জামায়াত মিছিল করলে আ. লীগ নেতাদের জবাব দিতে হবে

জামায়াত-শিবিরের নৈরাজ্য ঠেকাতে ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে নামার ঘোষণা দিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। একই সঙ্গে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আটক নেতাদের মুক্তির দাবিতে জামায়াতের আজকের হরতালে হার্ডলাইনে থাকার ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ।
যেসব ওয়ার্ড বা থানা থেকে জামায়াত-শিবিরের মিছিল বের হবে, সেসব এলাকার নেতাদের এ জন্য জবাবদিহি করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন মহানগর নেতারা।
গতকাল বুধবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় নেতারা এ ঘোষণা ও নির্দেশ দেন।
সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর বলেন, 'সাধারণ মানুষ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকে খেয়াল রেখে পরজীবী জামায়াত-শিবিরকে সর্বাত্মকভাবে মোকাবিলা করতে হবে। এদের প্রতিরোধ করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। রাষ্ট্রেরও নৈতিক দায়িত্ব।'
মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, 'যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শেষ হলে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির কবর রচনা হবে। জামায়াতের দোসর বিএনপির রাজনীতি দুর্বল হয়ে যাবে; তাদের রাজনীতি করার কিছু থাকবে না। এ জন্যই বিএনপি যুদ্ধাপরাধী জামায়াতের সঙ্গে মাঠে নেমেছে। অস্তিত্ব রক্ষায় মরণ কামড় দিচ্ছে। ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে।'
চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করা যাবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় নেতা-কর্মীদের জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে।
খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে হানিফ বলেন, 'এখনো সময় আছে, যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গ ছাড়ুন। ওদের বিচারে সরকারকে সহায়তা করুন।'
ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের নির্দেশনা দিয়ে বলেন, 'ওরা (জামায়াত-শিবির) বের হয় কোত্থেকে? খবর নেন। যে ওয়ার্ড থেকে জামায়াতের মিছিল বের হবে, সে ওয়ার্ডকে জবাবদিহি করতে হবে। তারা তো আর আসমান থেকে পড়ে না। নিশ্চয় কোনো না কোনো ওয়ার্ড, পাড়া বা মহল্লা থেকে আসে। শুধু দায়িত্ব নিয়ে বসে থাকলে হবে না। এদের খুঁজে বের করতে হবে।'
মহানগরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, 'দ্রুত শীর্ষস্থানীয় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শেষ করা হবে। এ জন্যই জামায়াত-শিবির দিনদিন আরো হিংস্র হয়ে উঠবে। এদের বিরুদ্ধে এখনই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। আর সুযোগ দেওয়া যাবে না।'
মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজ বলেন, 'প্রতিটি এলাকার অলিতে-গলিতে খবর নিন, জামায়াতের আস্তানা কোথায়। কারা তাদের অর্থ সরবরাহ করে খুঁজে বের করুন।' তিনি বলেন, 'ওরা কিছু করতে পারলে আমাদের কাউকেই ছাড়বে না। তাই এখনই হামলা করে আস্তানা গুঁড়িয়ে দিয়ে তাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে সোপর্দ করতে হবে।'
আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা সফল করতে এবং জামায়াত-শিবিরের নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে বর্ধিত সভার আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজ।

No comments

Powered by Blogger.