সৈয়দ শামসুল হক বললেন-নিজেকেই অতিক্রমের চেষ্টা করি by মাহবুব আজীজ

সৈয়দ শামসুল হকের ৭৭তম জন্মদিন আগামী ২৭ ডিসেম্বর। এ উপলক্ষে তাঁর অন্তরঙ্গ সাক্ষাৎকারের প্রস্তুতিলগ্নে শুরুতেই মনে হলো-এত দীর্ঘ যার কাজের পরিধি; তাকে এত সংক্ষিপ্ত পরিসরে ধরা যাবে কি উপায়ে? উপন্যাস, ছোটগল্প, কবিতা, কাব্যনাট্য, সঙ্গীত- শিল্পের এতগুলো আঙ্গিকে কাজের পর কাজ করে যিনি এখনও তরুণের মতো নিজের সৃষ্টিতে মনোযোগী; নিরীক্ষার পর নিরীক্ষায় যিনি নিজেকেই ছাড়িয়ে যাওয়ার নিয়ত চেষ্টায় রত; যিনি এখনও


নিজের রচনা নিয়ে অবিরত অতৃপ্তিতে ভোগেন_ সেই সৈয়দ শামসুল হকের সঙ্গে পৌষের এক শীত সকালে আমরা তারপরও কথা শুরু করি... শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করতে চাই। সৈয়দ শামসুল হকের মতো অসাধারণ একজন মানুষের সঙ্গে আজ আমরা কথা বলবো...
আমি সাধারণ মানুষ।
কেন আপনি সাধারণ?
আমি বিশ্বাস করি, মানুষ যখন সৃষ্টিশীলতার ভেতর থাকে তখন তার এক ধরনের বদল ঘটে। কিন্তু সেই মুহূর্তের পর আবার সে সাধারণ হয়ে যায়।
আপনি অনেকগুলো আঙ্গিকে কাজ করেন; নিজে একটি শব্দ ব্যবহার করেন 'ভাবনা বীজ'- যে বীজ থেকে লেখা আসে। আপনি কী বীজ থেকে আঙ্গিকে পৌছান; নাকি আঙ্গিক ঠিক করে লেখায় হাত দেন?
আঙ্গিক তো আসে একটা ভাবনা থেকে। যে কোনো শিল্প সৃষ্টি একটি সংকেত। আমরা কিছু সংকেত পাঠাই। সেটা শ্রোতা হোক, পাঠক হোক, দর্শক হোক_ আমরা তাদের কাছে সংকেত পাঠাই। তারা নিজের মতো করে সেটা গ্রহণ করেন। আমি যখন লিখি- ' আমি একটি নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে' এটা একটা সংকেত। তুমি যখন সেটা পড়ছো, তুমি তোমার নদীর পাড় হিসেবেই পড়ছ। এটা আমি একটা বাস্তব উদাহরণ দিলাম। কিন্তু আসলে কাজটা এভাবেই হয়। all our creations are just signals, that we send. কাজটি যত ভালো হয়, সিগন্যালগুলো তত শক্তিশালি হয়।
সত্তর দশকে যখন পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায় কিংবা আশিতে 'নূরলদীনের সারা জীবন' লিখলেন। সে সময় তো বটেই, পুরো জীবনে আপনি একটিও টেলিভিশন নাটক লিখেননি। যদিও চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্যে আপনার কাজ আছে। সত্তর-আশিতে একটিই টিভি চ্যানেল; আপনি লিখলে আপনার ধারেকাছে আসার মতো নাট্যকার কমই ছিল। অর্থাৎ জনপ্রিয় হওয়ার সরল সুযোগ আপনি গ্রহণ করেননি। কী করে আপনি এই মোহ কাটালেন?
দেখো, মোহ ত্যাগ করবার শক্তি বলে কথা নয়। আমার যে প্রধান কাজ, সেটা হচ্ছে লেখা। এবং এই লেখার মাধ্যমেই আমি কাজ করতে চেয়েছি। টেলিভিশন আমার কাছে তথ্যের আদান-প্রদান ছাড়া অন্য কিছু বলে মনে হয়নি। আরেকটি দিক হচ্ছে_ সাধারণ মানুষের বিনোদন। মানুষকে বিনোদিত করবার প্রবণতা অনেকের থাকে। তারা সেটা করেন। আমি চাই মানুষের চিন্তার দিক উন্মোচিত হোক। আমি চিন্তনের দিক নিয়ে কাজ করি। খ্যাতি হচ্ছে তাৎক্ষণিক ব্যাপার। খ্যাতি আমাদের উদ্বুদ্ধ করে। আমি যে খ্যাতি চাই না, তা নয়। আমার কথাগুলো মানুষের কাছে পৌছাচ্ছে, সেই খ্যাতিটুকু আমি চাই। এটাই আমার পাওনা। কিন্তু তাকে আনন্দে, বিনোদনে রাখবার অনেকে আছে। সাহিত্যে বলো, টেলিভিশনে বলো, সিনেমা, নাটকে সব কিছুরই দুটি দিক আছে। বিনোদন ও চিন্তন। আমি চিন্তনের দিক নিয়ে কাজ করতে চেয়েছি।
আপনার এত প্রস্তুতি কেন? এত শৃঙ্খলা, চিন্তা-ভাবনা কেন লেখায়?
