রাশিয়ার পার্লামেন্টে এনজিও সম্পর্কিত বিতর্কিত বিল পাস

রাশিয়ায় পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ দুমায় গতকাল শুক্রবার বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) বিষয়ক একটি বিল পাস হয়েছে। এ বিল অনুযায়ী, বিদেশি অর্থসাহায্যে পরিচালিত এনজিওগুলোকে 'বিদেশি এজেন্ট' হিসেবে বিবেচনা করা হবে। মানবাধিকারকর্মীরা বিলটির সমালোচনা করে বলেছেন, ভিন্নমতাবলম্বীদের দমন করতেই সরকার এ পদক্ষেপ নিয়েছে।


পার্লামেন্টে ৩৭৪ ভোটে বিলটি পাস হয়। বিপক্ষে পড়ে তিন ভোট, একজন সদস্য অনুপস্থিত ছিলেন। গত ৬ জুলাই পার্লামেন্টে এ বিল উত্থাপন করা হয়েছিল। এক সপ্তাহে বিল নিয়ে তিন দফা বিতর্কের পর গতকাল সেটি পাস হয়। তবে বিলটি আইনে পরিণত হওয়ার জন্য পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ ফেডারেশন কাউন্সিলে পাস হতে হবে এবং প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সই লাগবে। ক্ষমতাসীনরা আশা করছে, বিলটিতে পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ ও প্রেসিডেন্ট উভয়ই সমর্থন দেবে।
বিল অনুযায়ী, রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত বিদেশি সাহায্যপুষ্ট এনজিওগুলোকে আর্থিক ও অন্যান্য কর্মকাণ্ডের প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। সরকারের কাছে বছরে দুই বার তাদের এ প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। এনজিওগুলো এ কাজে ব্যর্থ হলে শাস্তিস্বরূপ বড় অঙ্কের জরিমানা এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট এনজিওগুলো বলছে, এমন আইন হলে তাদের কাজের উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে। তাদের মতে, কোনো প্রতিষ্ঠানের গায়ে 'বিদেশি এজেন্ট'-এর তকমা লাগিয়ে দিলে তাদের সম্পর্কে জনমনে বিশ্বাস কমে যায়।
রুশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বিদেশিদের হস্তক্ষেপ বন্ধ করতেই এ বিল পাস করা হয়েছে। পুতিন ও তাঁর সমর্থকরা অভিযোগ করছেন, গত ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত পার্লামেন্ট নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছিল পশ্চিমারা। এমনকি পুতিন আবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে যেসব বিক্ষোভ হয়েছে তাতে ইন্ধন জুগিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর। বিরোধী বামপন্থী দলের নেতা ইলায়া পনোমায়েভ বলেছেন, এ বিলের মাধ্যমে স্বতঃপ্রবৃত্ত কাজের অবমূল্যায়ন এবং জনস্বার্থে পরিচালিত কাজকে কলঙ্কিত করা হলো।
এ ছাড়া একই দিন পার্লামেন্টে আরেকটি বিল পাস হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, কারো বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ ও মানহানিকর বক্তব্য দিলে তাকে ৫০ লাখ রুবল জরিমানা করা হবে। ২৩৮-৯১ ভোটে ওই বিলটি পাস হয়। এ বিলের বিরোধিতা করে কমিউনিস্ট পার্টির আইনপ্রণেতারা ওয়াকআউট করেন। বিলটির ওপর যখন ভোটাভুটি চলছিল তখন পার্লামেন্ট ভবনের বাইরে বিলের বিরোধিতা করে বেশ কিছুসংখ্যক সাংবাদিক বিক্ষোভ করছিলেন। তাঁরা বলেন, গণমাধ্যমকে অতিরিক্ত চাপে রাখতেই এ বিল তোলা হয়েছে। সূত্র : বিবিসি, এএফপি, এপি।

No comments

Powered by Blogger.