মোড়কীকরণে পাটপণ্যের ব্যবহার বাধ্য করতে বিধিমালা চূড়ান্ত হচ্ছে

ণ্যের মোড়কীকরণে পাটপণ্যের ব্যবহার আইন মানতে বাধ্য করতে আগামী তিন মাসের মধ্যে বিধিমালা চূড়ান্ত করা হচ্ছে। সরকারি-বেসরকারি প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের জন্য এ আইন কার্যকর হবে।গতকাল বাংলাদেশ জুল মিলস্ করপোরেশনের (বিজেএমসি) কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রণালয়ের সচিব আশরাফুল মকবুল এ কথা জানান।তিনি বলেন, বিধিমালা প্রকাশের পর মোড়কীকরণে করা আইন যথাযথভাবে মানছে


কি না, তা যাচাইয়ে মোবাইল কোর্ট সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বিনা নোটিশে পরিদর্শন করবেন। আইন অমান্যকারী প্রতিষ্ঠানের জন্য জেল-জরিমানার মতো শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।
আশরাফুল মকবুল বলেন, আন্তর্জাতিক পাটের বাজার মন্দা। আবার যেসব দেশ মূলত বাংলাদেশের পাট ও পাটজাত পণ্যের প্রধান ক্রেতা, সেসব দেশে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছে। তাই স্থানীয় পাটের বাজার সম্প্রসারণ এখন সময়ে দাবি বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বিজেএমসির চেয়ারম্যান টিডি মিত্র বলেন, বিজেএমসি থেকে ৩০ বছর পরে গত অর্থবছরে নিট মুনাফা করেছে ১৯ কোটি ৫৩ লাখ টাকা, উৎপাদন হয়েছে ৫৫৩ টন এবং রপ্তানি করেছে ৯৩৯ কোটি টাকার পাট ও পাটজাত পণ্য। পর্যায়ক্রমে বন্ধ পাটকল উৎপাদনমুখী করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পুরনো পাটকলগুলো সচল রাখার পাশাপাশি আগামী বছরে বন্ধ মিলগুলো চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় আরআর জুট মিলস্ লিমিটেড, এমএম জুট মিলস্ লিমিটেড, কর্ণফুলী জুট মিলস্ লিমিটেড, কর্ণফুলী ফোরাত জুট মিলস্ লিমিটেড এবং রাজশাহী জুট মিলস্ লিমিটেড চালু করা হবে।
তিনি বলেন, পাটের সুদিন দেখে কৃষকরা পাট চাষে আগ্রহী হয়েছেন। পাটকলগুলোয় উৎপাদনও আগের চেয়ে বেশি। কিন্তু সে তুলনায় আন্তর্জাতিক পাটের বাজার সম্প্রসারণ হচ্ছে না। আবার দীর্ঘদিনের ক্রেতা দেশগুলোয়ও বিক্রি প্রায় বন্ধ। তাই চলতি বছর স্থানীয় বাজারে বিক্রি বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া সম্প্রতি সংসদীয় কমিটির অনুমোদনে বিদেশে নতুন বাজার খুঁজতে একাধিক পাট বিক্রয়কেন্দ খোলার দাপ্তরিক প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানান টিডি মিত্র।
সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সরকারি-বেসরকারি পাটকলগুলোর প্রতি একই আচরণ করেন না বলে অভিযোগ জানিয়ে বিজেএসির চেয়ারম্যান শামসুজ্জোহা বলেন, এ শিল্পে দক্ষ জনবলের সংকট রয়েছে। এ ছাড়া পাট শিল্পকে কৃষিপণ্যের আওতাভুক্ত করার প্রক্রিয়া এখনো ফাইলবন্দি। আবার পাট শিল্পে দেওয়া ঋণে সুদের হার ৭ শতাংশ করা হলেও তা মানছে না সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক। এ বিষয়ে সরকারের নজরদারির সুপারিশ করেন তিনি।
বিজেএমএ সচিব বারিক খান বলেন, পাটকলগুলোয় রপ্তানি ভর্তুকি বাড়িয়ে ১০ শতাংশের পরিবর্তে ২০ শতাংশ করা হয়েছে এবং পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি আয়ের ওপর .২৫ শতাংশ কর কর্তন করা হচ্ছে, যা পাট শিল্পের বিকাশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে বলে ব্যবসায়ী নেতা উল্লেখ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে পাট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক নাসির উদ্দিন, বিজেএমসির পরিচালক (বিপণন) শামসুল হকসহ বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং বিজেএমসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.