লেখা তো কিছু উপকরণ দিয়ে করতে হয়। মানুষের মৌলিক অনুভূতির জায়গাগুলো পথে পড়ে পাওয়া যায়। এই যে অনুভূতিগুলো এ নিয়ে কোটি কোটি লেখা হয়ে গিয়েছে হাজার হাজার বছর ধরে। একটা নতুন সময়ে নতুন ভাবনা কীভাবে আমি তুলে ধরছি, কীভাবে আমরা পাচ্ছি, এটাই হলো কথা। আমি দেখি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে একটা বড় জিনিস ঘটেছে। তা হলো সাধারণ মানুষের অসাধারণে পরিণত হওয়া। আমার উপন্যাসে, নাটকে, কবিতায় আমি এই জিনিস ধরতে চেয়েছি। কীভাবে চাপের মুখে একজন সাধারণ মানুষ অসাধারণে পরিণত হয়। মুক্তিযুদ্ধ আমাদের সময় হয়েছে বলে, আমি তা করতে পেরেছি। নিশ্চয়ই অতীতে এমন অনেক ঘটনাই ঘটেছে যা নিয়ে কাজ হয়েছে। এই যে সাধারণ মানুষের অসাধারণে পরিনত হওয়া, আমার কাছে এই ঘটনা অনেক বড় ব্যাপার হয়ে ধরা দিয়েছে। আমি এই ব্যাপারটি বিভিন্নভাবে ধরতে চেয়েছি। এমন আরও অনেক বিষয় রয়েছে যেমন ধরো আমার কবিতা। কবিতায় আমি আত্মজৈবনিক বর্ণনা লিখেছি। প্রেমের অনেক মাত্রা যেমন দেহ, দূরত্ব, নৈকট্য সব ভাবে ব্যবহার করেছি। একটা জিনিস আমি সব সময় করার চেষ্টা করি_ আমি নিজেকে সব সময় অতিক্রম করার চেষ্টা করি। এইযে বলো আমার পরীক্ষা-নিরীক্ষা, সবই হলো নিজেকে অতিক্রম করবার চেষ্টা। আমি পেছনের দিকে ফিরে তাকাই না, যা লিখেছি সেসব সে সময়ের জন্য সত্য।
তাহলে রচনায় আপনি পুনরাবৃত্তি করেন না?
তা তোমরা বলতে পারো।
৬৮/৬৯ সালের দিকে আপনি লন্ডন থেকে শামসুর রাহমানকে উদ্দেশ করে লেখা একটি চিঠিতে লিখেছেন_ 'প্রস্তুতি নিতে নিতে জীবনটা শেষ হয়ে গেল'। এবং আমরা দেখি 'কয়েকটি মানুষের সোনালী যৌবন', 'জনক ও কালো কফিন' উপন্যাস থেকে আপনি ধীরে ধীরে নিজস্ব একটা পথ খুঁজছেন মনে হয়। তারপর 'নিষিদ্ধ লোবান', লন্ডন পর্বের উপন্যাসগুলো, 'বৃষ্টি ও বিদ্রোহীগণ' এবং আরও কয়েকটি রচনার পর মনে হচ্ছিল যেন একটি নদী সমুদ্রে গিয়ে মিশেছে। নিজের পথ খুঁজে ফেরার অনুপ্রেরণার কথা বলবেন?
প্রেরণা তো আমরা সবার কাছ থেকে পাই। এমন কি একজন খারাপ লেখকের কাছ থেকেও পাই। কীভাবে পাই সেটা_ এ রকম লিখতে হয় না! লেখক হিসেবে যিনি একদম নিম্নমানের, তার কাছ থেকেও শেখার আছে। আমি যেটা করি_ তা হলো চোখ খোলা রাখি। সমস্ত কিছুর দিকে আমার মনোযোগ আছে। আমি বিচিত্র বিষয়ে পড়াশোনা করি। কবিরাজি বই, ভ্রমন কাহিনী, কবিতা, উপন্যাস, গল্প, মহৎ উপন্যাস সবই পড়ি। আমার লাইব্রেরিতে গিয়ে দেখবে এক আলমিরা ভর্তি কবিতার বই। বিভিন্ন দেশের, বিভিন্ন ভাষার কবিতার বইয়ের অনুবাদ আমার সংগ্রহে আছে। বিষয় কিন্তু একটা বড় প্রসঙ্গ, ঐ যে বললাম_ বিষয় পড়ে পাওয়া যায়। কীভাবে বলছে, কীভাবে প্রাসঙ্গিক করে তুলছে একটি সময়কে সামনে রেখে মানুষের মনের ভাব বুঝে। এটাই আমার দেখার বিষয়।
খেয়াল করি, পূর্ব নির্ধারিত কোনো সত্য আপনি মানতে চান না। নায়ক এমন হবে, নায়িকাকে হতে হবে এমন। আপনার নায়কদের ভিলেনও বলা যায়। মানুষ যে রকম_ না ফেরেশতা, না শয়তান। ষাট দশকেই আপনি বিষয়টি শনাক্ত করেছেন?
