েছেন সেখানে। তাজির বাসিন্দা আবু মোহাম্মদ (৪০) বলেন, 'দূরে বিস্ফোরণের শব্দ পেয়ে আমি বাড়ি থেকে বের হয়ে আসি এবং বাড়ির সামনে একটি গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখি। পুলিশ এটিকে গাড়ি বোমা হিসেবে চিহ্নিত করার পর আমরা প্রতিবেশীদের বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে বলি। কিন্তু লোকজন বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই গাড়িটি বিস্ফোরিত হয়।' বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, বিস্ফোরণস্থলের আশপাশের অনেক বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে।
বাগদাদের সদর সিটিতে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে একটি গাড়ি বোমা বিস্ফোরণে কমপক্ষে ১২ জন নিহত ও ২২ জন আহত হন। বাগদাদের নিকটবর্তী হুসেইনিয়াহ ও ইয়ারমুক শহরে দুটি বিস্ফোরণে তিনজন নিহত ও ২১ জন আহত হন। দিয়ালা প্রদেশের একটি নিরাপত্তা চৌকিতে বন্দুক হামলা ও বোমা বিস্ফোরণে ১১ জন মারা গেছেন এবং ৪০ জন আহত হয়েছেন। বাগদাদের উত্তরে সালাহেদ্দিন প্রদেশের একটি সেনাঘাঁটিতে জঙ্গি হামলায় ১৫ সেনা নিহত ও দুজন আহত হয়েছেন। কিরকুক, দিবিস, তুজ খুরমাতু এলাকায়ও বিস্ফোরণে হতাহতের খবর পাওয়া গেছে। ২০১০ সালের পর দেশটিতে এত বড় হামলা আর হয়নি। ওই বছর ১০ মে বিভিন্ন স্থানে বোমা হামলায় ১১০ জন মারা গিয়েছিল।
গতকালের এসব হামলার দায় কেউ স্বীকার করেনি। তবে ইরাকে আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্কিত জঙ্গি দল ইসলামিক স্টেট অব ইরাক হামলার হুমকি দিয়েছিল। বেশ কয়েকটি জিহাদি ফোরামে পাঠানো অডিও বার্তায় তারা বলে, 'আমরা নতুন একটি পর্ব শুরু করতে যাচ্ছি। ইরাকের সব স্থান থেকে মুসলিম বন্দিদের মুক্ত করে নেওয়াই হবে এর মূল লক্ষ্য। বিচারক, তদন্তকারী ও তাদের প্রহরীদেরও হামলা করা হবে।' সূত্র : এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.