এতিমদের স্বর্ণ এখনো মাপেননি চাচা by মিজানুর রহমান খান

এতিমদের সহায়সম্পদ নিকটজনদের দ্বারা নয়ছয় হওয়ার এটা এক অসামান্য গল্প। ১৮ সেপ্টেম্বর এ নিয়ে একটি আপিলের তারিখ আছে পটুয়াখালীর জেলা জজ আদালতে। এই আপিলটি ব্যতিক্রম। মূল রায়টিও ব্যতিক্রম। কারণ, এই রায় বাংলাদেশ সরকারকে আইনগত এবং সৌদি আরব সরকারকেও হয়তো তা অন্তত নৈতিকভাবে হলেও স্পর্শ করবে।


কারণ, ১৮৯০ সালের গার্ডিয়ানস অ্যান্ড ওয়ার্ডস অ্যাক্টের আওতায় দায়ের করা এ মামলায় রায়দানকারী সিনিয়র সহকারী জজ আদালত সৌদিতে থাকা দুই ব্যক্তিকে অবিলম্বে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছেন। এঁদের বিরুদ্ধে প্রায় ৪৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এটি এতিমদের অভিভাবকত্বের মামলা। এক চাচা মৃত ভাইয়ের একমাত্র প্রাপ্তবয়স্ক ভাতিজি তাজনুর আক্তারকে না জানিয়ে গোপনে অভিভাবক হন এবং তাঁদের সম্পত্তি, টাকা-পয়সা ও স্বর্ণালংকার আত্মসাতের পাঁয়তারা করেন বলে অভিযোগ ওঠে। তাঁর অভিভাবকত্বকে আদালত অবৈধ গণ্য করে তা বাতিল করেছেন। সিনিয়র সহকারী জজের অনুপস্থিতিতে যুগ্ম জেলা জেজ মো. শহিদুল্লাহ্ এই মামলায় রায় দেন।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিলকারী এই অভিযুক্ত চাচা আলতাফ হোসেন এখন অবশ্য লেখকের কাছে দাবি করছেন যে তিনি তাঁর মৃত ভাই-ভাবির অনাথ সন্তানদের একটি টাকাও খাবেন না। আগামীকালের মধ্যেই তিনি তাঁদের সমুদয় নগদ টাকা ব্যাংকে জমা দেবেন। এতে আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে, তিনি রায় মানছেন। কিন্তু এটা তাঁর নতুন চাল হতে পারে বলেই আশঙ্কা। কারণ, তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, তাজনুরের অভিভাবকত্ব নয়, তিনি সরকারকে অভিভাবক দেখতে চান। তিনি অবশ্য ত্বরিতগতিতে আপিল করে গত ১৪ আগস্ট গোটা রায়টির ‘যাবতীয় কার্যক্রমের’ ওপর স্থগিতাদেশ পেয়েছেন।
২০০৮ সালের ২৩ মে সৌদি আরবে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। মদিনায় মহানবী (সা.)-র রওজা শরিফ জিয়ারত শেষে সপরিবারে জেদ্দায় ফিরছিলেন পটুয়াখালীর আবুল কালাম আজাদ। স্ত্রী তহুরা বেগমকে নিয়ে সৌদিতে গিয়েছিলেন ২২ বছর আগে। এই দম্পতি সেখানেই পাঁচ সন্তান লাভ করেন। আজাদই গাড়ি চালাচ্ছিলেন। মাগরিবের একটু পর দুর্ঘটনা ঘটে। বাবা-মা ও জ্যেষ্ঠ ছেলে আল হেলাল (১৬) নিহত হয়। এর প্রায় এক বছর পর চার এতিম ভাইবোন দেশে ফেরে। তাদের পাশে দাঁড়ান চাচা আলতাফ হোসেন। তাঁর পটুয়াখালীর বাড়িতে নিহত ভাইয়ের এতিম সন্তানদের প্রথম ৯-১০ মাস কোনো সমস্যা হয়নি।
