বিদ্যুতের দাম বাড়ল ২১.২৮%

সারাদেশে সব শ্রেণীর গ্রাহকের বিদ্যুতের দাম বাড়ল। দুই দফায় গড় বৃদ্ধির হার ২১ দশমিক ২৮ শতাংশ। এর ফলে বিদ্যুতের গড়মূল্য প্রতি ইউনিট (কিলোওয়াট/ঘণ্টা) ৪ টাকা ১৬ পয়সা থেকে বেড়ে ৫ টাকা দুই পয়সা নির্ধারণ করা হলো। প্রথম দফায় গত ১ ডিসেম্বর এবং আগামী বছর ১ ফেব্রুয়ারি থেকে এ দাম কার্যকর হবে। বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির সঙ্গে সব ধরনের সার্ভিস ও ডিমান্ড চার্জও বাড়ানো হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি


কমিশন (বিইআরসি) আনুষ্ঠানিকভাবে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। বিইআরসি বলেছে, ভর্তুকি কমাতে বাধ্য হয়ে সব শ্রেণীর গ্রাহকের বিদ্যুতের দাম বাড়াতে হয়েছে। বিইআরসির আদেশ অনুযায়ী, দুই দফায় পিডিবির (শহরাঞ্চল) গ্রাহকদের বিদ্যুতের গড়মূল্য বাড়ছে ২১ দশমিক ২৮ শতাংশ। একইভাবে গ্রামাঞ্চলে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) (গ্রামাঞ্চল) গ্রাহকদের ১৮ দশমিক ০৩ শতাংশ, ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি_ওজোপাডিকোর (দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল) ২০ দশমিক ৫১ শতাংশ, ডিপিডিসির (নারায়ণগঞ্জ শহরসহ রাজধানীর একাংশ) ২৩ দশমিক ৯৪ শতাংশ এবং ডেসকোর (টঙ্গীসহ রাজধানীর বাকি অংশ) গ্রাহকদের বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির হার হচ্ছে ২২ দশমিক ৬৫ শতাংশ।
মূল্য বৃদ্ধির ফলে আগামী মাস থেকেই গ্রাহককে বিদ্যুতের বাড়তি বিল দিতে হবে। প্রায় নয় বছর পর এবার একশ' ইউনিট পর্যন্ত ব্যবহারকারীদের (লাইফলাইন গ্রাহক) বিদ্যুতের দামও বাড়ল। এছাড়া কৃষি এবং ধর্মীয়সহ দাতব্য প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুতের দামও বেড়েছে। এ তিন ধরনের গ্রাহকের বিদ্যুতের দাম এবার বাড়ানো হয়েছে ৫ শতাংশ হারে। ফেব্রুয়ারিতে আবারও ৫ শতাংশ বাড়বে। সরকারি সূত্র জানায়, সব মিলিয়ে মূল্য বৃদ্ধির পরও চার বিতরণ সংস্থার লোকসান হবে ৭৪৩ কোটি টাকা। দুই দফায় দাম বৃদ্ধির পরও সরকারকে ওই তিন ধরনের গ্রাহকের জন্য তিনশ' কোটি টাকার বেশি ভর্তুকি দিতে হবে। দাম না বাড়ালে ভর্তুকির পরিমাণ দাঁড়াত প্রায় সাড়ে পাঁচশ' কোটি টাকা।
সংস্থাভেদে যত বাড়ল : প্রথম দফায় গড়ে বেড়েছে ১৩ দশমিক ২৪৬ শতাংশ। গত ১ ডিসেম্বর থেকে এ বর্ধিত মূল্য কার্যকর হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে আরেক দফা বিদ্যুতের দাম বাড়বে। সে দফায় বিদ্যুতের গড়মূল্য বাড়বে ৭ দশমিক ০৯ শতাংশ। মোট বাড়বে ২১ দশমিক ২৮ শতাংশ।
