মরা গাছ কাটার নির্দেশ ছিল, কাটা হলো ভালো গাছও by নজরুল ইসলাম

কোনও নিলাম ছাড়াই বান্দরবানের লামার সরই ইউনিয়‌নে সড়‌কের দু’পা‌শে থাকা চার শতা‌ধিক গাছ কেটে ফেলার অ‌ভি‌যোগ উ‌ঠে‌ছে ইউ‌পি চেয়ারম্যান ও সচিবের বিরু‌দ্ধে। এ বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, চেয়ারম্যানকে মরা গাছ কাটার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি ভালো গাছগুলো কেন কেটেছেন তা প্রশাসনের জানা নেই।
স্থানীয়রা জানায়, গত এক  মাস ধরে লামা-সুয়ালক সড়কের কম্পনিয়া, আন্ধারী হিমছড়ি, কেয়াজুপাড়া বাজার ও আমতলী পর্যন্ত প্রায় ১৩ কিলোমিটার সড়কের দু’পাশ চার শতা‌ধিক গাছ কাটা হ‌য়ে গে‌ছে।
সরকারি অনুমতি আছে-এমন কথা বলে সরই ইউপি চেয়ারম্যান ফরিদুল আলম ও সচিব মো. মুসা পরিষদের দফাদার মোবারক হোসেনকে দিয়ে ভালো গাছগুলো কেটে বিভিন্ন ব্রিকফিল্ড ও তামাকচুল্লিতে বিক্রি করে দিয়েছেন। এছাড়া কিছুদিন আগে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা ইদ্রিস কোম্পানি কম্পনিয়া এলাকা হতে কয়েক গাড়ি এবং আব্দুল আজিজ না‌মের আ‌রেক গাছ ব্যবসায়ী আমতলী হতে বেশকিছু গাছ কে‌টে ফে‌লেছেন।
কেটে ফেলা গাছের গোড়া
কেটে ফেলা গাছের গোড়া
স‌রেজ‌মিন ঘু‌রে দেখা গে‌ছে,  লামা-সুয়ালক সড়কের দু’পাশে গা‌ছের কাটা অংশ পড়ে রয়েছে। সড়কের আন্ধারী হিমছড়ি এলাকায় বড় বড় দুইটি একাশি গাছ আধাকাটা অবস্থায় দেখা গে‌ছে।
স্থানীরা জানি‌য়ে‌ছেন, গাছগুলো চেয়ারম্যান ফরিদুল আলম গাছ ব্যবসায়ী মোস্তফা সওদাগরকে বিক্রি করেছে এবং তি‌নি গাছগু‌লো পাচার করে দিয়েছেন।
এ বিষয়ে মোস্তফা সওদাগর বলেন, ‘আমি ১৫ হাজার টাকা দিয়ে চেয়ারম্যানের কাছ থে‌কে রাস্তার পাশের পাঁচটি গাছ কিনেছি।’
কেটে ফেলা গাছ
কেটে ফেলা গাছ
দোকানদার আসমা বেগম বলেন, ‘সচিব মুসা লোকজন দিয়ে গাছগুলো কেটে নিয়ে গেছে। গাছ কেটে নেওয়ার পরে অ‌নেকগু‌লো গা‌ছের গোড়ায় মাটি চাপা দিয়েছে। যাতে কাটা গা‌ছের গোড়াগু‌লো দেখা না যায়।’
আমতলী পাড়ার মনসুর আলম বলেন, ‘রাস্তার পাশের বড় বড় গাছগুলো কেটে নিয়ে গেছে চেয়ারম্যান ও সচিব।’
এ বিষ‌য়ে দফাদার মোবারক হোসেন বলেন, ‘আমাকে চেয়ারম্যান ও সচিব গাছগুলো কাটতে বলেছেন। তা‌দের সঙ্গে কথা ব‌লেন।’
কেটে ফেলা গাছ
কেটে ফেলা গাছ
ইউপি সচিব মো. মুসা বলেন, ‘আমি কোনও গাছ কাটিনি। এ বিষ‌য়ে আ‌মি কিছু জা‌নি না।’
চেয়ারম্যান ফরিদুল আলম বলেন, ‘আমাকে লামা উপজেলা প্রকৌশলী কর্মকর্তা সড়কের দু’পাশের মরা গাছগুলো কাটতে অনুমতি দিয়েছেন।’ 
কেটে ফেলা গাছ
কেটে ফেলা গাছ
প্রকৌশলী নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘আমরা সরই ইউপি চেয়ারম্যানকে রাস্তার পাশের কয়েকটি মরা গাছ কাটার জন্য চিঠি দিয়েছিলাম। তিনি ভালো গাছ কেন কাটলেন এবং কেন বিক্রি করেছেন তা আমি জানি না।’
এ বিষ‌য়ে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-এ জান্নাত রুমি বলেন, ‘খবর পে‌য়ে চেয়ারম্যানকে গাছ কাটা বন্ধ করতে বলেছি। এই বিষয়ে লামা উপজেলা প্রকৌশলীকে খোঁজ নি‌য়ে আমাকে জানাতে বলেছি।’

No comments

Powered by Blogger.