গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ- একুশ বছরেও সম্মেলন হয়নি

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হচ্ছে না ২১ বছর। ফলে সাংগঠনিক কার্যক্রম ঝিমিয়ে পড়েছে। এ কারণে নেতা-কর্মীরাও দুটি ধারায় বিভক্ত হয়ে পড়েছেন।
একটি ধারা উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ ও সভাপতি তোজাম্মেল হোসেনের পক্ষে এবং অপরটি পৌর মেয়র আতাউর রহমান ও সাংসদ মনোয়ার হোসেন চৌধুরীর পক্ষে কাজ করছেন।
দলের একাধিক নেতা-কর্মী জানান, ১৯৯১ সালে উপজেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ কাউন্সিলে তোজাম্মেল হোসেন প্রধান সভাপতি ও জুলফিকার মাহমুদ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০১০ সালে জুলফিকার মাহমুদের মৃত্যুর পর আতাউর রহমান ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান। তবে ২১ বছরেও উপজেলা পর্যায়ে আর সম্মেলন হয়নি।
উপজেলার মহিমাগঞ্জ গ্রামের আওয়ামী লীগ কর্মী মুনছুর রহমান বলেন, সভাপতি ও সম্পাদকসহ উপজেলা কমিটির শীর্ষ নেতারা ক্ষমতা হারানোর ভয়ে সম্মেলন করার উদ্যোগ নিচ্ছেন না। এর ফলে ত্যাগী নেতারাও নিরুৎসাহিত হয়ে পড়ছেন।
ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান বলেন, বেশির ভাগ ইউনিয়নে ওয়ার্ড সম্মেলন হয়েছে। ওয়ার্ড সম্মেলন শেষ হলে ইউনিয়ন ও উপজেলা সম্মেলন করা হবে। আগে উপজেলা কমিটিতে নেতা-কর্মীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। বর্তমানে সবাই একসঙ্গে কাজ করছেন।
সভাপতি তোজাম্মেল হোসেন বলেন, ক্ষমতা হারানোর ভয়ে সম্মেলন না করার অভিযোগ ভিত্তিহীন। সাত বছর আগে সম্মেলন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু স্থানীয় কতিপয় নেতার ষড়যন্ত্রের কারণে কেন্দ্রীয় কমিটির হস্তক্ষেপে সম্মেলন করা সম্ভব হয়নি। তবে সম্মেলন না হওয়ার কারণে দলে কোনো প্রভাব পড়েনি।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ জানান, দলের অনেক নেতা বৃদ্ধ হয়ে গেছেন, অনেকে মারা গেছেন। ফলে দলে বলিষ্ঠ নেতৃত্বের অভাব দেখা দিয়েছে। কিন্তু জেলা কমিটির উদ্যোগের অভাবে উপজেলা পর্যায়ে সম্মেলন হচ্ছে না। গোবিন্দগঞ্জ আসনে আওয়ামী লীগের সাংসদ হলেও স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তাঁর কোনো যোগাযোগ নেই।
গোবিন্দগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মেয়র আতাউর রহমান জানান, দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে সম্মেলন হচ্ছে না। ফলে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা দুটি ধারায় বিভক্ত হয়ে কাজ করছেন। এসব কারণে দলের কার্যক্রম গতিশীল হচ্ছে না।
সাংসদ মনোয়ার চৌধুরী জানান, নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ না থাকার অভিযোগ সঠিক নয়। ক্ষমতা হারানোর ভয়ে উপজেলা কমিটির বর্তমান সভাপতি ও সম্পাদক সম্মেলন করতে উদ্যোগ নিচ্ছেন না। ফলে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের জ্যেষ্ঠ নেতা-কর্মীরা মূল দলের নেতৃত্বে আসতে পারছেন না। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সৈয়দ শামস-উল-আলম জানান, অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ে সম্মেলন করতে বিলম্ব হয়েছে। কেন্দ্র থেকে সম্মেলন করতে চাপ ছিল না। এসব কারণে উপজেলা সম্মেলন হয়নি। তবে সম্মেলন করতে তাগাদা দেওয়া হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.