নারী বিক্ষোভকারীকে নির্যাতনঃ সামরিক পরিষদের দুঃখ প্রকাশ, তাহরির স্কয়ারে বিক্ষোভ

নারী বিক্ষোভকারীর ওপর হামলার ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে মিসরের ক্ষমতাসীন সর্বোচ্চ সামরিক পরিষদ (এসসিএএফ)। গত শুক্রবার রাজধানী কায়রোর পার্লামেন্ট ভবনের বাইরে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে এক নারী বিক্ষোভকারীর নির্যাতনের চিত্র প্রকাশ পায়। এ ঘটনায় বিশ্বব্যাপী সমালোচনার ঝড় ওঠে। ঘটনার প্রতিবাদে হাজার হাজার মিসরীয় নারী মঙ্গলবার তাহরির স্কয়ারে বিক্ষোভ করে।

হোসনি মুবারকের পতনের পর মিসরে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেয় এসসিএএফ। তবে বেসামরিক সরকারের হাতে শিগগির ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবিতে পুনরায় রাস্তায় নামে বিক্ষোভকারীরা। এক সপ্তাহ ধরে তারা বিক্ষোভ করছে। গত শুক্র ও শনিবার বিক্ষোভ হয় পার্লামেন্ট ভবনের বাইরে। ওই সময়কার বিক্ষোভের একটি ভিডিও চিত্র প্রকাশিত হয় সম্প্রতি। তাতে দেখা গেছে, এক নারী বিক্ষোভকারীকে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে। সেনাদের নির্যাতনের চিত্র বহির্বিশ্বে প্রকাশের পর সমালোচনার ঝড় ওঠে। এর পরই সামরিক পরিষদ দুঃখ প্রকাশ করল।

হামলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে সামরিক পরিষদ সামাজিক নেটওয়ার্কিং সাইট ফেসবুকে একটি বিবৃতি দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, 'পার্লামেন্ট ভবনের বাইরে বিক্ষোভের সময়সীমা লঙ্ঘন করে নারী বিক্ষোভকারীর ওপর হামলায় ঘটনায় সর্বোচ্চ সামরিক পরিষদ গভীরভাবে অনুতপ্ত। এ ঘটনার জন্য দায়ীকে উপযুক্ত সাজা দেওয়া হবে।' এর আগে সামরিক পরিষদের সদস্য জেনারেল আদলি ইমারা এ হামলাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করেন।
মঙ্গলবার বিক্ষোভে অংশ নেওয়া নাওয়ারা নেগম বিবিসিকে বলেন, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা পরিকল্পিতভাবে নারীদের অপমান করছে। 'তারা জানে যারা নিজেদের জীবনের পরোয়া করে না তারাও মা, বোন ও স্ত্রীর সম্মান রক্ষার বিষয়ে সচেতন। কাজেই পুরো মিসরীয়দের অপমান করার জন্য তারা (সেনাবাহিনী) নারীদের বেছে নিয়েছে। কারণ নারী ইস্যু খুবই স্পর্শকাতর, এটা তারা জানে। সামরিক পরিষদকে ক্ষমতা ছাড়তেই হবে, কারণ তারা বিশ্বাসঘাতক।'
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন নারী বিক্ষোভকারীকে নির্যাতনের নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি এ ঘটনাকে 'দুঃখজনক' বলে মন্তব্য করেছেন।
এদিকে চলমান সহিংসতার মধ্যে গতকাল বুধবার মিসরের ৯টি প্রদেশে দ্বিতীয় দফা নির্বাচনের পুনর্নির্বাচন (রান অফ) শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ভোট শেষ হবে। নিয়ম অনুযায়ী, যেসব আসনে প্রার্থীরা ৫০ শতাংশের কম ভোট পায় তাদের রান অফ নির্বাচনে অংশ নিতে হয়। দ্বিতীয় দফা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় গত ১৪ ডিসেম্বর। আর প্রথম দফা নির্বাচন হয় ২৮ নভেম্বর। আগামী ৩ জানুয়ারি তৃতীয় ও শেষ দফা নির্বাচন হবে। সূত্র : এএফপি, বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.