মহাজোট-প্রকৃত মুক্তির পথে যাত্রা হলো জাতির

মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের রায়ে বাচ্চু রাজাকার হিসেবে পরিচিত মাওলানা আবুল কালাম আযাদকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন মহাজোট নেতারা। তাঁদের মতে, এ রায়ের মধ্য দিয়ে জাতি কলঙ্কমুক্তির পথে যাত্রা করেছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাস্তবায়ন হবে।
এ রায় সামপ্রদায়িক রাজনীতি উচ্ছেদের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। আগামী দিনগুলোতে অন্য যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধেও দ্রুততার সঙ্গে রায় ঘোষণা করা হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তাঁরা। এ ছাড়া মহাজোট নেতারা বাচ্চু রাজাকারের বিরুদ্ধে ঘোষিত রায় দ্রুত কার্যকর করার দাবি জানিয়েছেন।
গতকাল সোমবার মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের প্রথম রায় প্রকাশের পর এ সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে কালের কণ্ঠের কাছে তাৎক্ষণিকভাবে এসব প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের নেতারা।
মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেন, 'এটা ঐতিহাসিক রায়। অনেক ঘাত-প্রতিঘাতের পর দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা আজ পূরণ হতে চলেছে। ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা যে স্বাধীনতা অর্জন করেছি, সেই বীরত্বপূর্ণ ইতিহাস আজ কলঙ্কমুক্ত হতে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন পর জাতি সত্যিকার অর্থেই কলঙ্কমুক্ত হতে চলেছে।'
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, আজ সত্যিই আনন্দিত। মনে হচ্ছে জাতির প্রকৃত মুক্তির পথে আমরা যাত্রা শুরু করলাম। দীর্ঘদিন পর জাতি দায়বদ্ধতা থেকে মুক্তি পেতে চলেছে। এখন শুধু একটাই দাবি, বাকিদেরও বিচার ত্বরান্বিত করা।'
জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, এ রায় একটি যুগান্তকারী বলিষ্ঠ পদক্ষেপ। প্রমাণ হলো যে কোনো অপরাধ তামাদি হয় না। যারা স্বঘোষিত যুদ্ধাপরাধী ও পাকিস্তানের দালালি করেছে, আজ এ রায়ের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হলো, তাদের বিচার হবেই। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।
সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, 'আশা করব মানবতাবিরোধী বাকি অপরাধীদের বিচারও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় হবে।'
রায় ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, বাচ্চু রাজাকারের বিরুদ্ধে বিচারের রায়ে ঘোষিত মৃত্যুদণ্ড দ্রুত কার্যকর করা হোক। গোলাম আযম, নিজামীর মতো পালের গোদাসহ সব যুদ্ধাপরাধীর বিচার ও দণ্ড দেওয়ার কাজও দ্রুত শেষ করা হবে।
সেলিম আরো বলেন, বাচ্চু রাজাকারকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হওয়ার ঘটনা কেবল বেদনাদায়কই নয়, তা যুদ্ধাপরাধীদের নানাভাবে রক্ষা করার পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের নিদর্শন বহন করে। কারা এর সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল তা খুঁজে বের করে দোষী ব্যক্তিদেরও বিচার করা প্রয়োজন।
কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রের যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান ও ডা. অসিত বরণ রায় বাচ্চু রাজাকারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তাঁরা দ্রুত এই রায় কার্যকর করা এবং বাকি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শেষ করা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

No comments

Powered by Blogger.