মিয়ানমারে হিলারি-থেইন সেইন বৈঠক-সংস্কারের বিনিময়ে পুরস্কারের প্রতিশ্রুতি

ণতন্ত্রায়ণের লক্ষ্যে সংস্কার অব্যাহত রাখা, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সামরিক সম্পর্ক ছিন্ন করার মতো কয়েকটি শর্ত পূরণ সাপেক্ষে মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মিয়ানমার সফররত মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন গতকাল বৃহস্পতিবার দেশটির প্রেসিডেন্ট থেইন সেইনের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ প্রতিশ্রুতি দেন। থেইন সেইনও বেসামরিকীকরণের পথে কর্মসূচি অব্যাহত রাখার বিষয়ে হিলারিকে আশ্বস্ত করেছেন।


মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই ঐতিহাসিক সফরকে দুদেশের মধ্যকার সম্পর্কের ক্ষেত্রে 'নতুন অধ্যায়' বলে অভিহিত করেছেন থেইন সেইন।
মিয়ানমার সরকারের গৃহীত সংস্কার কর্মসূচির পরিপ্রেক্ষিতে বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে সহযোগিতার প্রস্তাব দিয়েছেন হিলারি। তবে দেশটির ওপর বলবৎ থাকা মার্কিন অবরোধ প্রত্যাহারের সময় এখনো আসেনি বলে তিনি জানিয়েছেন। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশা করেন, দুই দেশের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্কের উন্নয়নসহ মিয়ানমারের প্রতি মার্কিন সহযোগিতার ক্ষেত্র প্রসারে আলোচনা অব্যাহত থাকবে।
গতকাল রাজধানী নেইপিডোর প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে হিলারির সঙ্গে থেইন সেইনের বৈঠক হয়। বৈঠকে শেষে হিলারি সাংবাদিকদের বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মার্কিন সেনাদের হত্যার সম্ভাব্য কারণ অনুসন্ধানে মিয়ানমারের সঙ্গে যৌথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। পাশাপাশি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের গৃহীত লোয়ার মেকং ইনিশিয়েটিভ প্রকল্পের পর্যবেক্ষক হিসেবে মিয়ানমারকে যোগ দেওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে মিয়ানমারের যোগাযোগ বৃদ্ধির ব্যাপারেও আর কোনো নিষেধাজ্ঞা থাকবে না। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'এসব পদক্ষেপের মাত্রা ধীরে ধীরে বাড়বে। যদি সংস্কারের ধারা গতিশীল হয় তবে আমরা আরো বেশি মাত্রায় সব কিছু করার জন্য প্রস্তুত। সেই উদ্দীপনার জায়গা থেকে কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ব্যাপারে আমরা আলোচনা করছি। যাতে রাষ্ট্রদূত পর্যায়ে তা উন্নীত করা যায়।' তবে হিলারি জানান, রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দেওয়াসহ উপজাতীদের মধ্যকার সংঘাত নিরসন ও জাতীয় পুনর্গঠনের ফলের ওপর দুই দেশের সম্পর্কের অগ্রগতি নির্ভর করবে। তিনি বলেন, 'দুই দেশের ঐতিহাসিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন অধ্যায় সূচনার সঠিক সময় নির্ধারণের জন্যই আমি মিয়ানমারে এসেছি।'
প্রেসিডেন্ট থেইনের সঙ্গে বৈঠকের পর অন্যান্য জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকতার সঙ্গেও বৈঠক করেন হিলারি। গতকালই নেইপিডো থেকে ইয়াঙ্গুন যান। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের মিশন প্রধানের বাসভবনে নৈশভোজে যোগ দেন হিলারি ও অং সান সু চি। আজ শুক্রবার সকালে সু চির সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিক বৈঠক হবে।
ওয়াশিংটনের ওপর শান্তিতে নোবেলজয়ী মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী সু চির ব্যাপক প্রভাব রয়েছে বলে মনে করা হয়। দেশটির ওপর আরোপ করা মার্কিন অবরোধ প্রত্যাহার বা অবরোধের মাত্রা কমানোর ব্যাপারে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে। গত বছরের নভেম্বরে গৃহবন্দিত্ব থেকে মুক্তির পর এখন পর্যন্ত ওবামা প্রশাসনের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সিরিজ বৈঠক করেছেন সু চি।
গত বুধবারও তিনি বৈঠক করেন মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে। তিনি আশা করেন, হিলারির সফর সংস্কার কর্মসূচিকে জোরাল করবে। সূত্র : এএফপি, ওয়াশিংটন পোস্ট, বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.