প্রথম আলোর কার্যালয়ে তাজনুর ও তাঁর ভাইবোনদের সঙ্গে লেখকের প্রথম সাক্ষাৎ ঘটেছিল গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে। তাজনুর বলেন, ‘আমি পটুয়াখালী সরকারি মহিলা কলেজে পড়ছিলাম। চাচার কাছে আব্বুর টাকা-পয়সা ও অন্যান্য সম্পদের হিসাব চাওয়া নিয়ে মনোমালিন্যের সূত্রপাত ঘটে।’ আর তাঁর চাচার দাবি, ভাতিজিকে সুপাত্রে সম্প্রদানের উদ্যোগ নিতে গিয়েই বিপত্তি বাধে।
তবে চারজন এতিম সন্তানের টাকা-পয়সা ও স্থাবর সম্পত্তি বেহাত কিংবা তছরুপ করার দায়ে পটুয়াখালীর যুগ্ম জেলা জজ মোহাম্মদ শহিদউল্লাহ্ যাঁকে খলনায়ক হিসেবে চিহ্নিত করেছেন, তিনি আর কেউ নন, এতিমদের আপন চাচা আলতাফ হোসেন।
আদালতের কথায় বলি, এই চাচা ‘নাবালক-নাবালিকাদের বিপুল পরিমাণ অর্থসম্পদ হস্তগত করেছেন।’ তিনি এতিমদের সম্পদ ‘নিজ খেয়ালখুশিমতো তছরুপ’ করেছেন। নিজের ‘ভাইয়ের ছেলেমেয়েদের অভিভাবকহীন অবস্থায় ভাড়া বাসায় উঠিয়ে দিয়ে তিনি চরম দায়িত্বহীনতার’ পরিচয় দিয়েছেন। এর মাধ্যমে তিনি তাঁর ওপর অর্পিত বিশ্বাস ভঙ্গ করেছেন। এমনকি তাদের প্রতি ‘যথাযথ যত্ন নেওয়ার ক্ষেত্রে চরম অবহেলা প্রদর্শন’ করেছেন।
এই চাচা লেখককে অবাক করেছেন। কারণ, আদালতের এমন কড়া মন্তব্য সম্পর্কে তিনি উদাসীন। এমনকি তা খণ্ডনও করেননি। তিনি কাজের কাজি।
পটুয়াখালীর পৌর নিউমার্কেটের ফেন্সি স্টলের মালিকানা তিনি দাবি করেন। কিন্তু দলিলপত্র বলছে, এটি তাঁর প্রয়াত ভাইয়ের। তাজনুর জানান, ‘আরও তিনটি দোকান আছে আমার আব্বুর। পটুয়াখালী সদর রোডে ইসলামী ব্যাংকের পশ্চিম পাশে হাই চয়েস, রহিদ ইলেকট্রনিকস ও শিকদার ফ্যাশন।’ অবশ্য এই তিনটি দোকানের মালিকানা আলতাফ হোসেন মৃত ভাইয়ের বলে মানলেও এর ভাড়াটেরা সবাই চুক্তি করেছেন চাচার সঙ্গেই।
আদালত ওই চারটি দোকানের ভাড়াটেদের সঙ্গে আলতাফ হোসেনের সম্পাদিত চুক্তিপত্র বাতিল করেছেন। এবং নতুন অভিভাবক তাজনুরের সঙ্গে চুক্তিপত্র সম্পন্ন করতে এবং এর ব্যর্থতায় এগুলো খালি করতে বলেছেন। কিন্তু তাও এখন স্থগিত হয়ে আছে। এতিমদের মালিকানাধীন দোকান চারটির ভাড়াটেরা প্রায় চার লাখ টাকা অগ্রিম দিয়েছেন তাজনুরের চাচাকে। ‘এখন তাঁরা সেটা আমাদের কাছে ফেরত চাইছেন। অথচ ভাড়ার টাকা তাঁরা যথারীতি চাচাকেই দিচ্ছেন’—এই মন্তব্য করেছেন মো. বাকি বিল্লাহ। তিনি আলতাফ হোসেনের ভাতিজা। তবে তাঁর মতে, এই ছেলেটিই যত নষ্টের গোড়া। তাজনুরের মাথা চিবিয়ে খাচ্ছে।
