সাফ ফুটবল বয়কটের কথাও ভাবছে বাংলাদেশ!

ভিসা জটিলতা কাটেনি, কলকাতায় প্র্যাকটিস ম্যাচ খেলাও হচ্ছে না বাংলাদেশ ফুটবল দলের। স্বাভাবিকভাবে ২ ডিসেম্বর থেকে দিল্লিতে অনুষ্ঠেয় সাফ ফুটবলে যাওয়া নিয়েও তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। তবে অবিশ্বাস্যভাবে ইলিয়েভস্কির আস্থা ফিরছে ফুটবলারদের ওপর। বাংলাদেশের এ মেসিডোনিয়ান কোচ প্রথমবারের মতো মুখ ফুটে বলেছেন টুর্নামেন্ট সেরার স্বপ্নের কথা।


বেশ কিছুদিন ধরেই ভারতের ভিসা জটিলতায় আটকে আছে বাংলাদেশ ফুটবল দল। গত সপ্তাহে স্কোয়াডের ২৫ জনের ভিসা হলেও হয়নি বাকি পাঁচজনের। তাঁদের ভিসার জন্য নতুন করে ফরম পূরণ করতে হবে, অনলাইনে সেই চেষ্টা করে ব্যর্থ বাফুফে কর্তারা। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শরণাপন্ন হয়েও লাভ হয়নি কোনো। কর্তারা চেয়েছিলেন, গতকাল ইলিয়েভস্কিসহ পাঁচজনের ভিসা হলে আজই দল কলকাতায় পৌঁছাত এবং শেষ প্র্যাকটিস ম্যাচটি খেলার সুযোগ পেত। কিন্তু অনেক দৌড়-ঝাঁপ করেও ভিসার ব্যবস্থা করতে পারেননি তাঁরা। তাই জাতীয় দল ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান বাদল রায় কঠিন সুরেই বলেছেন, 'আমাদের একজন ফুটবলারেরও ভিসা না হলে দল দিল্লি যাবে না। অন্যদের ভিসা নিয়ে হয়তো আপত্তি থাকতে পারে কিন্তু কোচ-খেলোয়াড়দের নিয়ে এমন মনোভাব আশা করিনি।' তাঁর কথাতেই পরিষ্কার হয়ে গেল, ভিসা জটিলতা পুরোপুরি না কাটলে বাংলাদেশ এ টুর্নামেন্ট বয়কট করবে।
ইলিয়েভস্কি অবশ্য ভিসা নিয়ে মোটেও ভাবিত নন। তাঁর ভিসার জন্য মেসিডোনিয়ার ভারতীয় হাই কমিশন থেকে 'ক্লিয়ারেন্স' লাগবে, সেটার কী অবস্থা কে জানে! তিনি আছেন তাঁর দল নিয়েই এবং আশ্চর্যের ব্যাপার হলো, ক্রমে কোচের মুখে শোনা যাচ্ছে ইতিবাচক কথা, 'দলের প্রস্তুতি এখন শেষ পর্যায়ে। গত কয়েক দিনের প্র্যাকটিসে ফুটবলারদের দেখে মনে হয়েছে তারা শতভাগ দিতে প্রস্তুত।' কিন্তু শিডিউল অনুযায়ী কলকাতার প্র্যাকটিস ম্যাচ দুটো যে বাতিল হয়ে গেছে, তাতে কী শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ঘাটতি রয়ে গেল? 'না। ওই ম্যাচ দুটো না হওয়ায় কিছুই আসে-যায় না। কারণ প্রতিপক্ষ অত শক্তিশালী নয়। বরং নেপালে চ্যাম্পিয়ন হয়ে আসা শেখ জামালের সঙ্গে ম্যাচটি আমাদের জন্য উপকারী ছিল'_বলেছেন বাংলাদেশের মেসিডোনিয়ান কোচ। ভিসা জটিলতায় প্র্যাকটিস ম্যাচ না হলেও কোচ গত কয়েক দিনে তাঁর একাদশ সাজিয়ে ফেলেছেন। দ্বিধা কাটিয়ে পেঁৗছে গেছেন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে। সেসবের ওপর ভর করেই তিনি প্রথমবারের মতো বড় স্বপ্নের কথা শুনিয়েছেন, 'প্রাথমিকভাবে আমাদের টার্গেট সেমিফাইনালে ওঠা, তারপর অবশ্যই ফাইনালে ওঠা।'
দলের স্ট্রাইকার জাহিদ হাসান এমিলিও বড় স্বপ্ন দেখছেন সাফে, 'আমাদের প্রস্তুতি ভালো হয়েছে। টুর্নামেন্টে আমরা প্রত্যেকটি ম্যাচ ধরে খেলতে চাই। প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানকে হারাতে পারলে আমাদের সেমিফাইনাল অনেকখানি নিশ্চিত হয়ে যায়।' জয় দিয়ে শুরু করলে মালদ্বীপ ও নেপালের বিপক্ষে পরের দুটো ম্যাচের বড় অনুপ্রেরণা হয় বাংলাদেশ দলের। আর গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়াটাই আপাতত তাদের লক্ষ্য, নইলে যে হয়তো সেমিফাইনালেই টপ ফেভারিট ভারতের সঙ্গে মুখোমুখি হতে হবে।
তবে চ্যাম্পিয়ন হতে গেলে তো হারাতে হবে সব প্রতিপক্ষকে। এই দলের সেই ক্ষমতা আছে বলে বিশ্বাস করেন মামুনুল ইসলাম। এই দলের মাঝমাঠের কাণ্ডারির দাবি, 'ইতিহাসে এমন প্রস্তুতি নিয়ে কোনো দলের টুর্নামেন্ট খেলতে যাওয়ার সুযোগ আমাদের হয়নি আগে। গত এক সপ্তাহে খেলোয়াড়রা খুব উজ্জীবিত।' তবে কলকাতার প্র্যাকটিস ম্যাচ নিয়ে মামুনের একটু আক্ষেপ আছে, 'আমরা সাধারণত দেশের মাটিতে ভালো খেলি। তাই টুর্নামেন্টের আগে আগে কলকাতার ম্যাচ দুটো হলে দলটা আরো আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠত।'

No comments

Powered by Blogger.