প্রকাশ্যে ধূমপান নয় by সনেট দেব

ধূমপান স্বাস্থের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এ কথা একজন অধূমপায়ী যেমন জানে, ঠিক একজন ধূমপায়ীও জানে। তবুও এই মরণ নেশা থেকে ফিরতে পারে না কেউ। যে কেউ ধূমপান করতেই পারে এটি তার ব্যক্তিগত অধিকার। সমস্যা হলো প্রকাশ্যে ধূমপান করা।


কারণ ধূমপান একজন ধূমপায়ীকে যতটুকু ক্ষতি করে তার চেয়ে বেশি ক্ষতি করে একজন অধূমপায়ীকে। আমাদের দেশে বেশিরভাগ
ধূমপায়ী ব্যক্তি প্রকাশ্যেই বেশি ধূমপান করে। একবারের জন্যও পাশের ব্যক্তির কথা চিন্তা করে না।
২০০৫ সালে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন প্রণয়ন করা হয়। ওই আইনের ৪ (১) ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি কোনো পাবলিক প্লেস বা পাবলিক পরিবহনে ধূমপান করতে পারবে না।
ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইনের ৪ (১) ধারায় বলা হয়েছে, এসব স্থানে ধূমপান করলে ধূমপায়ীর ৫০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা গুনতে হবে; কিন্তু এই আইন ক'জনে মানে?
বিশেষজ্ঞদের মতে, যারা ধূমপান করেন না কিন্তু আশপাশের মানুষের কাছ থেকে নিত্যদিন সিগারেটের ধোঁয়া গ্রহণ করেন, তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে যায় অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি। যারা বহুদিন ধরে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার, তাদের ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। হৃৎপিণ্ডের ব্যাপক ক্ষতিতে পরোক্ষ ধূমপানের প্রভাব অনেক বেশি। পরোক্ষ ধূমপান কখনও কখনও স্ট্রোকের জন্য দায়ী। শ্বাসকষ্টজনিত রোগ, বুকে কফ জমে কাশি, নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস আর হাঁপানির জন্যও অনেকাংশে দায়ী এ পরোক্ষ ধূমপান। দেশে মোট ধূমপায়ীর সংখ্যার মধ্যে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সংখ্যাই বেশি। এই ধূমপানের কারণে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে আমাদের আধুনিক শিক্ষিত যুব সমাজ।
এখনই সময় মাদক জাতীয় সবকিছুর বিরুদ্ধে জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলা । এর জন্য প্রয়োজন ব্যাপক জনসচেতনতা। শুধু আইন পাস করে কাজ শেষ করলে হবে না, সে আইনের যথাযথ প্রয়োগও জরুরি। সর্বোপরি ধূমপানের শারীরিক, সামাজিক, নৈতিক ও ক্ষতিকর দিক তুলে ধরে এর বিরুদ্ধে ব্যাপক গণসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।

সশিক্ষার্থী, অর্থনীতি বিভাগ
চট্টগ্রাম কলেজ, চট্টগ্রাম
sonnetdev1989@yahoo.com

No comments

Powered by Blogger.