আলতাফ হোসেনের সঙ্গে ৩১ আগস্ট কথা বলি টেলিফোনে। আদালতের রায়ে তাঁকে ‘নাবালকের সম্পত্তি আত্মসাতের অপপ্রচেষ্টায় লিপ্ত’ থাকাসহ নেতিবাচক মন্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি তাজনুর ও তাঁর অপর সহোদর নূর মোহাম্মদের (কোরআনে হাফেজ) ছেলে বাকি বিল্লাহর সঙ্গে কথিত বিবাহের ওপরই জোর দেন। আদালতেও তিনি একই বক্তব্য দিয়েছেন। তাজনুর ও বাকি বিল্লাহর চরিত্র নিয়ে কটাক্ষ করতে তিনি বেপরোয়া মনোভাব ব্যক্ত করেন। আবার প্রশ্নের জবাবে একই সঙ্গে বলেন, ‘হ্যাঁ। তারা বিয়ে করলে করবে, তাতে আমার কী।’ আদালতে ও তাঁর সঙ্গে লেখকের আলোচনায় স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে, এতিমদের সহায়সম্পদ ও টাকাপয়সা লুটপাট করে খাওয়ার একমাত্র কারণ ওই মনগড়া বিবাহ।
তাজনুর পড়াশোনা শেষ করতে চান। ভাইবোনদের নাবালক রেখে তিনি বিয়ে করতে নারাজ। তাজনুর ও বাকি বিল্লাহ উভয়ে তাঁদের বৈবাহিক সম্পর্কের কথা অস্বীকার করেন। এমনকি আদালতও বলেছেন, ‘তাজনুর গোপনে বাকি বিল্লাহকে বিয়ে করেছেন—এর সপক্ষে আলতাফ হোসেন কোনো কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হন।’
আলতাফ হোসেন প্রথম আলোকে পাঁচ মিনিটের কম সময়ের ব্যবধানে বলেন, ‘ছয় মাস আগে তিনি তাজনুরকে অন্যত্র বিয়ে দিতে উদ্যোগী হলে বিরোধ বাধে। এবং ছয় মাস আগেই তাজনুর-বাকির বিয়ে হয়েছে হাজার হাজার মানুষের সামনে। তবে কাবিন হয়নি।’ আবার আদালতে তিনি নিজেই তথ্য দেন, ‘প্রায় দেড় বছর আগে চার ভাইবোনকে অন্যত্র বাসা ভাড়া করে নিজেই সরিয়ে দিয়েছেন।’
চাচার পরে তাজনুরের মামা-খালুর কথায় আসি। এতিমদের মামা ইবরাহিম হাওলাদার এবং প্রয়াত আজাদের বড় ভাইয়ের জামাতা ফখরুল ইসলাম সৌদি আরবে কর্মরত আছেন। তাজনুর বলেন, ‘তখন হাত-পা ভাঙা অবস্থায় আমি হাসপাতালে। এ সময় সৌদি আদালত আমাকে নাবালক তিন ভাইবোনের ক্ষমতাপত্র দেন। কিন্তু আমার মামা আমাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে—এই ভয় দেখান। এবং সেখানকার ব্যাংকে গচ্ছিত আমার আব্বুর অর্থ তুলতে আমি তাঁকে ক্ষমতাপত্র দিই।’
তাজনুর বলেন, ‘বাংলাদেশি টাকায় ৪৩ লাখ ৪৪ হাজার টাকা আমার মামা ও দুলাভাই সৌদি ব্যাংক থেকে তুলে নেন। এর একটি অংশের হিস্যাদার ছিলেন দাদি আমেনা খাতুন। তিনি তাঁর টাকা তোলার ক্ষমতাপত্র হস্তান্তর করেন আমার দুলাভাই ফখরুলকে। এই মামা ও দুলাভাই উভয়ে চাচার আশীর্বাদপুষ্ট। এমনকি মদিনায় দুর্ঘটনাকবলিত সেই গাড়ি বিক্রির প্রায় সোয়া লাখ টাকাও মামা নিয়েছেন। আদালত তাই হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছেন মামা ও দুলাভাইকে।