আরইবির বিদ্যুতের দাম দুই ধাপে ১৮ দশমিক ০৩ ভাগ বৃদ্ধি করা হয়েছে। এরমধ্যে প্রথম ধাপে ১০ দশমিক ৭৪ ভাগ এবং দ্বিতীয় ধাপে ৬ দশমিক ৫৮ ভাগ। ওজোপাডিকোর বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ২০ দশমিক ৫১ ভাগ। এর মধ্যে প্রথম ধাপে ১২ দশমিক ৬৯ এবং দ্বিতীয় ধাপে ৬ দশমিক ৯৪ ভাগ। পিডিবির বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ২১ দশমিক ২৮ ভাগ; যার মধ্যে প্রথম ধাপে ১৩ দশমিক ৬২ ভাগ এবং দ্বিতীয় ধাপে ৬ দশমিক ৭৪ ভাগ। ডিপিডিসির বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ২৩ দশমিক ৯৪ ভাগ; এর মধ্যে প্রথম ধাপে ১৫ দশমিক ০২ ভাগ এবং দ্বিতীয় ধাপে ৭ দশমিক ৭৬ ভাগ। ডেসকোর বিদ্যুতের দাম দুই ধাপে ২২ দশমিক ৬৫ ভাগ বেড়েছে। এর মধ্যে প্রথম ধাপে ১৪ দশমিক ১৬ ভাগ এবং দ্বিতীয় ধাপে ৭ দশমিক ৪৪ ভাগ বেড়েছে।
আরইবির গ্রাহককে দিতে হবে : আরইবি গ্রাহকদের প্রথম ধাপ শূন্য থেকে ১০০ ইউনিট পর্যন্ত পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ভেদে ডিসেম্বর থেকে প্রতি ইউনিটের জন্য দিতে হবে দুই টাকা ৭৭ পয়সা থেকে তিন টাকা ১৮ পয়সা। ফেব্রুয়ারি থেকে তা বেড়ে দাঁড়াবে দুই টাকা ৯০ পয়সা থেকে ৩ টাকা ৩৪ পয়সায়। দ্বিতীয় ধাপে ১০১ থেকে ৩০০ ইউনিট পর্যন্ত ব্যবহারকারী গ্রাহকদের সমিতি ভেদে ডিসেম্বরে ৩ টাকা ২৫ পয়সা থেকে ৩ টাকা ৭৩ পয়সা এবং ফেব্রুয়ারিতে ৩ টাকা ৪৫ পয়সা থেকে ৩ টাকা ৯৫ পয়সা দিতে হবে। তৃতীয় ধাপে ৩০১ থেকে ৫০০ ইউনিট পর্যন্ত ডিসেম্বরে ৫ টাকা ২১ পয়সা থেকে ৫ টাকা ৫৪ পয়সা এবং ফেব্রুয়ারিতে ৫ টাকা ৬৩ পয়সা থেকে ৫ টাকা ৯৮ পয়সা দিতে হবে। চতুর্থ ধাপে ৫০০ ইউনিটের বেশি ব্যবহারকারীকে ডিসেম্বর থেকে ৬ টাকা ৮৭ পয়সা থেকে ৮ টাকা ১৮ পয়সা এবং ফেব্রুয়ারিতে ৭ টাকা ৪২ পয়সা থেকে ৮ টাকা ৮৩ পয়সা দিতে হবে।
আরইবির বাণিজ্যিক গ্রাহকদের জন্য ডিসেম্বরে ৬ টাকা ৮০ পয়সা এবং ফেব্রুয়ারিতে ৭ টাকা ৩৩ পয়সা, অফপিক সময়ের জন্য ডিসেম্বর থেকে ৫ টাকা ২৩ পয়সা, ফেব্রুয়ারিতে ৫ টাকা ৮৮ পয়সা এবং পিক সময়ের জন্য ডিসেম্বর থেকে ৯ টাকা ৩১ পয়সা এবং ফেব্রুয়ারিতে ৯ টাকা ৬৬ পয়সা দাম দিতে হবে।
দাতব্য প্রতিষ্ঠানের জন্য ডিসেম্বরে ৩ টাকা ৪৫ পয়সা থেকে ৩ টাকা ৫২ পয়সা এবং ফেব্রুয়ারিতে ৩ টাকা ৬২ পয়সা থেকে ৩ টাকা ৭০ পয়সা দাম দিতে হবে। সেচে ডিসেম্বর থেকে দুই টাকা ৭৩ পয়সা থেকে ৩ টাকা ২০ পয়সা এবং ফেব্রুয়ারিতে দুই টাকা ৮৭ পয়সা থেকে ৩ টাকা ৩৬ পয়সা দাম দিতে হবে।
