রাজউক, মন্ত্রণালয় আছে কী করতে?-দখলে জেরবার গুলশান লেক

রাজধানীর অভিজাত এলাকা হিসেবে খ্যাত গুলশানের লেকটি কখনো সরবে, কখনো নীরবে ক্ষতির শিকার হচ্ছে। জমির ক্ষুধার কাছে পরাজয় মানছে জলাশয়টি। দিনের পর দিন এর দুই পাড় অবৈধ দখলের কারণে মূল লেকটি সংকুচিত হয়েছে। এখন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়েছে লেকটির মাঝ বরাবর তৈরি করা অবৈধ বাঁধ। শুধু তা-ই নয়, দুই পাড়ের অধিবাসীদের অনেকেই গৃহস্থালি বর্জ্য ফেলে লেকটি প্রায় একটি ভাগাড় বা নর্দমায় পরিণত করে চলেছেন।


গত মঙ্গলবারের প্রথম আলোর প্রথম পাতার বড় ছবিটি দেখাচ্ছে, কীভাবে লেকের মাঝখানে দুটি বাঁধ দিয়ে টিনের টংঘর তৈরি করা হয়েছে। বলা যায়, ভেতর-বাহির সব দিক থেকেই লেকটি গ্রাসের জন্য এগিয়ে আসছে মানুষের বসতি। যাঁরা এগুলো করছেন, তাঁরা প্রভাবশালী। তাঁদের অনেকেই টংঘর বানিয়ে রেখে প্রথমে জায়গাটিতে দখল প্রতিষ্ঠা করেন, তারপর দিনে দিনে ঘুষ-দুর্নীতি ইত্যাদির মাধ্যমে জমির মালিকানার কাগজপত্র তৈরি করে একসময় নিজেদের লেকের জমির মালিক বলে ঘোষণা করেন।
গত বছরের জানুয়ারি মাসেও গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি এ বিষয়ে সোচ্চার হয়েছিল। কমিটির এক সভায় সভাপতি সে সময় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছিলেন, ‘এভাবে চোখের সামনে সরকারি লেক দখল হয়ে যাবে, আর সরকারি কর্মকর্তারা বসে বসে দেখবেন, তা হতে পারে না।’ তিনি তখন এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয় ও রাজউকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। সে সময় মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, রাজউক এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। এরপর এক বছর গেছে, লেকের দখল ও দূষণ না কমে বরং বেড়েছে। খোদ রাজধানীর বুকে যখন এ রকম দখলদারি চলছে, তখন সারা দেশের অবস্থা অনুমান করতে অসুবিধা হয় না। প্রায় সব ক্ষেত্রেই রক্ষকেরা ভক্ষকের মতো আচরণ করে।
আমরা সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটি, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং রাজউকের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আশা করি, গুলশান লেকসহ রাজধানীর সব জলাশয়, উদ্যান ও লেক দখলের হাত থেকে সংরক্ষণ করে প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের প্রাসঙ্গিকতা প্রমাণ করবে।

No comments

Powered by Blogger.