যেখানেই জামায়াত ॥ শিবির সেখানেই গণপ্রতিরোধ ॥ হার্ডলাইনে আওয়ামী লীগ

জামায়াত-শিবিরের ধ্বংসাত্মক তৎপরতা প্রতিরোধে হার্ডলাইনে থাকার ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। রাজপথে যেখানেই জামায়াত-শিবিরকে পাওয়া যাবে, সেখানেই জনগণকে সঙ্গে নিয়ে গণপ্রতিরোধ করার ঘোষণা দিয়ে দলটির নেতারা বলেছেন, যেখানে জামায়াত-শিবির সেখানেই গণপ্রতিরোধ।
অনেক সহ্য করেছি আর সহ্য করা হবে না। স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট জামায়াত-শিবির নির্মূল করে বাংলার মাটিকে আরেকবার মুক্ত করা হবে।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর বলেন, জামায়াত-শিবিরকে প্রতিরোধ করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। রাষ্ট্রেরও নৈতিক দায়িত্ব। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশে তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ যাতে ধরা না পড়ে সেদিকে খেয়াল রেখে পরজীবী জামায়াত-শিবিরকে সর্বাত্মক মোকাবেলা করতে হবে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর হলে জামায়াতের রাজনীতির কবর হবে। একই সঙ্গে বিএনপির রাজনীতি শূন্য হয়ে যাবে। এ জন্যই জামায়াত-বিএনপি মরিয়া হয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচালের জন্য সারাদেশে নাশকতামূলক কর্মকা- চালাচ্ছে। নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় মরণকামড় দিচ্ছে।
বুধবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের বর্ধিতসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তাঁরা এসব কথা বলেন। আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী এবং প্রধানমনন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভাকে সফল এবং জামায়াত-শিবিরের নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে এই বর্ধিতসভার আয়োজন করা হয়।
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে জামায়াতের সঙ্গ ছাড়ার আহ্বান জানিয়ে মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, যুদ্ধাপরাধী জামায়াতের সঙ্গ ছাড়–ন। বিচারকাজে সরকারকে সহায়তা করুন। আপনার বডি ল্যাঙ্গুয়েজ দেখে মনে হয় জামায়াত-শিবিরের তা-বে আপনি খুশি। কিন্তু দু’ দু’বারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জনগণের জানমালের রক্ষার দায়িত্বও আপনার আছে। যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষ নিয়ে আপনি নিজেও যুদ্ধাপরাধীদের কাতারে শামিল হয়েছেন। তিনি বলেন, জামায়াত-শিবির যতই চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলুক না কেন, আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকতে তাদের কোন মনোবাসনা পূর্ণ হবে না। চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করা যাবে না- উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় নেতাকর্মীদের জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে।
ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এমএ আজিজের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, আইন প্রতিমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম এমপি, সহ-সভাপতি ফয়েজউদ্দীন মিয়া ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন।
এমএ আজিজ দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, প্রতিটি এলাকার অলিতে গলিতে খবর নিন জামায়াতের আস্তানা কোথায়। কারা তাদের অর্থ সরবরাহ করে তাদেরও খুঁজে বের করুন। আস্তানা গুঁড়িয়ে দিয়ে ওদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে সোপর্দ করতে হবে।
মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের প্রতি নির্দেশ দিয়ে বলেন, ওরা (জামায়াত-শিবির) কোত্থেকে বের হয় সে খবর নিন। না হলে যে ওয়ার্ড থেকে জামায়াতের মিছিল বের হবে সেই ওয়ার্ডের নেতাদের জবাবদিহি করতে হবে। তারা তো আর আসমান থেকে পড়ে না। নিশ্চয়ই কোন না কোন ওয়ার্ড-পাড়া-মহল্লা থেকে আসে। শুধু দায়িত্ব নিয়ে বসে থাকলে হবে না এদের খুঁজে বের করতে হবে।
ফয়েজউদ্দীন মিয়া বলেন, জামায়াত-শিবিরের আস্তানা ঘেরাও করে তাদের গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করতে হবে। বাংলার মাটিতে তাদের কবর দেবই দেব।
আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, খুব দ্রুতই শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শেষ করা হবে। এজন্যই জামায়াত-শিবির যত দিন যাবে ততই হিংস্র হয়ে উঠবে। এদের বিরুদ্ধে এখনই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। আর সুযোগ দেয়া যাবে না।

No comments

Powered by Blogger.