এএফপির বিশ্লেষণ- ভবিষ্যৎ গান্ধীর যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন!

কংগ্রেসের সহসভাপতি নির্বাচিত হওয়ার মাধ্যমে ভারতের রাজনীতিতে প্রভাবশালী গান্ধী পরিবারের উত্তরসূরি রাহুল গান্ধী ক্ষমতার শীর্ষে আরোহণের পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেছেন। তবে তাঁর রাজনৈতিক দক্ষতা ও নীতিনির্ধারণের সামর্থ্য নিয়ে জনমনে প্রশ্ন রয়েছে।
রাহুলকে সহসভাপতির দায়িত্ব দেওয়ায় ক্ষমতাসীন কংগ্রেসের নেতা-কর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ৪২ বছর বয়সী রাহুলকে ‘তরুণ প্রজন্মের হূৎস্পন্দন’ উল্লেখ করে অনেকেই অভিনন্দন জানিয়েছেন। ক্যামব্রিজ ও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করা অবিবাহিত তরুণ রাহুল তাঁর পারিবারিক পূর্বসূরি তিন প্রধানমন্ত্রীর পদাঙ্ক অনুসরণের ইঙ্গিত দিয়েছেন।
মন্ত্রিসভার সদস্যপদ গ্রহণের প্রস্তাব তিনি বরাবরই সবিনয়ে প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং দলে আরও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। জয়পুরে কংগ্রেসের চিন্তন শিবিরের বৈঠকে তিনি দলের জ্যেষ্ঠ সদস্যদের কাছে অঙ্গীকার করেন, ‘ভারতের জনগণের জন্য আমি সর্বোচ্চ লড়াই করব। কংগ্রেসই এখন আমার জীবন।’
নয়াদিল্লির বিভিন্ন বিপণিকেন্দ্র ও রেস্তোরাঁয় রাহুলের উপস্থিতি প্রায়ই দেখা যায়। নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি বহু বছর অনিশ্চয়তার মধ্যে কাটিয়েছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। প্রথমে তিনি লন্ডনে ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী ছিলেন। পরে ভারতে ফিরে উত্তর প্রদেশের আমেথি অঞ্চলের পারিবারিক আসন থেকে সাধারণ নির্বাচনে অংশ নিয়ে ২০০৪ সালে জয়ী হন। কংগ্রেসের তরুণ নেতাদের উজ্জীবিত করতে তাঁর একাধিক প্রয়াম বেশ প্রশংসিত হয়েছে। নিম্নবর্ণ বা দলিত সম্প্রদায়ের লোকজনের সঙ্গে রাহুলের ঘনিষ্ঠভাবে মেশা এবং দিল্লির মেট্রোরেলে ভ্রমণের দু-একটি ঘটনা ভারতীয় গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচারিত হওয়ায় তিনি একধরনের ইতিবাচক ভাবমূর্তি গড়ে তুলেছেন। তবে সাক্ষাৎকার বা প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকায় ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
২০১১ সালে ফাঁস হওয়া মার্কিন তারবার্তায় রাহুলকে ‘অন্তঃসারশূন্য’ বলে মন্তব্য করা হয়েছিল। রাহুলের রাজনৈতিক অর্জন তেমন আহামরি কিছু নয়। অর্থনৈতিক উদারীকরণ এবং পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে তাঁর ভাবনা বা নেতৃত্ব সম্পর্কে মানুষের ধারণা অস্পষ্ট। তবু কংগ্রেসের প্রধান সোনিয়া গান্ধীর পর দলের দ্বিতীয় শীর্ষ ব্যক্তি হিসেবে রাহুলের উত্থানকে ভারতের আরেক যুগের সূচনা বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।
রাজনৈতিক ভাষ্যকার এম জে আকবরের মতে, আগামী বছর অনুষ্ঠেয় সাধারণ নির্বাচনে রাহুলই কংগ্রেসের প্রচারাভিযানে নেতৃত্ব দেবেন এবং জনসমর্থন পেলে তিনিই হবেন প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য যোগ্যতম প্রার্থী।

No comments

Powered by Blogger.