সামেলার লাশ উদ্ধার ইমাম লাপাত্তা

বশেষে ১২ বছরের সামেলাকে পাওয়া গেছে। তবে জীবিত নয়, মৃত। গত সোমবার ভোরে গ্রামের মসজিদের ইমাম আসাদ মুন্সীর কাছে আরবি পড়তে গিয়েছিল সে। তার পর থেকে তাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। ইমাম পরের দিন থেকে লাপাত্তা। চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী সামেলার গরিব বাবা-মা অভিযোগ করেছেন, ইমাম সাহেব তাঁদের মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে বলে নগরকান্দায় থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরও পুলিশ বিষয়টি পাত্তা দেয়নি।


তাকে উদ্ধারে কোনো ধরনের চেষ্টাই করেনি পুলিশ। উল্টো তাঁদের আজেবাজে কথা বলে ধমক দিয়ে থানা থেকে বের করে দিয়েছে। নিখোঁজ হওয়ার ছয় দিন পর গতকাল ওই মসজিদেরই পাশে বাড়ির পেছনের জঙ্গলে সামেলার লাশের সন্ধান মিলেছে। ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার তালমা ইউনিয়নের সন্তোষী গ্রামে ঘটেছে এ ঘটনা।
কোনাগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েরর চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী সামেলার দিনমজুর বাবা ফিরোজ তালুকদার জানান, গত সোমবার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে গ্রামের অন্য মেয়েদের সঙ্গে সামেলাও আরবি পড়তে মসজিদের ইমাম আসাদ মুন্সীর (৩৫) কাছে যায়। কিছুক্ষণ পর ইমাম অন্য মেয়েদের ছুটি দেন। কিন্তু সামেলা ও তার দুই চাচাতো বোন রূপা ও নীপাকে মসজিদে থাকতে বলেন। এরপর ইমাম সাহেব রূপা ও নীপাকে গ্রামের বিভিন্ন বাড়ি থেকে মসজিদের জন্য চাল উঠানোর কথা বলে বাড়ি থেকে বালতি আনার জন্য পাঠান। রূপা ও নীপা বাড়ি গিয়ে বিষয়টি জানালে তাদের আর আসতে না দিয়ে সামেলাকে খুঁজতে বের হন তার মা জোহরা বেগম। কিন্তু ইমাম বা সামেলাকে মসজিদে পাওয়া যায়নি। সামেলার চাচাতো বোন নীপা জানায়, সে ইমামের সঙ্গে অচেনা তিন লোকসহ সামেলাকে বরিশাল সড়কের দিকে যেতে দেখেছে। এরপর অনেক খুঁজেও সামেলা বা ইমামকে পাওয়া যায়নি। নগরকান্দা থানায় অভিযোগ দিতে গেলে পুলিশ তাঁদের গালি দিয়ে তাড়িয়ে দেয়।
মঙ্গলবার ইমামকে পেয়ে সামেলার খোঁজ জানতে চাইলে তিনি বলেন, সামেলাকে তিনি কোথাও নিয়ে যাননি। এর পরপরই ইমাম গা ঢাকা দেন। তাঁর বাড়ি তালমা এলাকায়। বুধবার ফের থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশ তাঁদের কোনো কথা না শুনে থানা থেকে বের করে দেয়। নগরকান্দা থানার ওসি রামপ্রসাদ ভক্ত জানান, ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ফরিদপুর মেডিক্যাল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.