এসইসির পাইপলাইনে ৬১ মিউচ্যুয়াল ফান্ড-সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে শেয়ারবাজারে by তৌহিদুল ইসলাম মিন্টু

১টি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মাধ্যমে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকা শেয়ারবাজারের সেকেন্ডারি মার্কেটে বিনিয়োগের অপেক্ষায় রয়েছে। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এঙ্চেঞ্জ কমিশনে (এসইসি) এই মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোর আবেদন জমা রয়েছে। এর মধ্যে ১৪টি ফান্ডকে ইতিমধ্যেই নিবন্ধন দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এঙ্চেঞ্জ কমিশন (এসইসি)। এসইসির কাছ থেকে ট্রাস্ট চুক্তির খসড়া অনুমোদনের পর নিবন্ধনের


প্রক্রিয়ায় রয়েছে আরো সাতটি মিউচ্যুয়াল ফান্ড।এসইসি সূত্রে জানা গেছে, পুঁজিবাজারের গভীরতা বাড়াতে এখন থেকে নিয়মিতভাবে নতুন মিউচ্যুয়াল ফান্ড বাজারে আনার অনুমোদন দেওয়া হবে। বিপুল এই তহবিল গঠিত হলে বিনিয়োগকারীদের পুঁজির নিরাপত্তা ব্যাপক মাত্রায় বাড়বে। বাজারসংশ্লিষ্টদের মতে, শেয়ারের অতিমূল্যায়ন বা অবমূল্যায়ন রোধে মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলো প্রধান হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে। শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের মাধ্যমে ফান্ডগুলো যে মুনাফা অর্জন করে, তার পুরোটাই আনুপাতিক হারে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। ফলে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের পুরো অর্থ ঘুরে-ফিরে শেয়ারবাজারেই বিনিয়োগ হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এসইসিতে বর্তমানে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকার মোট ৬১টি মিউচ্যুয়াল ফান্ড গঠনের আবেদন জমা রয়েছে। এর মধ্যে ১৪টি ফান্ডকে ইতিমধ্যেই নিবন্ধন দিয়েছে এসইসি। নিবন্ধন অনুমোদিত ফান্ডগুলোর মধ্যে এবি ব্যাংক ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের আইপিওর মাধ্যমে ইউনিট বরাদ্দ সম্পন্ন হয়েছে। শিগগিরই দুই শেয়ারবাজারে এই ফান্ডের ইউনিট লেনদেন শুরু হবে। ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিঙ্ড ইনকাম ফান্ডের আবেদনপত্র জমা নেওয়ার পর বরাদ্দ প্রক্রিয়া চলছে। এ ছাড়া এনএলআই ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের আইপিও আবেদন আগামী ১১ ডিসেম্বর শুরু হবে। নিবন্ধন পাওয়ার পর এসইসিতে প্রসপেক্টাস জমা দিয়েছে সোনালী ব্যাংক ও অগ্রণী ব্যাংক মিউচ্যুয়াল ফান্ড। আর নিবন্ধনের অনুমোদন পেলেও প্রসপেক্টাস জমা দেয়নি এনসিসিবি-১, রূপালী ইনস্যুরেন্স, প্রাইম ফাইন্যান্স সেকেন্ড, এঙ্মি ব্যাংক ফার্স্ট, পদ্মা ইসলামী লাইফ ফার্স্ট, সন্ধানী লাইফ গ্রোথ ফান্ড, এমটিবি ফার্স্ট, কন্টিনেন্টাল ইনস্যুরেন্স ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড এবং এমটিবি ইউনিট ফান্ড। এসইসির কাছ থেকে ট্রাস্ট চুক্তির খসড়া অনুমোদনের পর নিবন্ধনের প্রক্রিয়ায় রয়েছে সাতটি মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এগুলো হলো_ভিআইপিবি এনআরবি গ্রোথ ফান্ড, এনসিসিবি এনআরবি মিউচ্যুয়াল ফান্ড, উত্তরা ফাইন্যান্স ফার্স্ট, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স ফার্স্ট, বিজিআইসি, এমটিবি