সোয়া তিন কোটি টাকার কাজে দুই বছরে বরাদ্দ মাত্র আট লাখ টাকা- দুই বছর ধরে ঝুলে আছে চার ইউপির নির্মাণকাজ

পটুয়াখালীর গলাচিপা ও রাঙ্গাবালী উপজেলার চারটি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) কমপ্লেক্স ভবনের নির্মাণকাজ দুই বছর ধরে ঝুলে আছে। তহবিলে টাকা না থাকায় কাজ এগোচ্ছে না বলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) স্থানীয় কার্যালয় জানিয়েছে।


এলজিইডি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০০৯-১০ অর্থবছরে তিন কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে রাঙ্গাবালী ও গলাচিপার চারটি ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। পরে যেসব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ পেয়েছে তাদের কার্যানুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু তিন কোটি ২৪ লাখ টাকার কাজে এ পর্যন্ত তহবিল পাওয়া গেছে মাত্র আট লাখ টাকা। এই আট লাখ টাকাও দেওয়া হয়েছে চলতি ২০১২-১৩ অর্থবছরে। গলাচিপা
উপজেলা প্রকৌশলী আতিকুর রহমান তালুকদার জানান, ২০০৯-১০ অর্থবছরে গলাচিপার ডাকুয়া, রাঙ্গাবালী উপজেলার রাঙ্গাবালী সদর, বড়বাইশদিয়া ও চরমোন্তাজ ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। কাজ শুরুর পর থেকে ঠিকাদারদের বিল পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি। এদিকে চারটির মধ্যে গলাচিপার ডাকুয়া ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবনের কাজ প্রায় ৬০ শতাংশ এগিয়েছে। রাঙ্গাবালী সদর ইউনিয়ন কমপ্লেক্স ভবনটির কাজ সম্পন্ন হয়েছে ৪০ শতাংশ। বড়বাইশদিয়ায় কাজ হয়েছে ৬০ এবং চরমোন্তাজ ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সের কাজ ৯০ শতাংশ শেষ হয়েছে বলে গলাচিপা উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে।
ডাকুয়া ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সের ঠিকাদার আবদুস সাত্তার হাওলাদার বলেন, ‘আমরা কার্যাদেশ পাওয়ার পরপরই কাজ শুরু করি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো বিল না পাওয়ায় কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। ৮১ লাখ টাকার কাজে এ পর্যন্ত আমি প্রায় ৫০ লাখ টাকার কাজ শেষ করেছি। অথচ দুই বছর পর তহবিল পাওয়া গেছে মাত্র দুই লাখ টাকা। এ অবস্থায় আমাদের পক্ষে কাজ শেষ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।’
জানতে চাইলে ইউপি কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক আনোয়ার উদ্দিন খান প্রথম আলোকে বলেন, ১৯৯৮ সালে ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ প্রকল্পটি শুরু হয়। ওই সময় সারা দেশে ৬০টি ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। ২০১১ সালের জুনে প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হলে পরবর্তীকালে মন্ত্রিপরিষদের সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০১১ সালের জুলাই থেকে আবার প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে আগের ৬০টিসহ মোট ২৫০টি ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত এ প্রকল্পের মেয়াদ রয়েছে। চার ইউপি কমপ্লেক্সের নির্মাণকাজ থেমে থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আপাতত প্রকল্পের তহবিলে অর্থসংকট রয়েছে। আশা করি প্রকল্পের মেয়াদের মধ্যে সবগুলো কাজই শেষ হবে।

No comments

Powered by Blogger.