আমার কিছু বলার আছে। ভেতরে জন্ম নেয় যে সব কথা তা বলতে হয়। যতক্ষণ না বলতে পারি, ততক্ষণ অসুস্থবোধ করি। এবং লেখা একধরনের চিকিৎসা আমার কাছে।
শ্রেষ্ঠ উপন্যাসের ভূমিকায় বলেছেন_ 'আমি খুঁজি, আমরা কোথা থেকে এসেছি, কোথায় যাচ্ছি এবং কেন?'
যেটা আমি করতে চেয়েছি তা হলো, আমি একা মানুষ, কিন্তু একক নই। আমি অনেকের মতোই একজন। এই মানুষ একটি বিশেষ সময়ের, বিশেষ ভাষার। ভাষার কথা বিশেষ করে বলছি এই কারণে যে, ভাষাও কিন্তু আমাদের একটি চেহারা দেয়। ভাষার মাঝে আমাদের নিজস্ব অনুভূতি লুকিয়ে থাকে। এই দেশ এবং বাঙালি উভয়ের মাঝে তফাত আছে। ভাষাও তাকে আলাদা করছে। প্রতিটি ভাষা তার চিন্তনের, তার স্বভাবের, তার প্রকৃতির সাক্ষর বহন করে।
সাম্প্রতিককালে আমরা সাহিত্যে মান-আঞ্চলিকে মেশানো এক মিশ্র ভাষার ব্যবহার দেখছি। টেলিভিশন নাটকে এর ব্যবহার বেশি। এটাও বলা হয়_ 'আমরা সেদিন খুশি হবো, যে দিন খবরের কাগজের হেডিং হবে_ গুলি লাইগ্যা ১০ জন মইরা গ্যাছে।' আপনার মন্তব্য?
ভাষা বিবর্তিত হয়। কিন্তু এটি বিবর্তনের প্রকৃত পথ নয়। ভাষার কিছু ব্যবহারিক দিক থাকে। যেটাকে লোকে ব্যবহার করে থাকে।
কিন্তু সেটা কি সম্পাদনা ছাড়া প্রযুক্ত হতে পারে?
প্রয়োজন হলে ব্যবহার করা যেতে পারে। নাটকের বিভিন্ন চরিত্রের প্রয়োজনে এমন ভাষা ব্যবহার করা যেতেই পারে। নাটকের মাঝে বড় যে ব্যাপার তা হচ্ছে সমকালীন ভাষার সুর, তরঙ্গ, শব্দের ব্যবহার, বাক্য গঠন এগুলোকে ধরা।
এটা তো একটা ক্যারেক্টারের কথা বলছেন, এটা তো হতেই পারে। কিন্তু বর্ণনার কথা যদি বলি?
না না, এটা হতে পারে না। আমি বিশ্বাস করি না। দেখো আমরা যখন লিখতে বসি, যতই বলি না কেন প্রচলিত ভাষায় লিখছি। আসলে এটা কৃত্রিম ভাষা। আমি যে ভাষায় লিখছি, যখনই আমি তা সাহিত্যের প্রয়োজনে ব্যবহার করছি, তা কিন্তু কৃত্রিম হয়ে যাচ্ছে। এটা তো আর এমন নয় যে আমি যা পাচ্ছি তা-ই ব্যবহার করছি। তবে একটা মানভাষা রয়েছে, যা আমাদের ধারণ করা জরুরি।
নিজের বিবেচনায় আপনার উল্লেখযোগ্য উপন্যাস কোন গুলো? যদি নিজে বাছাই করেন?
