ম্যারেজ মিডিয়া প্রতারণা-নিয়মিত নজরদারি স্বস্তি দিতে পারে

রাজধানীতে প্রতারণার জাল যেন বিছানোই থাকে। মাপজোখ থেকে শুরু করে হেন জায়গা নেই যে তাকে ঠগবাজিমুক্ত ঘোষণা করা যাবে। খাদ্যে ভেজাল, ওষুধে ভেজাল_ সর্বত্র যেন ভেজালের প্রতিযোগিতা। এসবের মধ্যেই বিয়ে নিয়ে প্রতারণার খবর কারও কারও কাছে পানসে মনে হতে পারে। তবে 'কান্তা ম্যারেজ মিডিয়া' নামের বিয়ের বন্দোবস্ত করে দেওয়ার ভুয়া প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসা কতিপয় ধাপ্পাবাজের কাহিনী


হয়তো গোয়েন্দা পুলিশের গোচরীভূত না হলে আরও অনেক দিন অজানাই থেকে যেত। গতকাল বৃহস্পতিবার সমকালে প্রকাশিত এক রিপোর্টে প্রতারকচক্রের ধরা পড়ার কাহিনী প্রকাশ পেয়েছে। আশঙ্কার ব্যাপার হলো, এরা গোয়েন্দা পুলিশের ভুয়া পরিচয়ের আড়ালে তাদের প্রতারণার ফাঁদ পেতে শিকারকে সর্বস্বান্ত করত। এদেরই একজন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয়ে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে গিয়েই গোল বাধিয়ে বসে। কনে পক্ষের সন্দেহ হওয়ায় তারা ডিবি অফিসে খবর নিতে গিয়েই এদের প্রতারণার জালটি হাজতবন্দি হয়। এভাবে আরও কত ধরনের প্রতারকচক্র রাজধানীর বস্তি থেকে শুরু করে বিলাসবহুল টাওয়ারে তাদের প্রতারণা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে কে জানে! কখনও কখনও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সক্রিয় হলে এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রতারকের খপ্পরে পড়া মানুষের বুদ্ধি ও সাহসবলে কোনো কোনো প্রতারকচক্র ধরা পড়ে। কিন্তু অধিকাংশই থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। আসলে অন্যায়-অবিচার, বৈষম্য, আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ পাওয়ার মতো হঠাৎ আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়ার তরিকা সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে শিকড় বিস্তার করায় অধিকাংশ মানুষের মধ্যেই মন্দে-মত্ত হয়ে লাভ হলে ক্ষতি কী_ এ ধরনের একটা ক্ষতিকর মানসিকতা দৃশ্যমান। এ কারণেই এখানে প্রতারণার ঘটনা অনেক বেশি ঘটে। তাই বলে এসব অন্যায্যতা, অন্যায়কে কি আমরা অনির্দিষ্টকাল ধরে চলতে দেব? অবশ্যই না। এ ব্যাপারে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী স্থায়ী নজরদারি ব্যবস্থা কায়েম করে ম্যারেজ মিডিয়া খুলে প্রতারণার কৌশলগুলোকে অকেজো করে দিতে পারে। একই সঙ্গে এসব ব্যাপারে নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং তরুণ সমাজকে তাদের নিয়মিত পাঠের পাশাপাশি সামাজিক দায়িত্বশীলতা ও সৃজনশীলতার মতো সৎ গুণগুলো অর্জনের শিক্ষা দিলে সমাজের ভেতর থেকেই প্রতারণার বিরুদ্ধে খৰহস্ত হওয়ার তাগিদ বাড়বে।

No comments

Powered by Blogger.