সাধারণ শিল্পে ফ্লাট রেট ডিসেম্বরে ৫ টাকা ২৭ পয়সা, ফেব্রুয়ারিতে ৫ টাকা ৬৭ পয়সা, অফপিকে ডিসেম্বরে ৪ টাকা ৪১ পয়সা, ফেব্রুয়ারিতে যা হবে ৪ টাকা ৮৬ পয়সা এবং পিক সময়ের জন্য ডিসেম্বরে ৬ টাকা ৭৫ পয়সা এবং ফেব্রুয়ারিতে ৬ টাকা ৯০ পয়সা প্রতি ইউনিটের দাম দিতে হবে। বৃহৎ শিল্পে ডিসেম্বর ফ্লাট রেট ডিসেম্বরে ৫ টাকা ১৪ পয়সা, ফেব্রুয়ারিতে ৫ টাকা ৫৫ পয়সা, অফপিকে ডিসেম্বরে ৪ টাকা ৪০ পয়সা, ফেব্রুয়ারিতে যা হবে ৪ টাকা ৮৬ পয়সা এবং পিক সময়ের জন্য ডিসেম্বরে ৭ টাকা ৫৫ পয়সা এবং ফেব্রুয়ারিতে ৭ টাকা ৬০ পয়সা প্রতি ইউনিটের দাম দিতে হবে।
উচ্চচাপ সাধারণ ব্যবহার (৩৩ কেভি লাইনের জন্য) ডিসেম্বরে ফ্লাট রেট ৪ টাকা ৮৮ পয়সা, ফেব্রুয়ারিতে ৫ টাকা ২৮ পয়সা, অফপিকে ডিসেম্বরে ৪ টাকা ৩০ পয়সা, ফেব্রুয়ারিতে যা হবে ৪ টাকা ৭৮ পয়সা এবং পিক সময়ের জন্য ডিসেম্বরে ৭ টাকা ৩৪ পয়সা এবং ফেব্রুয়ারিতে ৭ টাকা ৪৪ পয়সা প্রতি ইউনিটের দাম দিতে হবে।
আবাসিক, বাণিজ্যিক এবং দাতব্য প্রতিষ্ঠানের জন্য সার্ভিস চার্জ মাসে ১০ টাকা। এদের জন্য ডিমান্ড চার্জ যথাক্রমে ১৫ টাকা, ২৫ টাকা এবং ২০ টাকা। সেচ, সাধারণ শিল্প, বৃহৎ শিল্প এবং উচ্চচাপ ব্যবহারের জন্য সার্ভিস চার্জ যথাক্রমে ৩০ টাকা, ৭০ টাকা, ৪০০ টাকা এবং ৪৫০ টাকা। সেচে কোনো ডিমান্ড চার্জ লাগবে না। সাধারণ শিল্পে ২৫ কিলোওয়াট পর্যন্ত ব্যবহারকারীকে প্রতি কিলোওয়াটে ১৫ টাকা এবং এর ঊধর্ে্ব হলে ৪০ টাকা করে দিতে হবে। বৃহৎ শিল্পের জন্য প্রতি কিলোওয়াট ৪৫ টাকা, উচ্চচাপ ব্যবহারের জন্য কিলোওয়াট প্রতি ৪০ টাকা করে ডিমান্ড চার্জ দিতে হবে।
অন্য চার সংস্থার বিদ্যুতের মূল্য : ডেসকো, ডিপিডিসি, পিডিবি এবং ওজোপাডিকো এ চারটি কোম্পানির জন্য একই হারে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে। চার কোম্পানিতেই শূন্য থেকে ১০০ ইউনিট পর্যন্ত গ্রাহকদের ডিসেম্বরে দুই টাকা ৭৩ পয়সা এবং ফেব্রুয়ারিতে দুই টাকা ৮৭ পয়সা, দ্বিতীয় ধাপ ১০১-৪০০ ইউনিট পর্যন্ত ডিসেম্বরে ৩ টাকা ৮১ পয়সা, ফেব্রুয়ারিতে ৪ টাকা ০৪ পয়সা, তৃতীয় ধাপ ৪০০ ইউনিটের বেশি ডিসেম্বরে ৬ টাকা ৮৮ পয়সা এবং ফেব্রুয়ারিতে ৭ টাকা ৪৩ পয়সা দিতে হবে।
কৃষিকাজে ব্যবহারের জন্য ডিসেম্বরে ২ টাকা ০৩ পয়সা এবং ফেব্রুয়ারিতে ২ টাকা ১৩ পয়সা করে দিতে হবে।