ইউনিট ফান্ড ও ইউসিবি ইনফ্রাস্টাকচার ফান্ড। ৩০টি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের আবেদন এসইসিতে প্রাথমিক পর্যায়ে পরীক্ষাধীন রয়েছে। এগুলো হলো_এবি ব্যাংক টপ-১০০ ইনডেঙ্, জনতা অ্যামপ্লয়িজ, আইসিবি এনআরবি এনার্জি, আইসিবি মাল্টি সেক্টরাল, প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট এনআরবি, ইউসিএল ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড, আইসিবি এমএমসিএল সোশ্যালি রিসপনসেবল, আইসিবি এএমসিএল গ্রোথ, ইউসিএল, এসআইবিএল ফার্স্ট, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক ফার্স্ট, ট্রাস্ট ব্যাংক ফার্স্ট ক্লায়েন্ট, ট্রাস্ট ব্যাংক ফার্স্ট এনআরবি, প্রিমিয়ার ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক সেকেন্ড, প্রাইম ব্যাংক ফাউন্ডেশন, ফিনিঙ্ ফাইন্যান্স সেকেন্ড, জিএসপি ক্যাপিটাল গ্রোথ, মেঘনা লাইফ স্কিম-১, যমুনা ব্যাংক ফার্স্ট আইসিবি এএমসিএল, ফিনিঙ্ ইনস্যুরেন্স, আইসিবি এমসিএল এনআরবি ইউনিট ফান্ড, ইউসিবি অ্যামপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট, ভিআইপিবি ফিঙ্ড ইনকাম, প্রাইম ব্যাংক ইনফ্রাস্ট্রাকচার, আইসিবি অ্যামপ্লয়িজ সুপার এনুয়েশন স্কিম-১, এনবিএল ইনফ্রাস্ট্রাকচার, এনবিএল ফার্স্ট, অগ্রণী ইউএসএ-কানাডা এনআরবি, অগ্রণী আফ্রিকা-গালফ-মিডল ইস্ট এনআরবি এবং অগ্রণী এশিয়া-ইউরোপ এনআরবি মিউচ্যুয়াল ফান্ড।
এ ছাড়া সন্ধানী লাইফ, আইডিএলসি-৫০ ইনডেঙ্ ফান্ড এবং এমটিবি ইনডেঙ্ ফান্ডের উদ্যোক্তাদের ঋণ-সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন (সিআইবি রিপোর্ট) সংগ্রহ করেছে এসইসি। আর এসজেআইবিএল ফার্স্ট ইসলামিক মিউচ্যুয়াল ফান্ড, এসজেআইবিএল ফার্স্ট এনআরবি মিউচ্যুয়াল ফান্ড এবং আইএফআইসি ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফান্ডের সিআইবি প্রতিবেদন সংগ্রহ প্রক্রিয়া চলছে। আর চারটি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের সিআইবি প্রতিবেদনে সমস্যা থাকায় তা দূর করার জন্য আবেদনকারীদের বলা হয়েছে।
কমিশনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, শেয়ারবাজারে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের পরিমাণ যত বাড়বে_ বাজার তত বেশি স্থিতিশীল ও ঝুঁকিমুক্ত হবে। কারণ মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানগুলো সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে মূলধন নিয়ে তহবিল গঠন করে তা আবার শেয়ারবাজারেই বিনিয়োগ করে। এ ক্ষেত্রে নিয়মিত পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে কম্পানির মৌলভিত্তি এবং বাজার পরিস্থিতি বিবেচনা করে মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলো কোনো শেয়ারে বিনিয়োগ করে। শেয়ারের অতিমূল্যায়ন বা অবমূল্যায়ন রোধে মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলো প্রধান হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে। শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের মাধ্যমে ফান্ডগুলো যে মুনাফা অর্জন করে_ তার পুরোটাই আনুপাতিক হারে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। ফলে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের পুরো
অর্থ ঘুরে-ফিরে শেয়ারবাজারেই বিনিয়োগ হয়।

No comments

Powered by Blogger.