মহিউদ্দিনের বাড়িতে এখনও শোকের মাতম

 চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র এএএম মহিউদ্দিন হত্যার পর তার চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালীর গ্রামের বাড়িতে শোকের মাতম চলছে।
বিলাপ ধরে কাঁদছেন পিতা ফজলুল কাদের। কিছুণ পর পরই সংজ্ঞা হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ছেন মা হাছিনা আক্তার। দুই ভাই বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের এলএলবি অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রকাশ নাছিম ও ডুলাহাজারা কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আব্দুল্লাহ আল ছগির এবং একমাত্র ছোট বোন রসিদ আহমদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর এক নম্বর ছাত্রী ফৌজিয়া ফারিয়া বড় ভাইকে হারানোর বেদনা কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না। গত দু'দিন ধরে তাদের ঘরের চুলোয় আগুন জ্বলেনি। নিজেদের কেনার তৌফিক না থাকার পরও আত্মীয়রা যে খাবার এনেছেন তাও পড়ে আছে। অনাহারে কাটাচ্ছে পরিবারের সকল সদস্য।
ফজলুল কাদের এখন বড় বেশি অসহায়। একদিকে, সন্ত্রাসীরা কেড়ে নিয়েছে তার বড় সনত্মানের প্রাণ। অপরদিকে, হঠাৎ করে নিকটবর্তী লামা থেকে রাঙ্গামাটি বদলি করায় তার মাথায় বাজ পড়েছে। তার এ দুঃসময়ে সরকারকে পাশে দাঁড়াতে এবং রাঙ্গামাটি থেকে পূর্ববর্তী কর্মস্থল লামায় নিয়ে আসারও আকুতি জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে, ফজলুল কাদের দীর্ঘ সাত বছর মামলা চালিয়ে গত বছরের নবেম্বরে চাকরি ফিরে পেলেও চলতি ফেব্রম্নয়ারি পর্যনত্ম এক টাকা বেতনও পাননি। ধার-হাওলাদ করে চলছিলেন এতদিন। তার ওপর ছেলের মর্মানত্মিক মৃতু্যতে পুরোপুরি ভেঙ্গে পড়েছেন সংসারের ভবিষ্যত নিয়ে। মহিউদ্দিনের মেধাবী ভাই-বোনদের পড়ালেখা কি করে চলবে কেউই বলতে পারেন নি।
শনিবার দুপুরে খালা নাছিমার হাতে ভাগিনা সাহাবউদ্দিন এক হাজার টাকা দিয়েছেন চাল-ডাল কিনে খাওয়ার জন্য। সাহাবউদ্দিন জানান, আর্থিক অনটনের কারণে চার দিনের ফাতেহার পরিবর্তে ১৯ ফেব্রম্নয়ারি শুক্রবার কুলখানি করার সিদ্ধানত্ম নিয়েছেন আত্মীয়স্বজনরা। অসহায় মামুন, ছগির ও ফারিয়ার পড়ালেখার খরচের জন্য দু'-একদিনের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করবেন বলেও সাহাবউদ্দিন জানান।

No comments

Powered by Blogger.