ক্যাপিটল হিলে ওবামার অভিষেক ভাষণ- সাম্য ও ঐক্যের ডাক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা মার্কিনদের প্রতি সাম্য ও ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে রাজনৈতিক ‘স্বৈরাচার’ যেন দেশের প্রত্যাশিত পরিবর্তন ও উন্নয়নচেষ্টাকে ব্যর্থ করে না দেয়, সে ব্যাপারে সতর্ক করে দেন তিনি। দেশবাসীকে তিনি রাজনৈতিক হানাহানি ও তিক্ততা প্রত্যাখ্যানেরও আহ্বান জানান।
প্রেসিডেন্ট ওবামা গতকাল সোমবার ওয়াশিংটনের ন্যাশনাল মলের (ক্যাপিটল হিল) শ্বেতগম্বুজ ভবনের সামনে প্রায় সাত লাখ মানুষের উপস্থিতিতে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে আনুষ্ঠানিক শপথ নেন। এর মধ্য দিয়ে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্টের দায়িত্বও গ্রহণ করেন। শপথ নেওয়ার পর প্রচলিত রীতি অনুযায়ী তিনি জনসমক্ষে অভিষেক ভাষণ দেন। এ ভাষণেই তিনি ওই আহ্বান জানান।
আবারও চার বছরের জন্য হোয়াইট হাউসের দায়িত্ব নিয়ে ওবামা তাঁর প্রথম ভাষণে দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থার উত্তরণে রূপরেখার পাশাপাশি নারী, সমকামী ও অভিবাসীদের অধিকার নিয়ে কথা বলেছেন।
বর্তমান তিক্ততাপূর্ণ রাজনীতির বিভেদ ও অকার্যকারিতা অবসান এবং যুক্তরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ঐতিহাসিক সত্যকে পুনরুজ্জীবিত করতে ওবামা ‘উই দ্য পিপল্’ (আমরা ওই জাতি) শব্দগুচ্ছ ভাষণে বারবার ব্যবহার করেন। রাজনীতি, অর্থনীতির মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে অচলাবস্থা কাটাতে জাতীয় ঐক্যের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এখন সিদ্ধান্ত আমাদের এবং এই সিদ্ধান্ত নিতে আমরা কালক্ষেপণ করতে পারি না।’
ওবামা বলেন, ‘নীতির ব্যাপারে স্বেচ্ছাচারিতার মতো ভুল আমাদের সঙ্গে মানায় না। এ ছাড়া, জীবন ও ভবিষ্যতের ব্যাপারে আশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গির বিপরীত কোনো কিছুও গ্রহণ করা আমাদের কাম্য নয়। আমাদের কাজের অসম্পূর্ণতার বিষয়টি বিবেচনায় রেখেই নিপুণভাবে কাজ চালিয়ে যেতে হবে।’
ওবামা আরও বলেন, ‘ক্ষুধাপীড়িত যেসব অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্রকে তাঁদের ভাগ্য পরিবর্তনের স্থান মনে করেন, আশা নিয়ে এখানে আসেন, তাঁদের সুন্দর পথের সন্ধান না দেওয়া পর্যন্ত আমাদের যাত্রা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।’
বিশ্লেষকেরা বলেন, ওবামার এ ভাষণ ছিল স্পষ্টতই উদার। তিনি সমাজের দুর্বল, দরিদ্র ও স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত মানুষের রক্ষায় এগিয়ে আসার ডাক দেন। সমকামী, আগ্নেয়াস্ত্রের সহিংসতার শিকার শিশুদের অধিকার রক্ষায়ও এগিয়ে আসার আবেদন ছিল তাঁর এ ভাষণে।
রোববার ওবামা হোয়াইট হাউসে সাংবিধানিক নিয়ম রক্ষার শপথ নেন। ৫১ বছর বয়সী ওবামাকে প্রথম মেয়াদে দায়িত্ব পালনকালে চরম অর্থনৈতিক মন্দা মোকাবিলা করতে হয়েছে। এ সময় তিনি ঐতিহাসিক স্বাস্থ্যসেবা আইন, যুদ্ধক্ষেত্র থেকে সেনা প্রত্যাহারসহ গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেন। এসব বিষয় নিয়ে তাঁকে বিরোধী রিপাবলিকান পার্টির তীব্র সমালোচনা মোকাবিলা করতে হয়। এএফপি ও রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.