বাংলাদেশের গার্মেন্টস কাঁচামালের উৎস দেশ হতে চায় ভারত

ভারত বাংলাদেশকে ইউরোপে গার্মেন্টস পণ্য রফতানির কাঁচামালের উৎস দেশ হিসেবে তালিকাভুক্তির অনুরোধ জানিয়েছে। যাতে বাংলাদেশী তৈরি পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তারা ভারত থেকে সুতা এনে অব্যাহতভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের শুল্কমুক্ত সুবিধা পেতে পারে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী আনন্দ শর্মা বাংলাদেশের সফররত বাণিজ্যমন্ত্রী গোলাম মুহম্মদ কাদেরের কাছে এ অনুরোধ জানিয়েছেন। গত মঙ্গলবার আগ্রায় দুই দেশের বাণিজ্যমন্ত্রীর মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে আনন্দ শর্মা বিষয়টি উত্থাপন করে বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নে তৈরি পোশাক রফতানির ক্ষেত্রে ভারত বাংলাদেশী গার্মেন্টস রফতানিকারকদের বস্ত্রের সরবরাহকারী হিসাবে তালিকাভুক্ত হতে পারে। এতে বাংলাদেশী গার্মেন্টস মালিকদের জন্য প্রয়োজনীয় সুতা ও অন্যান্য কাঁচামাল প্রাপ্তির নিশ্চয়তা থাকবে।
ভারতীয় বিজনেস লাইন মিডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, তৈরি পোশাক ও অন্যান্য গার্মেন্টস পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশকে কাঁচামালের উৎস দেশের শর্ত সাপেক্ষে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিতে চাচ্ছে। এই সুবিধা পেতে হলে রফতানিকারক দেশের সরকারকে কাঁচামালের উৎস দেশের নাম ঘোষণা করতে হবে। ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা মনে করছেন, একবার ভারতের নাম উৎস দেশ হিসেবে ঘোষণা করা হলে বাংলাদেশী রফতানিকারকরা ইউরোপে গার্মেন্টস পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে ভারত থেকে কাঁচামাল আমদানিতে উৎসাহিত হবে। এতে বাংলাদেশী রফতানিকারকদের শুল্কমুক্ত সুবিধা পেতে কোন সমস্যা হবে না।
জানা যায়, বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রীর এ প্রস্তাব বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন। জিএম কাদের ভারতের আগ্রায় অনুষ্ঠিত সিআইআই আগ্রা সামিটে যোগ দিতে ভারতে যান। তবে ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে জিএম কাদের বাংলাদেশী মোটরসাইকেল ও ইলেকট্রনিক পণ্য ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্ত দিয়ে রফতানির অনুমতি প্রদানের অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে উন্নতমানের মোটরসাইকেল ও টেলিভিশন তৈরি হচ্ছে। কিন্তু এ সকল পণ্য শুধু দুটি সীমান্ত দিয়ে ভারতে রফতানির অনুমতি রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য লাভজনক নয়। এ সকল পণ্য ভারতে রফতানির জন্য উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্ত উন্মুক্ত করা উচিত।’
দ্বিপাক্ষিক বৈঠক দ্ইু দেশের বাণিজ্যমন্ত্রী দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্য বৃদ্ধি নিয়েও আলোচনা করেন। বাংলাদেশ ভারতের কাছে দুই দেশের মধ্যকার বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি দূরীকরণের পথ নির্ধারণের অনুরোধ জানান। বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি বিরাজ করছে।
গত ২০১১-১২ সালে ভারত বাংলাদেশে রফতানি করেছে ৩৭০ কোটি ডলারের পণ্য। তার বিপরীতে বাংলাদেশ রফতানি করেছে মাত্র ৫৮ কোটি ৪০ লাখ ডলারের পণ্য।

No comments

Powered by Blogger.