এটা বলা খুব মুশকিল। আমার নিজের কোনো লেখা আমি ফিরে পড়ি না। তবুও যদি বলতে হয়_ জনক ও কালো কফিন, খেলারাম খেলে যা, দূরত্ব, দ্বিতীয় দিনের কাহিনী, অন্তর্গত, নীল দংশন, নিষিদ্ধ লোবান, ত্রাহি, স্তব্ধতার অনুবাদ। এই উপন্যাসগুলো থেকে আমি এখনও সম্পূর্ণ বেরিয়ে আসতে পারিনি। কারণ এই পরিমণ্ডল আমার প্রিয়। ভেতরে ভেতরে এখনও নাড়া দেয় আমাকে। এই মুহূর্তে ধারাবাহিক যে উপন্যাসটি আমার প্রকাশিত হচ্ছে 'কালি ও কলমে' 'নদী কারো নয়', এই উপন্যাসটি দেশ ভাগের ঘটনা নিয়ে লিখছি। এখানে কোন রাজনীতি নেই। সাধারণ মানুষ কীভাবে দেখছে দেশ ভাগকে, সেটা দেখানোই আমার উদ্দেশ্য।
এখন আপনি আর গল্পকে গল্পই বলছেন না। বলেন, গল্প-প্রবন্ধ। এটা কেন?
আমি এখন গল্পের মাঝে গল্প ব্যবহার করি না। বাইরের প্রভাবে একজন মানুষের ভিতরে কী ধরনের পরিবর্তন ঘটছে, তা নিয়ে কাজ করি।
সেটার মাঝেও একটা কাহিনী থাকে?
এই যে তুমি আমার সাথে কথা বলছো, সকাল বেলা এসেছ এটাও কাহিনী। আমি তোমাদের দশ মিনিট বসিয়ে রেখে ভিতরে কার সাথে কী কথা বলছিলাম, সেটা তো তোমরা জানো না। এটাও একটা কাহিনী। হয়ত আমি কথা বলছিলাম একজন প্রতারিত মানুষের সাথে। এটাও একটা গল্প। জীবনের প্রতিটি ঘটনাই একেকটা গল্প। গল্প তো এমন নয় যে বানিয়ে বলা হচ্ছে। একটা সময় মানুষ বানিয়ে গল্প বলতো। সেসব দিন চলে গিয়েছে। আগে মানুষ গল্পে একপর্যায়ে বলতো_ 'তারপর কী'? যেমন_ বনের মাঝে দু'জন লোকের দেখা হলো, তারপর? অথবা একটি বিখ্যাত উদাহরণই দেয়া যায়_ একজন লোক একটা ঘরে প্রবেশ করলো, সেখানে গিয়ে দেখতে পেল কিছু টাকা পড়ে আছে, ওই লোকটি টাকা নিলেও গল্প, টাকা না নিলেও গল্প। কথা হচ্ছে 'অ্যাকশন' এবং আমরা কীভাবে তার প্রতিক্রিয়া করছি। এই প্রতিক্রিয়া নির্ভর করে সময় ও আরও অনেক কিছুর উপর। এই যে বাংলাদেশ, যুদ্ধের ভেতর দিয়ে এসেছে। গণতন্ত্র বিকৃত হয়েছে এখানে। আবার গণতন্ত্র ফেরত এসেছে, আবার বিকৃত হয়েছে। এই যে সময়কাল, এর ভেতর মানুষের প্রতিক্রিয়া পাল্টেছে। এই পাল্টানোর মাঝে একটা সাধারন প্রবণতা আছে। এর মাধ্যমে মানুষের মূল্যবোধ পরীক্ষিত হয়। সত্য কথা বলা উচিত, সত্য পথে চলা উচিত, এটা আগেও যেমন সত্য ছিল এখনও আছে। কিন্তু রিঅ্যাকশন পাল্টাচ্ছে সময়ের ওপর নির্ভর করে।
আপনি রাজনীতি সচেতন, তীক্ষষ্ট এবং স্পষ্ট আপনার চিন্তা। কিন্তু আপনার কোনো রচনাতেই রাজনীতি প্রধান চরিত্র নয়। মানুষই সেখানে বড়।
নিশ্চয়ই। মানুষই মূল বিষয়। আমরা তো মানুষ ছাড়া আর অন্য কিছু নিয়ে লিখতে পারি না। এই যেমন, ঈশপের গল্প। তিনি যে জীবজন্তু নিয়ে গল্প লিখেছেন, সেখানেও কিন্তু মানব চরিত্র আরোপিত। শেয়াল যখন বলে আঙুর ফল টক, এটা কিন্তু মানুষেরই কথা। মানুষই হচ্ছে বিষয়। এই মানুষ কিন্তু অমর নয়। আমরা আসি এবং চলে যাই। কোথা থেকে আসি জানি না এবং কোথায় চলে যাই জানি না। এ দুটো সর্ম্পকে আমাদের কোনো ধারণা নেই। আমি নিজেও এ বিষয়ে অজ্ঞেয় । কিন্তু আমি যতক্ষণ এখানে আছি ; এ জীবনকে অর্থময় করে যেতে হবে। অনেক ভাবে জীবনকে অর্থময় করা যায়। অনেকে আছেন জনসেবা করেন। অনেকেই আছেন প্রেম