আর আব্বুর কাছ থেকে ধার নিয়েছিলেন খালু নুরুল হক মুন্সি। প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা তিনি দিচ্ছেন না।’
উল্লেখ্য, চাচার কাছে মোট নগদ অর্থ দাবি করা হয়েছে এক কোটি ৫৯ লাখ টাকা। আর স্বর্ণালংকার ৭০ ভরি। প্রায় মনগড়া খরচ দেখিয়ে চাচা বলেন, ‘আমার কাছে এখন সাড়ে ২২ লাখ টাকা আছে। স্বর্ণ আছে ৪২ ভরি।’ তবে চাচাটি ‘নাবালক তিনজনের সম্পদ’ ভবিষ্যতে তাজনুরের যোগসাজশে ভাতিজা বাকি লুটপাট করবে ভেবে অত্যন্ত পেরেশান। আর বাস্তবতা হলো টাকা-পয়সার অভাবে বর্তমানে ওরা বড় কষ্টে আছে। চাচার ভয়ে তাদের পটুয়াখালী ছাড়তে হয়েছে। তাজনুর (২২) উচ্চমাধ্যমিক শেষ করেছেন। এরপর আর পড়তে পারছেন না। অথচ তাঁর উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন। অপর বোন মারজান (১৪) অষ্টম শ্রেণীতে শরীয়তপুরে নড়িয়া গার্লস স্কুলে আর তাদের ছোট দুই ভাই আইমান (১০) ও মাহমুদ (৯) উভয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ে। দুর্ঘটনার ক্ষতচিহ্ন প্রত্যেকে বহন করছে। টাকার অভাবে তারা চিকিৎসা করতে পারছে না। অথচ চাচা চিকিৎসা খরচ দেখিয়েছেন ২০ হাজার টাকা। তাজনুরের বাঁ হাতে ও পায়ের ‘রড’ আজও অপসারণ করা হয়নি। বিচারক মো. শহিদুল্লাহর কথায়, ‘তাজনুরদের ভরণপোষণ, শিক্ষা ও চিকিৎসাসহ সার্বিক বিষয়ে তাদের চাচা চরম অবহেলা ও ঔদাসীন্য প্রদর্শন করেছেন। এর ফলে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছে।’ শরিয়তপুরের একটি স্কুলে শিক্ষকতা করেন বাকি। সেখানে বাবা-মাকে নিয়ে থাকেন। এই পরিবারেই ঠাঁই মিলেছে তাজনুরদের।
দাদি আমেনা খাতুনকে দিয়ে শেষ করি। ১১৪ বছর বয়সী এই দাদি মৃত ছেলের শোকভাগ পেয়েছেন ১৩ লাখ ৬৪ হাজার টাকা এবং সব স্থাবর সম্পত্তির ছয়ের এক অংশ। তিনি থাকেন পটুয়াখালী শহরে আলতাফ হোসেনের সঙ্গে। আলতাফ হোসেন ইতিমধ্যে তাঁর মায়ের কাছ থেকে নগদ অর্থ ও স্থাবর সম্পত্তি দলিল করিয়ে নিয়েছেন। অবশ্য তাজনুরদের সন্দেহ, এ বিষয়ে তাঁদের দাদি কিছুই জানেন না। এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলার পর থেকে তাজনুরকে তাঁর দাদির কাছে যেতে দেওয়া হয়নি।
অনাথ নাতি-নাতনিরা দাদির স্নেহ থেকেও বঞ্চিত। তাজনুর আদালতে শুনানিকালে বলেছেন, ‘একদিন দাদির কাছে যাই। সঙ্গে ছিল ছোট ভাই মাহমুদ। তাঁর সঙ্গে আলাপকালে আমাদেরকে চাচা ও চাচি বেদম প্রহার করেছেন।’
