পার্কিংয়ের জায়গা না রেখেই উঠছে বিশাল বিপণিবিতান

রাজশাহী নগরের শিরোইল বাস টার্মিনালের জন্য অধিগ্রহণ করা জমিতে রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আরডিএ) চার তলাবিশিষ্ট বাণিজ্যিক বিপণিবিতান নির্মাণ করছে। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘গোধূলি সুপার মার্কেট’।অভিযোগ উঠেছে, বিধি লঙ্ঘন করে এ বিপণিবিতানে গাড়ি পার্কিংয়ের কোনো জায়গা রাখা হয়নি।


আরডিএ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৯-৯০ সালের দিকে রাজশাহী শিরোইল বাস টার্মিনাল নির্মাণের জন্য সরকার এ জমি অধিগ্রহণ করে। ২০০৬ সালের দিকে টার্মিনালের অধিগ্রহণ করা জায়গার একাংশে আরডিএ গোধূলি সুপার মার্কেট নির্মাণ শুরু করে। নিয়মানুযায়ী যে কাজের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হবে, সেই উদ্দেশ্যে ব্যবহার করার কথা। আবার কোনো ভবন নির্মাণের আগে আরডিএর নির্ধারিত বিধি অনুযায়ী নকশা অনুমোদন করাতে হবে। সাধারণত এ ধরনের বাণিজ্যিক ভবনের ক্ষেত্রে ২২ থেকে ২৫ শতাংশ পার্কিংয়ের জায়গা ছাড়তে হয়। সেই হিসাবে একটি পাঁচতলা ভবনের পুরো একটি তলা পার্কিংয়ের জন্য ছেড়ে দিতে হয়। এ ছাড়া ভবনের চারপাশ দিয়ে পাঁচ ফুট করে জায়গা ছাড়তে হয়। এই ভবনের ক্ষেত্রে কোনোটিই মানা হয়নি। আরডিএর রীতি অনুযায়ী, কোনো ভবনের নকশা অনুমোদনের জন্য একজন অথরাইজ অফিসার রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ ভবনের নকশা অথরাইজড অফিসার অনুমোদন করেননি। আরডিএর বৈষয়িক শাখা ভবনের নির্মাণকাজের দায়িত্ব পালন করছে। জানাতে চাইলে বৈষয়িক কর্মকর্তা কামরুজ্জামান বলেন, আরডিএর প্রকৌশল শাখা ভবনের নকশা অনুমোদন করেছে। পার্কিংয়ের জায়গা কোথায় জানতে চাইলে তিনি জানান, ভবনের পাশে পুলিশ বক্সের কাছে একটু জায়গা আছে। সেখানে পার্কিংয়ের কাজ চলবে।
সরেজমিনে দেখা যায়, নির্মাণাধীন বিপণিবিতানটিতে গাড়ি পার্কিংয়ের কোনো জায়গা নেই। ভবনের দ্বিতীয় তলার পুরোটা জুড়ে খান ফার্নিচার গ্যালারির বিক্রয়কেন্দ্র রয়েছে। এক বছর আগে ভবনের তৃতীয় ও চতুর্থ তলা নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলে খান ফার্নিচার কর্তৃপক্ষ এতে অংশ নেয় এবং কাজও তারাই পায়।
পার্কিংয়ের জায়গার ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী শফিকুল আওয়াল খান জানান, এটা আরডিএর ব্যাপার। তারা যেখানে পার্কিংয়ের কথা বলছে সেখানে পুলিশ বক্স রয়েছে। এটা আসবাবপত্রের বাজার। কার্যত এ বাজারের কোনো পার্কিংয়ের জায়গা নেই। বাইরে গাড়ি রাখতে হয়। তিনি আরও বলেন, ‘পার্কিংয়ের ব্যবস্থা না হলে আমিই একসময় আইনের আশ্রয় নেব।’
গোধূলি সুপার মার্কেট সমিতির সভাপতি রমজান আলী জানান, শুরু থেকেই তাঁরা এখানে পার্কিংয়ের জায়গা রাখার কথা বলছেন। কিন্তু আরডিএ পার্কিংয়ের জায়গায় বিপণিবিতান করে শেষ করে দিচ্ছে। এখন বিপণিবিতানের বাইরে দুটি মোটরসাইকেল রাখার মতো জায়গা নেই। রাখলে একেবারে রাস্তার ওপর রাখতে হবে।
আরডিএর চেয়ারম্যান আবদুস সামাদ বলেন, এত দিন অথরাইজড অফিসারই নকশা অনুমোদন করেছেন। ভবিষ্যতে একটি কমিটির মাধ্যমে অনুমোদনের জন্য একটা প্রক্রিয়া করা হচ্ছে। তবে এখনো সেটা হয়নি। বিপণিবিতানের নকশায় পার্কিং না থাকার ব্যাপারে তিনি জানান, নকশায় অবশ্যই পার্কিং থাকবে। না থাকলে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.