দোয়েল ল্যাপটপ-যাত্রা শুরু নতুন পথে

ল্যাপটপ দোয়েল বাজারে এল। গত মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ল্যাপটপের বিতরণ ও বাজারজাতকরণ উদ্বোধন করেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের অঙ্গীকার নিয়ে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়া সরকারের আরেক অঙ্গীকার ২০২১ সালের মধ্যে প্রযুক্তি ও জ্ঞানভিত্তিক এবং ধর্মনিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ বিনির্মাণ। ল্যাপটপ দোয়েল সেই জ্ঞানভিত্তিক দেশ গঠনের পথে নতুন একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। আমাদের দেশের প্রযুক্তি খাতের


দুঃখজনক ব্যাপারটি হচ্ছে, আমরা এযাবৎ ব্যবসায়ী পর্যন্তই হতে পেরেছি; এখনো প্রস্তুতকারী হতে পারিনি। ইদানীং বড় আকারের বেশ কিছু সংযোজনের কাজ হচ্ছে। কিন্তু তাতে বড় ধরনের শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেনি। আমাদের দেশে প্রগতির মতো কারখানা ছিল। কিন্তু সেই প্রগতির গতি আজ স্তিমিত। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় দেশের শিল্প বিস্তৃত হওয়ার যে পথ খোলা ছিল, তা বন্ধ হয়ে গেছে অনেক আগেই। স্বাভাবিকভাবেই শিল্পের দিক থেকে আমরা হয়ে পড়েছি আমদানিনির্ভর। আমদানি করতে গিয়ে আমাদের অনেক বৈদেশিক মুদ্রা চলে যায়। আজকাল বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান এখানে সংযোজন কারখানা গড়ে তুলেছে। কিন্তু সেই সংযোজন কারখানার সব কিছুই আমদানি করতে হয় বিদেশ থেকে। অথচ প্রস্তুতকারী হিসেবে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করার সব সুযোগ আমাদের ছিল।
বাংলাদেশ টেলিফোন শিল্প সংস্থা যে ল্যাপটপ বাজারে ছেড়েছে তা সাশ্রয়ী। এই সাশ্রয়ী ল্যাপটপ আমাদের দেশের তথ্যপ্রযুক্তিকে অনেকটা এগিয়ে দেবে_এমনটি আমরা আশা করতে পারি। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের জন্য এই ল্যাপটপ আরো সহজলভ্য করা গেলে সেটা হবে আমাদের জন্য বাড়তি পাওয়া। প্রধানমন্ত্রী তাঁর উদ্বোধনী ভাষণে শিক্ষার্থীদের কাঁধ থেকে বইয়ের বোঝা নামিয়ে ফেলার কথা বলেছেন। অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক কথা বলেছেন তিনি। তাঁর কথার সূত্র ধরেই বলতে হয়, শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা আনন্দ পেলে সেই শিক্ষা তাদের আগ্রহী করবে। দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তথ্যপ্রযুক্তির আওতায় এলে শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ মাধ্যমটি সহজতর হবে। দেশের সব অঞ্চলকে ই-গভর্ন্যান্সের আওতায় আনার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের স্বল্পমূল্যে ল্যাপটপ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। এ কাজটি করা গেলে সেটা হবে দেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বিজ্ঞানমনস্ক ও তথ্যপ্রযুক্তির দিকে আগ্রহী করে তুলতে হলে এর বিকল্প নেই। দেশের আগামী প্রজন্ম যত দ্রুত তথ্যপ্রযুক্তির সঙ্গে সম্পৃক্ত হবে, তত দ্রুত এগিয়ে যাবে দেশ। একেবারে শুরু থেকে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর করা উচিত। শিক্ষার্থীদের জন্য স্বল্পমূল্যে ল্যাপটপের ব্যবস্থা করা গেলে প্রযুক্তিক্ষেত্রে নতুন এক বিপ্লব সূচিত হবে। এর সুফল ভোগ করবে আগামী দিনের বাংলাদেশ। আমরা আশা করব, দোয়েল ল্যাপটপ দেশের তথ্যপ্রযুক্তিকে আরো এক ধাপ এগিয়ে দেবে।

No comments

Powered by Blogger.