আলতাফ হোসেনের নাম আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয়ের খাতায় আছে। আওয়ামী লীগ দলীয় মেয়র তাঁর বাসাতেই ভাড়া থাকেন।
‘ডিসি-এসপি-মেয়র’ দিয়ে সালিসি করিয়েছেন বলে আলতাফ দাবিও করেন। অবশ্য তাজনুর বলেন, ‘ডেপুটি স্পিকার তাঁদের পক্ষে এসপিকে একবার ফোন করেছিলেন, কিন্তু তাতে সুরাহা হয়নি।’
তবে আলতাফ হোসেন বেশ রসিক বটে। তাঁর কাছে জানতে চাইলাম, ২২ লাখ টাকা তো সোমবারই ফেরত দেবেন। স্বর্ণালংকার কবে দেবেন? দোকানঘর কবে ছাড়বেন? দোকানঘর বিষয়ে তিনি নীরব থাকেন। তবে অলংকার বিষয়ে উচ্চকণ্ঠে হলেন, ‘আমার কাছে হিসাব আছে। তাজনুরের সই করা তিন-চারটি স্লিপ আছে।’
তাতে কী লেখা?
‘এই যে ধরুন একদিন চেইন নিল। আরেক দিন আরেকটা কিছু নিল। ৪২ ভরি তো আর নেই।’
তাহলে কতটুকু আছে?
‘এখনো তো তা মাপ দিয়ে দেখি নাই।’
mrkhanbd@gmail.com

‘অনাথদের দুর্ভাগ্যের কথা বিবেচনা করা সমীচীন। কোনো দ্বিধা ছাড়াই নিম্ন আদালতের রায়ের সুফল তাদের ভোগ করতে দেওয়া প্রয়োজনীয়, অন্তত সেটুকু মাত্রা পর্যন্ত, যেটুকু তাদের চাচা স্বীকার করে নিয়েছেন।’
বিচারপতি আমীরুল কবীর চৌধুরী
সাবেক চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন

‘দেনমোহরের মধ্যে একটি অংশের নাম তলবি মোহরানা। দেনমোহরের মামলায় আপিল গ্রহণকালে সাধারণত দেখা যায়, আদালত বিবাদী অর্থাৎ স্বামীকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ওই তলবি মোহরানা পরিশোধে নির্দেশ দেন। এর কারণ হলো, বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটলে ওই তলবি মোহরানা পরিশোধ করতেই হবে। সেভাবে আলোচ্য ক্ষেত্রে আদালত আপিল গ্রহণকালে ন্যায়বিচারের স্বার্থে বিবাদীকে তাঁর স্বীকৃত অংশ পরিশোধে আদেশ দিতে পারেন।’
সৈয়দ আমিরুল ইসলাম
সাবেক বিচারপতি, হাইকোর্ট বিভাগ, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট

‘আমি এ প্রসঙ্গে মাননীয় প্রধান বিচারপতির একটি মন্তব্য স্মরণ করছি। তিনি বলেছেন, এমনভাবে বিচার করতে হবে যাতে জনগণের আস্থায় চিড় না ধরে। এই দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে এটা বলা চলে যে, অনাথদের চাচা যেটুকু দায় স্বীকার নিয়েছেন, সেটুকু আদায়ে যাতে বিঘ্ন না ঘটে। সম্পদের যেসব বিষয় তর্কিত তা নিয়ে আদালতের ভিন্নমত থাকতে পারে। কিন্তু চাচার স্বীকৃত অংশ না দিলে তা কেবল আইনের নয়, ন্যায়বিচারের পরিপন্থী বলে প্রতীয়মান হবে। বিচারপ্রার্থী মানুষের মনে সংশয় সৃষ্টি করবে।’
ড. মিজানুর রহমান
চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন

No comments

Powered by Blogger.