ক্ষুদ্র শিল্পের জন্য ফ্লাট রেট ডিসেম্বরে ৫ টাকা ২৭ পয়সা এবং ফেব্রুয়ারিতে ৫ টাকা ৬৭ পয়সা দিতে হবে। অফপিকে ডিসেম্বরে ৪ টাকা ১৪ পয়সা এবং ফেব্রুয়ারিতে ৪ টাকা ৮৬ পয়সা এবং পিকে ডিসেম্বরে ৬ টাকা ৭৫ পয়সা এবং ফেব্রুয়ারিতে ৬ টাকা ৯০ পয়সা দিতে হবে।
বাণিজ্যিক অফিসের জন্য ফ্লাট রেট ডিসেম্বরে ৬ টাকা ৮০ পয়সা এবং ফেব্রুয়ারিতে ৭ টাকা ৩৩ পয়সা দিতে হবে। অফপিকে ডিসেম্বরে ৫ টাকা ২৩ পয়সা এবং ফেব্রুয়ারিতে ৫ টাকা ৮৮ পয়সা এবং পিকে ডিসেম্বরে ৯ টাকা ৩১ পয়সা এবং ফেব্রুয়ারিতে ৯ টাকা ৬৬ পয়সা দিতে হবে।
মধ্যমচাপ সাধারণ ব্যবহারের জন্য (১১ কেভি) ফ্লাট রেট ডিসেম্বরে ৫ টাকা ১৪ পয়সা এবং ফেব্রুয়ারিতে ৫ টাকা ৫৫ পয়সা দিতে হবে। অফপিকে ডিসেম্বরে ৪ টাকা ৪০ পয়সা এবং ফেব্রুয়ারিতে ৪ টাকা ৮৬ পয়সা এবং পিকে ডিসেম্বরে ৭ টাকা ৫৫ পয়সা এবং ফেব্রুয়ারিতে ৭ টাকা ৬০ পয়সা দিতে হবে।
উচ্চমান সাধারণ ব্যবহার (৩৩ কেভি লাইনের জন্য) ফ্লাট রেট ডিসেম্বরে ৪ টাকা ৮৮ পয়সা এবং ফেব্রুয়ারিতে ৫ টাকা ২৮ পয়সা দিতে হবে। অফপিকে ডিসেম্বরে ৪ টাকা ৩০ পয়সা এবং ফেব্রুয়ারিতে ৪ টাকা ৭৮ পয়সা এবং পিকে ডিসেম্বরে ৭ টাকা ৩৪ পয়সা এবং ফেব্রুয়ারিতে ৭ টাকা ৪৪ পয়সা দিতে হবে।
রাস্তার বাতির জন্য ফেব্রুয়ারিতে ৩ টাকা ৫২ পয়সা এবং ডিসেম্বরে ৩ টাকা ৬৯ পয়সা দিতে হবে।
এছাড়া কোম্পানিগুলোর অতি উচ্চচাপ সাধারণ শ্রেণীর জন্য ফ্লাট রেট ডিসেম্বরে ৪ টাকা ৫৯ পয়সা এবং ফেব্রুয়ারিতে ৫ টাকা ০২ পয়সা দিতে হবে। অফপিকে ডিসেম্বরে ৪ টাকা ০৪ পয়সা এবং ফেব্রুয়ারিতে ৪ টাকা ৫৪ পয়সা এবং পিকে ডিসেম্বরে ৬ টাকা ৯০ পয়সা এবং ফেব্রুয়ারিতে ৭ টাকা ০৭ পয়সা দিতে হবে।
ভর্তুকি কমিয়ে দেওয়ায় শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত বদল : চলতি বছর তিন দফা বিদ্যুতের পাইকারি (বাল্ক) মূল্য বেড়েছে। তিন দফায় বিদ্যুতের পাইকারি মূল্য যেখানে বেড়েছে ৫৩ শতাংশ, সেখানে খুচরা মূল্য সর্বশেষ গত ফেব্রুয়ারিতে ৫ শতাংশ বেড়েছে। এর ফলে বিতরণ সংস্থাগুলো চরম সংকটে পড়ে। এজন্য বিতরণ সংস্থাগুলো ভোক্তা পর্যায়ে বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাব দেয়। বিইআরসি এবারও সাধারণ গ্রাহকদের সামর্থ্যের কথা বিবেচনায় রেখে একশ' ইউনিট পর্যন্ত ব্যবহারকারীদের (লাইফলাইন গ্রাহক) জন্য বিদ্যুতের মূল্য না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এছাড়া কৃষি এবং