মেডিক্যালে ভর্তিতে আগের পদ্ধতিতে ফেরার ইঙ্গিত স্বাস্থ্যমন্ত্রীর

মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষায় ফিরে যাওয়ার ইঙ্গিত দিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক। তবে আদালতে এ বিষয়ে দায়েরকৃত রিট তুলে নিয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সরাসরি আলোচনার দরকার রয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের আলোচনায় আসার আহ্বান জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।


শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) আয়োজিত ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এমন ইঙ্গিত দেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এমন আহ্বানের প্রেক্ষিতে আজ রবিবার সকাল সাড়ে দশটায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে বলে মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়।
শনিবার মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিআরইউর সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা। আর অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ডিআরইউর সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু। মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষার সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি ঘোষণার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আলোচনার মাধ্যমেই এ সমস্যার সমাধান সম্ভব। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন জায়গায় কথা বলছে। তাদের দাবি এবং অভিযোগ তুলে ধরছে। কিন্তু তারা আমার সঙ্গে কোন কথা বলছে না। আদালতে এ বিষয়ে দায়েরকৃত রিট তুলে নিয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার দরকার রয়েছে। সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হবে না তা আমি বলিনি। জট খোলার জন্য উদ্যোগ নেয়া হবে। হঠাৎ করে মন্ত্রণালয়ের নতুন ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি ঘোষণার কারণ জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, প্রতিবছরই ভর্তি পরীক্ষার আগে কমিটি মিটিং করে এবং পরীক্ষার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়। এবারও মিটিং হয়েছে এবং কমিটির উপস্থিত সদস্যদের মাত্র দুজন বাদে সকলেই ভর্তি পরীক্ষার বদলে জিপিএর ভিত্তিতে ভর্তির সুপারিশ করেন। এতে আমার করার কিছুই ছিল না।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, মেডিক্যাল উপকরণ ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পেলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণে পিছপা হব না। স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সকল নেতাকর্মী ও কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আরবান প্রাইমারি হেলথ কেয়ার কার্যক্রম গতিশীল করে তুলতে স্থানীয় সরকার বিভাগের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার বিকল্প নেই। উপজেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা আরও আধুনিক করা হবে। কমিউনিটি ক্লিনিক হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারদের অধিকাংশই প্রশিক্ষণ পেয়েছেন। খুব শীঘ্রই বাকিদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। কর্মস্থলে চিকিৎসকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করার উদ্যোগ অব্যাহত রয়েছে। দায়িত্ব পালনের অনিয়মের কারণে ইতোমধ্যে প্রায় ৪শ’ চিকিৎসককে বরখাস্ত করা হয়েছে। এখন সরকারী হাসপাতালে শতকরা ৯৮ ভাগ ওষুধ পাওয়া যায়। গত সাড়ে তিন বছরে এ সেক্টরে ৭০ হাজার জনবল নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বর্তমানে ৭ হাজার চিকিৎসকের পদ শূন্য রয়েছে। এ সব কিছুর পরও স্বাস্থ্য সেক্টরের কিছু দুর্বলতা রয়েছে। সব কিছু মনিটরিংয়ের আওতায় আনা যায় না। তবে সেবার মান উন্নয়নে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আন্তরিকতার অভাব নেই।
এদিকে মেডিক্যাল কলেজগুলোতে সৃষ্ট জটিলতা নিরসনে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসতে চায় ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা। তবে তারা শর্ত দিয়েছে, এ আলোচনা হতে হবে মিডিয়া, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে।
শনিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে মেডিক্যালে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার দাবিতে আয়োজিত এক নাগরিক সংহতি সমাবেশে তারা এসব কথা জানায়। সমাবেশে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন কলাম লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ, প্রকৌশলী ম এনামুল হক, সাংস্কৃতিককর্মী রোকেয়া প্রাচী, সাংবাদিক আবু সায়ীদ খান, লেখক অরূপ রাহী প্রমুখ।

No comments

Powered by Blogger.