স্মরণসভায় বক্তারা- নুরুল ইসলাম ছিলেন অনুকরণীয় চিকিৎসক

প্রয়াত জাতীয় অধ্যাপক নুরুল ইসলামের দূরদর্শিতার ফলে এ দেশের মানুষ উন্নত চিকিৎসাসেবা পাচ্ছে। বিজ্ঞানমনস্ক চিকিৎসক ও দক্ষ প্রশাসক নুরুল ইসলাম অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত তৈরি করে গেছেন। তাঁর কাজ জাতিকে ঋণী করেছে।
গতকাল বুধবার দেশের বিশিষ্ট চিকিৎসকেরা এক শোকসভায় নুরুল ইসলাম সম্পর্কে এসব কথা বলেন। চিকিৎসকদের কেউ তাঁর সহকর্মী ছিলেন, অনেকেই ছিলেন ছাত্র। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) কর্তৃপক্ষ এই বিশিষ্ট চিকিৎসকের স্মরণে ওই শোকসভার আয়োজন করে।
জাতীয় অধ্যাপক এম আর খান পিজি হাসপাতালে (বর্তমান বিএসএমএমইউ) নুরুল ইসলামের সহকর্মী ছিলেন। সভায় এম আর খান বলেন, নুরুল ইসলাম দৃঢ় চরিত্রের মানুষ ছিলেন। একবার স্নাতকোত্তর চিকিৎসাশিক্ষার ছাত্ররা পরীক্ষা পেছানোর দাবি করেন। নুরুল ইসলাম ছাত্রদের বলেছিলেন, ‘আপনারা পরিচালক পরিবর্তন করতে পারেন, কিন্তু পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তন হবে না।’ সে সময় নুরুল ইসলাম পিজির পরিচালক ছিলেন।
আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা বলেন, এ দেশে স্নাতকোত্তর চিকিৎসাশিক্ষার ভিত্তি তৈরি করেন নুরুল ইসলাম। তাঁর প্রচেষ্টায় তৎকালীন পিজি হাসপাতালের চিকিৎসাসেবার মান শীর্ষ পর্যায়ে পৌঁছায় এবং দেশে-বিদেশে সুনাম অর্জন করে। তাঁর ছাত্ররা বলেন, নুরুল ইসলামের মতো শিক্ষকের শুধু প্রশংসাই করা চলে, আর একজন নুরুল ইসলাম হওয়া সম্ভব নয়।
বিএসএমএমইউর সহ-উপাচার্য মোহাম্মদ সহিদুল্লার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রাণ গোপাল দত্ত। অনুষ্ঠানের শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সাইদুর রহমান প্রয়াত নুরুল ইসলামের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ও ঘটনা সংক্ষেপে উপস্থাপন করেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশে মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য মাহমুদ হাসান বলেন, অধ্যাপক নুরুল ইসলাম পিজি হাসপাতালকে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। তিনি বলেন, ‘জীবদ্দশায় আমরা তাঁকে কিছুই দিতে পারিনি। তাঁকে মূল্যায়ন করতে পারিনি। প্রতিষ্ঠান থেকে তাঁর বিদায়ের বেলায় তাঁর কক্ষও ভাঙচুর করেছি আমরা কেউ কেউ। আমি সবার পক্ষ থেকে তাঁর কাছে ক্ষমা চাইছি।’

No comments

Powered by Blogger.