করেন, অনেকে সম্পদ গড়েন, তাদের কাছে সেটাই অর্থপূর্ণ হয়ে ওঠে। আবার এমনও হয় কোনো অর্থই আরোপ করছে না জীবন, কোনো প্রভাবই নেই। আমার একটা গল্প আছে 'উদ্বেগ'। গল্পটা হলো, এক লোক ভাবছে এতবড় একটা মুক্তিযুদ্ধ হয়ে গেল অথচ আমার কোনো আত্মীয় মারা যায়নি, আমাকে পুলিশে ধরেনি, রাজাকার ধরেনি এক কথায় কিছুই হয়নি। কিন্তু অনেকের অনেক কিছুই ঘটেছে। সে লোকটি নিজের অস্তিত্ব খুঁজে পাচ্ছিল না। তখন যে সাংবাদিক তার সঙ্গে কথা বলছিল, সে তাকে বললো, এই যে আপনার উদ্বেগ এটাই আপনার প্রাপ্তি। আপনি নিজের কথা ভাবছেন না। আপনি অনেকের হয়ে ভাবছেন। এইযে আপনার কিছু হয়নি, কিন্তু আপনি চাচ্ছেন আপনার কিছু হোক বা হতো। এটাও কিন্তু সত্য।
এবার কবিতার কথা। আপনার 'পরানের গহীন ভিতর' বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে বড় অধ্যায় হয়ে আছে। জসীমউদ্দীনের গ্রাম নিয়ে ভাবনা, আল মাহমুদের প্রাকৃত জীবনাচরণ নিয়ে ভাবনা এবং আপনার ভাবনা। এই তিন জনের কাজের ধরন নিশ্চয়ই একরকম নয়?
আমি আমার মতো। এরা সকলেই আমার অগ্রজ, কেউ সমসাময়িক। এদর কারও মতোই আমি নই। এককথায় আমি অনুভবের জায়গা থেকেই লিখেছি।
আমরা এভাবেও বলতে পারি, আপনি পরিশীলিত আধুনিক প্রকাশের মাধ্যমে অনুভূতির জায়গা থেকে প্রান্তিক মানুষের কথা বলতে গিয়ে নির্বিশেষ মানুষের কথাই বলেছেন। অন্য কাউকে ছোট করে বলছি না। অন্যদের দেখার ভঙ্গি ঠিক এতোটা আধুনিক ছিল না? আধুনিক ঠিক নয়। আমি যেটা বলবো, জসীমউদ্দীন খুব খাঁটি ছিলেন। কিন্তু আল মাহমুদের ব্যাপারে আমার সন্দেহ আছে। তার অনেকটাই আরোপিত। যেন কিছু একটা তাকে করতে হবে এজন্য করা। এটা অনেকটা এরকম_ মঞ্চে দাঁড়িয়েছি, মঞ্চ অন্ধকার, একটা হ্যাট থেকে আমি একটা বিড়াল বের করলাম, কবুতর উড়িয়ে দিলাম। আমার হাতের লাঠিটা ফুলের স্তবকে পরিণত হলো। আর আমার ক্ষেত্রে; আমি খুব স্বাভাবিকভাবে লিখেছি। 'পরানের গহীন ভিতর' যখন লিখলাম তখন দেখলাম আমি আমার মায়ের সাথে যে ভাষায় কথা বলতাম, তিনি আমার সাথে যে ভাষায় মনের ভাব প্রকাশ করতেন, সেটা আমি গভীর অনুভূতির মাধ্যমে প্রকাশ করেছি। এটা আমার এক ধরনের অনুশীলনও বলা যায়, আমার দেশ-ভাষাকে বুঝে নিয়ে প্রকাশ করা। আমি এ নিয়ে আরও কাজ করেছি। যেমন_ পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়, নুরলদীনের সারা জীবন। আঞ্চলিক ভাষার যে একটা শক্তি আছে তা আমি প্রকাশ করতে চেয়েছি।
পরে আর করলেন না কেন? বা আগামীতে কি করবেন?
আমার নাটকের বিভিন্ন ক্ষেত্রে এসেছে। কিন্তু কবিতার ক্ষেত্রে আমি আর প্রয়োজন বোধ করিনি। কারণ কবিতায় আমরা ভাষাকে সবর্োচ্চ কুমারী রূপে পাই। এবং তা নতুন অর্থে বিভিন্নভাবে দাঁড় করাই। কবিতায় যখন কিছু শব্দ পাশাপাশি থাকে, তার নানান প্রতিফলন ঘটে। কবিতার নানা ছন্দ। তা গদ্যে হোক আর পদ্যে হোক। গদ্যেরও একটা ছন্দ আছে। তার জন্য একটা মান ভাষা খুব দরকার। যেখানে ভাষার ইউনিটগুলো খুব স্পষ্ট। আঞ্চলিক ভাষার ইউনিটগুলো স্পষ্ট এবং আকৃষ্ট করে। আগেও বলেছি_ আমি যা করি তার দিকে আর ফিরে তাকাই না।
নিজের দীর্ঘ কবিতা নিয়ে আপনি কী বলবেন?
