ধোঁয়াশায় ঘিরে আছে বেইজিং-ঘর থেকে বের না হওয়ার আহবান

চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে তীব্র বায়ুদূষণের ফলে সৃষ্ট ধোঁয়াশা গতকাল বুধবার তৃতীয় দিনের মতো অব্যাহত ছিল। নগর কর্তৃপক্ষ জরুরি পদক্ষেপ হিসেবে বেশ কিছু কলকারখানা বন্ধ রাখাসহ রাস্তায় সরকারি যানবাহন অন্তত ৩০ শতাংশ কমানোর নির্দেশ দিয়েছে।
একই সঙ্গে লোকজনকে বাড়িঘর থেকে বের না হওয়ার আহবান জানিয়েছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত প্রচারমাধ্যম বায়ু দূষণ ও ধোঁয়াশার খবরাখবর নিয়মিতভাবে প্রচার করছে। চায়না সেন্ট্রাল টেলিভিশন (সিসিটিভি) গতকাল জানায়, মধ্য বেইজিংয়ে দৃষ্টিসীমা ৩০০ মিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে। দূষণের হাত থেকে বাঁচতে লোকজন গ্যাসমাস্ক (নাকেমুখে ঢাকনা) পরে ঘরের বাইরে যাচ্ছে। এই দিন বিমানের ২৯টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের পর ছেড়েছে সাতটি ফ্লাইট। সিসিটিভিতে দেখা যায়, দক্ষিণ বেইজিং থেকে এক হাজার কিলোমিটার দূরে পূর্বাঞ্চলীয় জিয়াংসু প্রদেশ ধোঁয়াশায় ছেয়ে গেছে।
বেইজিং নগর কর্তৃপক্ষ জানায়, গত মঙ্গলবারই ১০৩টি কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। রাস্তায় সরকারি যানবাহন অন্তত ৩০ শতাংশ কমানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শিশু ও বয়স্কসহ ধোঁয়াশার প্রতি সংবেদনশীল লোকদের ঘরের ভেতর থাকার আহবান জানানো হয়েছে।
বায়ু দূষণের ক্ষুদ্রতম কনার নাম পিএম ২.৫। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার (ডাবি্লউএইচও) মতে, প্রতি ঘনমিটার বাতাসে পিএম ২.৫-এর উপস্থিতি ২৫ মাইক্রোগ্রামের (এক মিলিগ্রামের এক হাজার ভাগের এক ভাগ) বেশি থাকা উচিত নয়। এর পরিমাণ ১০০ মাইক্রোগ্রামের বেশি হলে সেই বাতাস অস্বাস্থ্যকর। আর যদি ৩০০ মাইক্রোগ্রামের বেশি হয়, তবে তা ঝুঁকিপূর্ণ। এ অবস্থায় শিশু ও বয়স্ক লোকদের ঘরের বাইরে বের হতে নিষেধ করা হয়। গতকাল বেইজিংয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস পরিচালিত পরীক্ষায় দেখা গেছে, দুপুর ১টায় বাতাসে পিএম ২.৫-এর উপস্থিতি ছিল ৩৩৬ মাইক্রোগ্রাম। তবে নগর পরিবেশ পর্যবেক্ষণ সেন্টারের পরীক্ষায় এই সংখ্যা ২৯২ বলা হয়েছে। এ হিসাবেও রাজধানীর বাতাস 'মারাত্মক দূষিত' হওয়ার সাক্ষ্য মিলেছে। দ্রুত নগরায়ন ও ব্যাপক অর্থনৈতিক প্রবৃৃদ্ধিকে চীনে দূষণ সমস্যার প্রধান কারণ বলে দায়ী করা হয়।
সূত্র : এএফপি, খালিজ টাইমস।

No comments

Powered by Blogger.