যুবলীগের ষষ্ঠ জাতীয় কংগ্রেস আজ, দৃষ্টিনন্দন আয়োজন-উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

প্রায় সাড়ে নয় বছর পর আজ শনিবার যুবলীগের ষষ্ঠ জাতীয় কংগ্রেস (কাউন্সিল) অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সকাল ১০টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এ সম্মেলন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আবহমান বাংলার গ্রামীণ চিত্রের সঙ্গে সমন্বয় রেখে আধুনিক প্রযুক্তি ও আকর্ষণীয় ডিজাইনে নির্মাণ করা হয়েছে


দৃষ্টিনন্দন সুবিশাল মঞ্চ। দলীয় প্রতীক নৌকা, হাঁস, প্রজাপতি, রয়েল বেঙ্গল টাইগার, হরিণ, অস্থায়ী ফোয়ারা, ফুল ও বেলুন এবং কুটির শিল্প দিয়ে তৈরি করা হয়েছে সুসজ্জিত এ মঞ্চ। জাতীয় কংগ্রেসে উপস্থিত থাকতে বিরোধী দল বিএনপির যুব সংগঠন যুবদলকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
২০০৩ সালের ২৫ জানুয়ারি ঐতিহ্যবাহী এ সংগঠনের সর্বশেষ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। তখন তিন বছরের জন্য গঠিত হয় কেন্দ্রীয় কমিটি। ওই কমিটির মেয়াদ ছয় বছর আগেই উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। আজই দ্বিতীয় অধিবেশনে ঘোষণা করা হবে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নতুন চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদকসহ সংগঠনটির মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের নতুন কমিটি।
কাউন্সিলকে সামনে রেখে পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মীদের পদচারণায় গত এক মাস ধরে মুখরিত হয়ে উঠেছে বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউস্থ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং ধানম-িস্থ আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়। পদ পেতে তাঁরা ধর্ণা দিচ্ছেন আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারক নেতাদের দ্বারে দ্বারে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও স্বৈরাচারবিরোধী বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রাম এবং ওয়ান ইলেভেনপরবর্তী আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেফতারের পর তাঁর মুক্তি আন্দোলনে নিজেদের অগ্রণী ভূমিকা তুলে ধরছেন তাদের কাছে।
শুক্রবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউস্থ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে ষষ্ঠ জাতীয় কংগ্রেসের সার্বিক প্রস্তুতির বিষয় তুলে ধরে যুবলীগ। সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মির্জা আজম এমপি বলেন, ৭৭টি সাংগঠনিক জেলা এবং জেলার মর্যাদাসম্পন্ন ১৫টি বিদেশী শাখার দুই হাজার ৬০১ কাউন্সিলর এবং ৩০ হাজার ডেলিগেট আজকের সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবেন। এছাড়া জাতীয় নেতৃবৃন্দ, মন্ত্রীবর্গ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক, আইনজীবী, সাংবাদিক এবং ভ্রাতৃপ্রতিম যুব সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ ৭ হাজার অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা আজম জানান, বিএনপির যুব সংগঠন যুবদলকেও আজকের কাউন্সিলে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সাংবাদিক সম্মেলনে এ সময় উপস্থিত ছিলেন চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী, হারুনুর রশীদ, মজিবর রহমান চৌধুরী, শহীদ সেরনিয়াবাত, সুব্রত পাল, এবিএম আমজাদ হোসেন এবং ফজলুল হক আতিক।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় পতাকা উত্তোলন, শান্তির প্রতীক পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে কংগ্রেসের উদ্বোধন করবেন। এরপর গান ও নৃত্যের মাধ্যমে বাংলাদেশের ৪০ বছরের ইতিহাস তুলে ধরবেন শিল্পীরা। উদ্বোধনী সাংস্কৃতিক পর্বে নেপথ্যে কণ্ঠ দেবেন কুমার বিশ্বজিৎ, সামিনা চৌধুরী, সুবীর নন্দী ও ভারতের খ্যাতনামা শিল্পী হৈমন্তী শুক্লা। ধারা বর্ণনা করবেন ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর বিকেল চারটায় বসবে কংগ্রেসের দ্বিতীয় পর্ব কাউন্সিল অধিবেশন। এ অধিবেশনে যুবলীগের গঠনতন্ত্রে বেশকিছু সংশোধনী আনা হবে। রাতে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হবে যুবলীগের ষষ্ঠ জাতীয় কংগ্রেস।
গতানুগতিক ধারা থেকে বেরিয়ে এসে সংগঠনকে আরও আধুনিক ও যুগোপযোগী করতে যুবলীগের গঠনতন্ত্রে বেশকিছু পরিবর্তন আনা হচ্ছে বলে জানান গঠনতন্ত্র উপ-কমিটির আহ্বায়ক শহীদ সেরনিয়াবত। জানা গেছে, বর্তমান গঠনতন্ত্রে সহ-সভাপতির পদ রয়েছে ১৫টি। সেখানে সংশোধনী এনে ২০টি করা হচ্ছে। এছাড়া যোগাযোগ, তথ্য, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, নারী ও শিশু সম্পাদক পদ নতুন করে সৃষ্টি করা হচ্ছে। এছাড়া সহ-সম্পাদক পদের স্থলে সংশোধনী এনে উপ-সম্পাদক করা হচ্ছে। এছাড়া কেন্দ্রীয় পদসংখ্যা আরও ১০টি বাড়তে পারে।
২০০৩ সালের ২৫ জানুয়ারি যুবলীগ পঞ্চম জাতীয় কংগ্রেসে জাহাঙ্গীর কবির নানককে চেয়ারম্যান এবং মির্জা আজমকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়। পরে নানককে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক করা হলে যুবলীগ ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান ওমর ফারুক চৌধুরী।

No comments

Powered by Blogger.