দীর্ঘ কবিতা নিয়ে আমার কথা হচ্ছে, দীর্ঘদিন থেকে গীতল এবং খণ্ড কবিতা লিখে আমরা বাংলা কবিতাকে একটা গোলক ধাঁধার মধ্যে ফেলে দিয়েছি। এটা পরিবর্তন হওয়া জরুরি। দীর্ঘ কবিতা রঃ্থং ষরশব ধহ বংংধু. একটা বিষয় আছে যাকে গড়ে তুলবার অবকাশ দিতে হবে। বাংলা কবিতায় রবীন্দ্রনাথের পর এমনটা আর কেউ করেননি। কবিতায় কিন্তু সবচেয়ে বেশি যুক্তির ব্যবহার হয়। দীর্ঘ কবিতার মাঝে যে যুক্তি পরম্পরা আছে আমি সে কাজটাই করতে চেয়েছি। যেমন 'বৈশাখে রচিত পঙ্ক্তিমালা'। আমি অনেকদিন যাবত কবিতা লিখছিলাম না। তারপর আমি ভাবলাম কেন লিখছি না? আমি তাই রচনার মতো করে কবিতা লিখেছি।
সাম্প্রতিক 'ভালোবাসার রাতে' কাব্যগ্রন্থ পড়ে পাঠকের মনে হবে, যেন কোনো তরুণ কবি ২৫/২৬ বছর বয়স, এই কবিতাগুলো লিখেছে। আপনার এই তরুণ প্রেমিক হয়ে থাকার রহস্য কী?
প্রেম তো সর্বত্রই। প্রেম আমার কাছে অনেকটাই একাডেমিক। যেমন দয়া। আমরা কি সর্বত্রই দয়া দেখাচ্ছি? এগুলো আমাদের মনের ভিতরে রয়েছে। তো প্রেমে না পড়ে যে এসব লেখা সম্ভব না এটা ঠিক না। কারবালার যুদ্ধে না গিয়ে মীর মশারফ হোসেন বিষাদসিন্ধু লিখেছেন, পলাশীর যুদ্ধে না গিয়ে শচীন সেনগুপ্ত সিরাজউদদৌলা লিখেছেন। কাজেই মরে গিয়ে মৃত্যু সম্পর্কে লিখতে হবে এটা কিন্তু ঠিক নয়।
আপনি বলছেন প্রেমে না পড়েও এমন কবিতা লেখা সম্ভব?
শুধু প্রেমে কেন, যে কোনো অনুভূতির মধ্যে ঢুকে গিয়ে তা নিয়ে লেখা সম্ভব। আমার তো মনে হয়, বাংলাদেশে যত কবিতা লেখা হচ্ছে, যত কবি আছে, তাদের যদি সম্মত রূপসী একজন করে রমনী ধরিয়ে দেয়া হয়, তাহলে বারো আনা কবিতা লেখা বন্ধ হয়ে যাবে। প্রেম তো অনেক দিক রয়েছে। যেমন- দেশপ্রেম, মানবপ্রেম, ঈশ্বরপ্রেম, ভাষাপ্রেম। প্রেম বলতে তো আমরা নর- নারীর সম্পর্কই বুঝি। 'ভালোবাসার রাতে' কাব্য গ্রন্থে আমি যেটা করতে চেয়েছি, তা হলো দেহতাতি্বক আলোচনা। যা বাংলা কবিতায় অনেক দিন ধরেই অনুপস্থিত।
এবার আমরা আপনার নাটকের প্রসঙ্গে আসি।
নাটক আমার সবশেষের সংসার। সাহিত্যের অনেক ক্ষেত্রেই কাজ করেছি। নাটক আমি প্রথম লিখি ১৯৭৫ সালে। নাটক অনেক লোক নিয়ে হয়। এবং সবার বোধবুদ্ধি এক রকম নয়, মান এক রকম নয়। অ্যালবেয়ার ক্যামু বলেছেন- একজন রসনবপরষব এবং একজন রহঃবষবপঃঁধষ ব্যক্তি পাশাপাশি বসে বিশ টাকার টিকিটে নাটক দেখবে। তাদের উভয়কেই কিছু না কিছু দিতে হবে আপনার। শেক্সপিয়ারের সময় সাধারণ মানুষও নাটক দেখতো , রাজা- রানীরাও নাটক দেখত। এমনকি খেতে খেতে, ড্রিঙ্ক করতে করেতও নাটক দেখত মানুষ গ্গ্নোব থিয়েটারে। তাদের সবাইকেই আপনার কিছু না কিছু দিতে হবে। কোন কোন বিষয় আছে যা সরাসরি দৃশ্যায়নের মাধ্যমে পেঁৗছাতে হবে। যেমন 'পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়', এটা নিয়ে আমি গল্প লিখতে পারতাম, উপন্যাস এমনকি কবিতাও লিখতে পারতাম। কিন্তু আমি নাটক লিখেছি। যা অনেক মানুষের কাছে পেঁৗছিয়েছে। এমনকি অনেক নিরক্ষর মানুষও দেখেছে এই নাটক। নাটকে এই জিনিসটা আছে। সম্মিলিত এক দল মানুষের কাছে যাওয়া যায়।
আপনার কাব্যনাট্যের প্রেরণা কি পাশ্চাত্য?
