ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্টের ভাষ্য- অ্যাসাঞ্জকে ধরতে দূতাবাসে ঢুকবে না যুক্তরাজ্য

লন্ডনে ইকুয়েডরের দূতাবাসে ঢুকে উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে গ্রেপ্তারের হুমকি প্রত্যাহার করেছে যুক্তরাজ্য। গত শনিবার ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট রাফায়েল করেয়া এ কথা জানিয়েছেন। গণমাধ্যমে দেওয়া সাপ্তাহিক ভাষণে করেয়া বলেন, ‘যুক্তরাজ্য ভয়াবহ ভুল করে আমাদের দূতাবাসের অভ্যন্তরে প্রবেশে হুমকি দেওয়ার পর এখন আমরা মনে করছি, সেই দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতি দূর হয়েছে।’


সানডে টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে করেয়া বলেন, অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে সুইডেনে যে ধরনের অভিযোগ আনা হয়েছে, লাতিন আমেরিকায় তা অপরাধ বলে গণ্য হয় না। তাই অ্যাসাঞ্জকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ার সময় এ বিষয়টিকে আমলে আনা হয়নি। করেয়া বলেন, কোনো যুগলের যৌন সংসর্গের সময় জন্ম নিরোধক ব্যবহার না করা লাতিন আমেরিকায় অপরাধ নয়। অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে এই অভিযোগই আনা হয়েছে। সারা বিশ্বের ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ দেশেই এটি কোনো অপরাধ বলে বিবেচনা করা হয় না।
যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে করেয়া বলেন, চিলির সাবেক স্বৈরশাসক অগাস্তো পিনোশেকে ১৯৯৮ সালে লন্ডনে গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু ওই স্বৈরশাসককেও প্রত্যর্পণ করা হয়নি। অথচ অ্যাসাঞ্জকে সুইডেনের হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে যুক্তরাজ্য সরকারের দ্বৈতনীতিই প্রকাশ পাচ্ছে।
সুইডেনে প্রত্যর্পণ এড়াতে প্রায় দুই মাস আগে ওই দূতাবাসে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন অ্যাসাঞ্জ। তাঁকে গ্রেপ্তারের উদ্দেশ্যে দূতাবাসটির চারপাশ ঘিরে রাখে লন্ডনের পুলিশ। একপর্যায়ে যুক্তরাজ্য হুমকি দেয়, দূতাবাসের ভেতর প্রবেশ করে অ্যাসাঞ্জকে গ্রেপ্তার করা হবে। ইকুয়েডর বলে আসছে, দূতাবাসে প্রবেশের হুমকি গ্রহণযোগ্য নয়। এ ধরনের পদক্ষেপ হবে যুক্তরাজ্যের জন্য আত্মহত্যার শামিল। অ্যাসাঞ্জকে গ্রেপ্তারের এ হুমকির জেরে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
ইকুয়েডরের সরকার জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওই হুমকি প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দূতাবাসে প্রবেশের হুমকি আর নেই। এই হুমকি প্রত্যাহারের পর তা আবারও স্বাভাবিক হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
দুই নারীকে ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির অভিযোগে অ্যাসাঞ্জকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় সুইডেন। এ জন্য তাঁকে সুইডেনে প্রত্যর্পণের চেষ্টা করছে যুক্তরাজ্য। কিন্তু অ্যাসাঞ্জের আশঙ্কা, সুইডেনে পাঠানো হলে, সেখান থেকে তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণ করা হবে। সেখানে বিচারের নামে প্রহসন হতে পারে বলে আশঙ্কা অ্যাসাঞ্জের। এএফপি ও রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.