আ’লীগের কঠোর নির্দেশ- জামায়াত-শিবিরের মিছিল বের হলে স্থানীয় কমিটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা

মানবতাবিরোধী অপরাধে আটক নেতাদের মুক্তির দাবিতে জামায়াতের ডাকা আজকের হরতালে হার্ডলাইনে থাকবে আওয়ামী লীগ।
জামায়াত-শিবির ঠেকাতে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে নেতাকর্মীদের। যেসব ওয়ার্ড বা থানা থেকে জামায়াত-শিবিরের মিছিল বের হবে সেসব এলাকার আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন দলের কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতারা।

গতকাল ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় কেন্দ্রীয় ও নগর আওয়ামী লীগের নেতারা এ ঘোষণা দেন। মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহিউদ্দীন খান আলমগীর। বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম প্রমুখ।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহিউদ্দীন খান আলমগীর বলেন, সাধারণ মানুষ যাতে ধরা না পড়ে সে দিকে খেয়াল রেখে পরজীবী জামায়াত-শিবিরকে সর্বাত্মক মোকাবেলা করতে হবে। জামায়াত-শিবিরকে নিয়ন্ত্রণ করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব, রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব।

মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শেষ হলে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির কবর রচনা হবে। আর জামায়াতের দোসর বিএনপির রাজনীতিও দুর্বল হয়ে যাবে। এ জন্যই বিএনপি যুদ্ধাপরাধী জামায়াতের সাথে মাঠে নেমেছে। নিজেদের অস্তিত্ব রায় মরণ কামড় দিচ্ছে। ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে। চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করা যাবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় নেতাকর্মীদের জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিয়ে বলেন, ওরা (জামায়াত-শিবির) বের হয় কোত্থেকে খবর নেন। আর না হলে যে ওয়ার্ড থেকে জামায়াতের মিছিল বের হবে সে ওয়ার্ডকে জবাবদিহি করতে হবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কারণ তারা তো আর আসমান থেকে পড়ে না। নিশ্চয়ই কোনো না কোনো ওয়ার্ড-পাড়া-মহল্লা থেকে আসে। তাই শুধু দায়িত্ব নিয়ে বসে থাকলে হবে না তাদের খুঁজে  বের করতে হবে।

কামরুল ইসলাম বলেন, দ্রুত শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শেষ করা হবে। এ জন্যই জামায়াত-শিবির আরো হিংস্র হয়ে উঠবে। তাদের বিরুদ্ধে এখনই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। আর সুযোগ দেয়া যাবে না।

এম এ আজিজ দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, প্রতিটি এলাকার অলিতে-গলিতে খবর নেন জামায়াতের আস্তানা কোথায়। কারা তাদের অর্থ সরবরাহ করে তাদের খুঁজে বের করুন। কারণ ওরা কিছু করতে পারলে আমাদের কাউকেই ছাড়বে না। তাই এখনই হামলা করে তাদের আস্তানা গুঁড়িয়ে দিয়ে আইনশৃঙ্খলা রাকারী বাহিনীর হাতে সোপর্দ করতে হবে।

শিবির-ছাত্রদলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে : হাছান মাহমুদ

নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে পরিবেশ ও বনমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, জামায়াত-শিবির পরিকল্পিতভাবে সারা দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে। ছাত্রদল তাদের সাথে মিলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। কিন্তু ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তাদের প্রতিহত করছে। এভাবে জনগণকে সাথে নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ পাড়া-মহল্লায় তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন।

গতকাল বুধবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপি-জামায়াত-শিবির নৈরাজ্যের প্রতিবাদে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এ কথা বলেন। ছাত্রলীগ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দণি এ প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে।

ঢাকা মহানগর দণি ছাত্রলীগের সভাপতি আনিসুর রহমান আনিসের সভাপতিত্বে সভায় আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য আব্দুস সোবাহান গোলাপ, আওয়ামী লীগের উপকমিটির সহসম্পাদক গোলাম সারোয়ার কবির, ছাত্রলীগের সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম, রিয়াজ উদ্দীন রিয়াজ, দফতর সম্পাদক শেখ রাসেল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

No comments

Powered by Blogger.