তা নয়। কাব্যনাট্য আমাদের বাংলা সাহিত্যের নিজস্ব ফর্ম। একটা কথা বলার জন্য ছন্দবদ্ধ উক্তি কিংবা কিছু বোঝানোর জন্য উপমার ব্যবহার। বাঙালি উপমাপ্রবণ জাতি। সবকিছুতেই উপমা ব্যবহার করতে ভালোবাসে। সব কিছু নিয়ে আমার মনে হয়েছে_ কাব্য নাট্য আমাদের মাটির নিজস্ব একটি ধারা। আমি তাই লিখেছি। নূরলদীনের সারা জীবন, পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়, ঈর্ষা, গণনায়ক, খাট্টা তামাশা। খাট্টা তামাশায় আবার মিশ্রভাবে ব্যবহার করেছি। ...মানুষ হচ্ছে সব কিছুর কেন্দ্রে আমার কাছে। মানুষকে নিয়ে আমার ভাবনা। এবং মানুষ একটি সময়ের ভেতরে বাস করে। ভাষা, সমাজ, রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে মানুষ চলে।
আপনার বন্ধু কারা, কাদের সঙ্গে ভাবনা বিনিময় করেন? কারও সাথে নয়।
এটা কীভাবে সম্ভব?
আমার কোনো বন্ধু নেই। আমি খুব নিঃসঙ্গ মানুষ
আমি খুব সচেতনভাবে একটা বিষয় অনুসরণ করেছি তা হলো, অন্য মাধ্যমের লোকদের সাথে আমি মিশেছি, যাতে করে তাদের ভিশন আমি ধরতে পারি। আমার কিন্তু ব্যক্তিগত কোনো বন্ধু নেই। কি নারী কি পুরুষ।
আপনি নিজেও তো একজন চিত্রকর?
আঁকি। এটা আমার শখের কাজ, অবসরের বিষয়। কিন্তু আমার কোনো বন্ধু নেই। এবং আমার কোনো বন্ধুর প্রয়োজনও নেই।
আপনার সঙ্গে শামসুর রাহমানের বন্ধুত্ব নিয়ে কী বলবেন?
ছিল। একসঙ্গে আমরা পথ চলেছি, লিখেছি। কিন্তু বন্ধু বলতে যা বোঝায়, প্রতিনিয়ত সুখ-দুঃখের কথা যার সাথে বলা যায়। শামসুর রাহমান সে রকম ছিলেন না। তিনি আমার দুঃখের কথা কিছুই জানতেন না। হাসান হাফিজুর রহমান, আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ, আতিকুল্লাহ এরা সবাই আমার বন্ধু ছিলেন। তবে তা কর্মক্ষেত্রে। আমদের মাঝে নিবিড় সম্পর্ক আছে। এটাকে ঠিক বন্ধু বলা যায় না।
আমার কথা যা কিছু হয় সব নিজের সঙ্গে, বইয়ের সঙ্গে আর আমার যিনি জীবনসঙ্গিনী আছেন তার সঙ্গে।
স্ত্রীর সঙ্গে আপনার সম্পর্ক কেমন? প্রেমের না মায়ার?
আমি যখন প্রেমের কথা বলি, তার সঙ্গে আরও কিছু কথাও বলি। প্রেম থাকতে হবে, প্রেমের সঙ্গে শ্রদ্ধাও থাকতে হবে। শ্রদ্ধা, মমতা এবং বন্ধুত্ব। এই তিন জিনিস না হলে কোন প্রেম টিকবে না। যার সাথে প্রেম করবে তাকে শ্রদ্ধা করবে, মমতা করবে এবং বন্ধুত্ব থাকতে হবে।
প্রেমিকাদের কোন বিষয়টি আপনার ভালো লেগেছে? মেধা না সৌন্দর্য?
ব্যক্তিত্ব। তাদের ব্যক্তিত্ব আমার ভালো লেগেছে।
আপনার প্রিয় লেখক কারা?
