দিল্লিতে চলন্ত বাসে গণধর্ষণ-জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে : সোনিয়া গান্ধী

ভারতের ক্ষমতাসীন কংগ্রেস পার্টির প্রধান সোনিয়া গান্ধী চলন্ত বাসে গণধর্ষণের শিকার কলেজছাত্রীকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন। তিনি জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল কুমার সিন্দে এবং রাজধানী নয়াদিল্লির মুখ্যমন্ত্রী শিলা দিক্ষিতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
গত রবিবার রাতের ওই ঘটনার পর ধর্ষিতার শারীরিক অবস্থা এখনো আশঙ্কাজনক। পুলিশ এ পর্যন্ত ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে বাসের চালকসহ পাঁচজনকে আটক করেছে। এদের মধ্যে তিনজন ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকারও করেছে।
গণধর্ষণের প্রতিবাদে ভারতজুড়ে তীব্র বিক্ষোভ চলছে। গতকাল দিল্লিতে এ ধরনের একটি বিক্ষোভ দমনে পুলিশ জলকামান ব্যবহার করতে বাধ্য হয়। আইন প্রণেতা থেকে শুরু করে চলচ্চিত্র তারকাসহ সর্বস্তরের মানুষ দোষীদের ফাঁসির দাবি জানিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে গত মঙ্গলবার পার্লামেন্টেও ব্যাপক শোরগোল হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, রবিবার রাতে মজা করতেই বাস নিয়ে বের হয় চালক বাম সিংসহ ছয়জনের ওই দল। বাসটি স্কুলের শিশুদের আনা-নেওয়ার কাজ করে। তাদের ওই রাস্তায় চলার পারমিটও ছিল না। এই ছয়জনের হাঁকডাকেই বাসে ওঠেন প্যারামেডিক্যাল কলেজের ২৩ বছর বয়সী ওই ছাত্রী ও তাঁর বন্ধু। এরপরই চলন্ত বাসের ভেতরে ওই নৃশংসতা চালায় ছয়জনের ওই দল। এ সময় ছাত্রীর বন্ধু তাঁকে বাঁচাতে গেলে তাঁকেও বেদম মারধর করা হয়। পরে রাস্তায়ই তাঁদের ছুড়ে ফেলে বাসটি চলে যায়। ঘটনার এক দিন পর পুলিশ বাসের চালককে আটক করে। তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। গতকাল আরো তিনজনকে চার দিনে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। তারা এ ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। আরেকজন গতকালই ধরা পড়ে। তাকে আদালতে তোলা হয়নি। বাকি একজন এখনো পলাতক।
মেয়েটিকে দিল্লির সাফদারজং হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ ইউনিটে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে। ব্যথা কমাতে তাঁকে মরফিন ইনজেকশন দেওয়া হলেও অচেতন করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
গত মঙ্গলবার হাসপাতালে মেয়েটিকে দেখতে যান সোনিয়া। এর পরই সিন্দে ও দিক্ষিতকে লেখা আলাদা দুই বার্তায় সোনিয়া এ ঘটনাকে 'নিরাপত্তার দায়িত্বপ্রাপ্তদের জন্য চরম লজ্জাজনক' বলে মন্তব্য করেন। একে 'দানবিক ঘটনা' হিসেবে অভিহিত করে তিনি বলেন, সরকারের জন্য এর প্রতিকারই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হওয়া উচিত। সূত্র : বিবিসি, হিন্দুস্তান টাইমস, এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.