ধর্মীয়সহ দাতব্য প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুতের দামও অপরিবর্তিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়ে আদেশ লেখা চূড়ান্ত করে। এর আগে সরকারের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনা করে তিন সংস্থা আরইবি, ওজোপাডিকো ও পিডিবির এ শ্রেণীর গ্রাহকের জন্য সাড়ে পাঁচশ কোটি টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ব্যাপারে আশ্বাস পায়। গতকাল সকালে অর্থ মন্ত্রণালয় বিতরণ খাতে আর্থিক সহায়তা ২১০ কোটি টাকার বেশি দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেয়। দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বিইআরসির চেয়ারম্যানকে ফোন করে বিষয়টি জানানো হয়। এ কারণে বিইআরসি আগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে। পুনরায় হিসাব-নিকাশ করে নতুন করে আদেশ তৈরি করতে সময় লেগে যায়। এজন্য সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করতে বিকেল ৫টা বেজে যায়।
সংবাদ সম্মেলনে বিইআরসি : চেয়ারম্যান সৈয়দ ইউসুফ হোসেন বলেন, এখন অর্থনীতি চাপের মধ্যে আছে। সরকার ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে দেশ চালাচ্ছে। এজন্য সরকারের ভর্তুকি দেওয়ার ক্ষমতা সীমিত হয়ে এসেছে। সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে ভর্তুকি কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ কারণে আগে সেচ, লাইফলাইন এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দাম না বাড়ানো হলেও এবার বৃদ্ধি করা হয়েছে। ড. সেলিম মাহমুদ বলেন, সরকার এমনিতেই বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে বড় অঙ্কের ভর্তুকি দিচ্ছে। তার ওপর বিতরণ খাতে আরও অধিক হারে ভর্তুকি দেওয়া সম্ভব নয়। তাছাড়া পশ্চিমবঙ্গে যেখানে গড়ে সাড়ে ৬ টাকায় প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ বিক্রি হচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশে আগের মতো ভর্তুকি দেওয়া সম্ভব নয়।
দাম বৃদ্ধি সত্ত্বেও সংস্থাগুলোর লাভ-লস :দাম বৃদ্ধি সত্ত্বেও চারটি সংস্থা লোকসান দেবে। কেবল লাভ করবে ডেসকো। সংস্থাটি বছরে লাভ করবে ১০৭ কোটি টাকা। কমিশনের সদস্য প্রকৌশলী মোঃ ইমদাদুল হক জানান, ডিপিডিসি ৮ কোটি টাকা, ওজোপাডিকো ২৬ কোটি ৫৯ লাখ টাকা, পিডিবি ৪৫০ কোটি টাকা এবং আরইবি ২৫৯ কোটি টাকা লোকসান দেবে।

No comments

Powered by Blogger.