এটা বলা মুশকিল। টি. এস. এলিয়ট, হেমিংওয়ে, ডাবি্লউ এইচ অডেন, তলস্তয় নানা সময়ে আমার নানাজনের লেখা ভালো লেগেছে। রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, শরৎচন্দ্র, মাইকেলকে আমি আগাপাছতলা পড়েছি। প্রিয় লেখক সে অর্থে নেই। কিন্তু আমি আজ এদের সবার মিশ্রণে তৈরি। মানুষ যখন লেখা শুরু করে তখন কারও না কারও অনুকরণ কিংবা প্রভাব থাকেই। জীবনানন্দের ওপর নজরুলের প্রভাব আছে। অথচ কতদূরে তিনি সরে গিয়েছিলেন।
আপনার পরবর্তী কারও লেখার প্রতি আপনার আগ্রহ আছে?
আমার পরবর্তী কারও প্রতি আমার আগ্রহ নেই।
এটা কেন ঘটল?
আমার মনে হয় একমাত্র অগ্রজদের মধ্যে আমি সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ এবং মুনীর চৌধুরী এই দু'জনকে গ্রহণ করেছি। এছাড়া আমার সমসাময়িক একজন কবির সহচর্যে আমি কিছু পেয়েছি বলে মনে হয় না। শামসুর রাহমান অনেক বড় কবি নিঃসন্দেহে। কিন্তু তাকে আমার ত্রিশের কবিদের সম্প্রসারণ বলে মনে হয়েছে।
দৈনন্দিন রুটিন নিয়ে বলুন।
সকাল ৬টায় ঘুম থেকে উঠে নিজ হাতে কফি বানিয়ে আমি আর আমার স্ত্রী একসাথে খাই। তারপর ৮টার মধ্যে আমরা গোসল, কাপড় বদলানো থেকে শুরু করে বাদবাকি সব কাজ সেরে নিই। আমি কিন্তু প্রতিদিন সকালবেলা শেভ করি, গোসল করি, নতুন করে জামা কাপড় পরি। বাসায় থাকলেও একই রুটিন আমার। তারপর যে যার কাজে বের হই। আমার বাইরে কাজ না থাকলে বাসায় থকি। লিখতে বসি। আমি যতটা পড়ি, ঠিক ততটাই লিখি।
দুপুরে খাওয়ার পর ঘুম?
না না একদম না। আমি কোনো দিন দুপুরে ঘুমাইনি। আমি রাত বারোটা সাড়ে বারোটার মাঝে ঘুমিয়ে পড়ি এবং ভোর ৫টা ৬টার মাঝে উঠে পড়ি।
সন্তানরা লেখালেখির কতটুকু পেয়েছে আপনার কাছ থেকে?
আমার মেয়ে ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য পড়ায়।
সব মিলিয়ে একটা সুখী জীবন যাপন করছেন?
সুখী বলতে পারব না। তবে সব সময় একটা অতৃপ্তি কাজ করে আমার মঝে। লেখা নিয়ে অতৃপ্তি। আরও লিখতে চাই। নিজের কথা নিজের মতো করে বলতে চাই।
...কথা বলতে বলতে গুলশানে নিজের বাড়ির ড্রইংরুম থেকে উঠোনে নেমে এলেন সৈয়দ হক। গাছ-গুল্ম-লতায় ছাওয়া সবুজ মাঠ।
বলি : হক ভাই, এই যে এত জায়গা জুড়ে গাছ লাগিয়ে রেখেছেন। পেছনে ছোট্ট দোতলা। এই মাঠে দশতলা তুলে ভাড়া দিতে পারতেন। এটা করলেন না কেন? সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে তবে আর ভাবতে হতো না?
এই সাতাত্তরে পেঁৗছেও মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়ানো সৈয়দ হক বললেন : আমার জীবদ্দশায় এমনই সবুজ থাকবে সবকিছু। আমি চলে গেলে ছোট্ট দোতলাটি থাকবে, তোমরা আসবে। আর ছেলেমেয়েরা চাইলে তখন তারা এখানে কিছু একটা কাঠামো তুলতে পারে। আমি থাকতে নয়। কারণ, আমি মাটির মানুষ, মাটিই আঁকড়ে থাকতে চাই। আর চাই সবুজ।
...সবুজ আর মৃত্তিকালগ্ন সৈয়দ শামসুল হকের শেকড় ও বিস্তৃতি এদেশের সাহিত্যের গভীরে প্রোথিত। তার ঋজু মনোভঙ্গি ও সৃষ্টিসম্ভার বাঙালির সাহস ও কৃতীর অনুষঙ্গ। সবুজে মাটিতে সাহস রাখা তাকেই তো মানায়। া

No comments

Powered by Blogger.