তবে খসড়া সংবিধান নিয়ে গণভোট নির্ধারিত তারিখেই- নতি স্বীকার, ডিক্রি বাতিল করলেন মুরসি

মিসরের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি নতি স্বীকার করলেন। তিনি তাঁর ক্ষমতা বাড়িয়ে জারি করা ডিক্রিটি চাপের মুখে অবশেষে বাতিল করেছেন।
ওই ডিক্রি নিয়ে দেশটিতে সহিংস বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। তবে খসড়া সংবিধানের ওপর ১৫ ডিসেম্বরের গণভোটের তারিখ অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
দেশটির কর্মকর্তারা এ খবর দিয়েছেন।
গত শনিবার রাতে মিসরের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বৈঠক শেষে মুরসির ওই ডিক্রি বাতিলের ঘোষণা দেওয়া হয়। ওই বৈঠককে ‘জাতীয় সংলাপ’ আখ্যা দেওয়া হলেও প্রেসিডেন্ট মুরসির প্রধান বিরোধী পক্ষগুলো তা বর্জন করে। এতে করে এই ঘোষণা চলতি বিক্ষোভে অংশ নেওয়া মুরসিবিরোধীদের মধ্যে কতটা গ্রহণযোগ্য হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। এরই মধ্যে একটি পক্ষ মুরসির সর্বশেষ এই পদক্ষেপকে ‘প্রতারণার ধারাবাহিকতা’ হিসেবে বর্ণনা করেছে। মুরসিবিরোধীরা ডিক্রি ও গণভোট দুটোই বাতিল করার দাবি জানিয়েছে। মুরসি স্বৈরশাসকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। যদিও মুরসির দাবি, তিনি যা করছেন, এর সবই বিপ্লবকে রক্ষা করার জন্যই।
শনিবার দীর্ঘসময় সংলাপের পর মধ্যরাতে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ সময় সংলাপের মুখপাত্র মোহাম্মদ সেলিম আল-আবা জানান, প্রেসিডেন্ট মুরসি নতুন একটি ডিক্রি জারি করেছেন। এই ডিক্রির প্রথম অনুচ্ছেদে গত ২২ নভেম্বর জারি করা ডিক্রি বাতিলের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, ১৫ নভেম্বর খসড়া সংবিধানের ওপর গণভোট স্থগিত করা নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। তবে এ ধরনের পদক্ষেপের বিষয়ে আইনি বাধা রয়েছে। তাই গণভোট নির্ধারিত দিনেই অনুষ্ঠিত হবে।
মুরসির সর্বশেষ এই পদক্ষেপ বিরোধীদের সঙ্গে আপস করার প্রথম বড় সংকেত হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে এর পরও এটা চলতি সংকটের ইতি টানতে পারবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে। আগের ডিক্রিতে মুরসি বিপ্লব বা জাতির জন্য হুমকি মোকাবিলায় তাঁর ক্ষমতা সম্প্রসারণ করেন। এ ছাড়া গত ৩০ জুন দেশের ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে এ পর্যন্ত নেওয়া তাঁর সব সিদ্ধান্তকে আইনি চ্যালেঞ্জের ওপরে রাখেন। নতুন ডিক্রিতে এ রকম কয়েকটি অনুচ্ছেদ বাদ দেওয়া হলেও ‘সাংবিধানিক ঘোষণা’ ও এই ডিক্রির ঘোষণাকে বিচার বিভাগের পর্যালোচনার আওতার বাইরে রাখা হয়েছে।
মুরসিবিরোধীরা শনিবারের সংলাপ বর্জনের পাশাপাশি এরই মধ্যে আবার রাস্তায় নামার ঘোষণা দিয়েছে।
মুরসির প্রধান বিরোধী পক্ষ ন্যাশনাল সালভেশন ফ্রন্ট জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করবে। তবে সংগঠনটির মুখপাত্র হুসেইন আবদেল গনি বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত ধারণা হচ্ছে, এটা একটা সীমিত ও অপর্যাপ্ত পদক্ষেপ। আমরা বারবার বলেছি যে গণভোট পিছিয়ে দেওয়াই আমাদের সবচেয়ে বড় দাবি।’ আরেকটি গোষ্ঠী এপ্রিল ৬ ইয়ুথ মুভমেন্ট বলেছে, এই ঘোষণা জনগণকে বোকা বানানোর জন্য একটি রাজনৈতিক কৌশল। তারা গণভোট থামাতে আরও বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে। রয়টার্স ও বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.