জামায়াতী সন্ত্রাস- স্বাধীনতাবিরোধী জঙ্গীদের এ হামলার ধরনটি দেখে স্পষ্টভাবে বোঝা গেছে, হামলাটি পূর্বপরিকল্পিত

জামায়াতের জঙ্গী হামলার ধরন ও ব্যাপকতা বিগত চার বছরের সব তা-বকে হার মানিয়েছে। সোমবার জামায়াত-শিবিরের জঙ্গীরা প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহর, উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম ও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের প্রটেকশন গাড়িসহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কিছু গাড়িবহরে হামলা চালিয়েছে।
তাদের হামলায় নিরাপত্তা দায়িত্বে নিয়োজিত এক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পুলিশ, পথচারী, সাধারণ মানুষ যাকেই তারা সামনে পেয়েছে তার ওপরই হামলা চালিয়েছে। জামায়াতী জঙ্গীরা প্রায় শতাধিক যান ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। জানা গেছে, ঐদিন সকাল দশটায় জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, দিনাজপুর, সাতক্ষীরা, জয়পুরহাট, ফরিদপুর, বগুড়া, সুনামগঞ্জসহ সারাদেশে বেশ কয়েকটি স্থানে হামলা চালায়। প্রায় একই সময় পরিচালিত স্বাধীনতাবিরোধী জঙ্গীদের এ হামলার ধরনটি দেখে স্পষ্টভাবে বোঝা গেছে, হামলাটি পূর্বপরিকল্পিত। সম্ভবত কয়েকদিনে ধরে তারা এই হামলার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে। হামলাকালে তারা অর্ধশতাধিক বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। মাত্র আধঘণ্টার এই ঝটিকা হামলায় দশজন পুলিশসহ প্রায় এক শ’ ব্যক্তি জখম হয়েছেন।
জামায়াতী জঙ্গীদের এ হামলার ধরনটি সবাইকে সুস্পষ্টভাবে মুক্তিযুদ্ধের সেই নয় মাসের ভয়াবহতার কথা মনে করিয়ে দিয়েছে, যখন পাকিস্তানী হানাদারদের এই সহযোগীরা সারাদেশে হত্যা ও ধ্বংসের তা-ব চালিয়েছিল। নারী, শিশু, বৃদ্ধ কেউই সেদিন তাদের হামলা থেকে রক্ষা পায়নি। সোমবার জামায়াত-শিবিরের এই ভয়াবহ হামলা দেখে সবারই মনে হয়েছে, স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে স্বাধীনতার শত্রুদের এই হামলা আর কতকাল? আর কতকাল তাদের কাছে এদেশের মানুষ জিম্মি থাকবে? গত প্রায় দু’বছর ধরে এরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে হামলার অন্যতম প্রধান লক্ষ্যে পরিণত করেছে। পুলিশ জনগণের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষা করে ও সমাজবিরোধী সন্ত্রাসীদের হামলা থেকে তাদের বাঁচায়। জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসীরা পুলিশ বাহিনীর ওপর হামলার মাধ্যমে যেভাবে রাষ্ট্রদ্রোহিতামূলক কাজ করছে, তাতে মনে হয় প্রচলিত আইন এরা মানে না। এরা সরকার ও জনগণের সম্পত্তি যেভাবে ধ্বংস করে এদেশে বহালতবিয়তে অবস্থান করছে তাতে স্বভাবতই মনে প্রশ্ন জাগে, এই চক্রের প্রশ্রয়দাতা কারা?
দেশ এক ভয়াবহ হুমকির মুখে। দেশপ্রেমিক জনগণকে সঙ্গে নিয়ে জামায়াতী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া অতিদ্রুত সম্পন্নের উদ্যোগ নেয়া দরকার। যুদ্ধাপরাধীদের রায় কার্যকরের মাধ্যমে দেশ যেমন দায়মুক্ত হবে; তেমনই স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতের অপরাজনীতি বন্ধ হবে।

No comments

Powered by Blogger.