কাভার্ডভ্যান ধর্মঘট প্রত্যাহার, অটোর বহাল

১০ দফা দাবিতে সিএনজি অটোরিক্সা ধর্মঘটের তৃতীয় দিনে রাজধানীজুড়ে মিছিল সমাবেশ করেছে শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা। বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শ্রমিক সমাবেশে পুলিশ ও মালিক পক্ষের হামলা ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয় শুক্রবারের কর্মসূচী থেকে।


সমস্যা সমাধানে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় কিংবা সরকারের পক্ষ থেকে কোন উদ্যোগ নেই। সমাবেশে নেতৃবৃন্দ হামলার ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়ে বলেন, ১০ দফা বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। শ্রমিক ইউনিয়নের একাধিক সংগঠনের অভিযোগ, শুক্রবার মালিকপক্ষ পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে রামপুরা ও পল্টন থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছে।
এদিকে ১৪ দফা দাবিতে বাংলাদেশ ট্রাক কাভার্ডভ্যান ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ৪৮ ঘণ্টা ধর্মঘট শেষে সারাদেশে পণ্য পরিবহন শুরু হয়েছে। শুক্রবার ভোর ছয়টা থেকে ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়। পরিষদের নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, দেশের সকল জেলায় পণ্য আমদানি শুরু হয়েছে। ঈদের পর দাবি আদায়ে বৃহৎ কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে।
গত সপ্তাহে ১০ দফা দাবিদাওয়া আদায়ে অটোরিক্সা মালিক ও শ্রমিক ইউনিয়ন পৃথক-পৃথক কর্মসূচী ঘোষণা করে। কিন্তু বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) সঙ্গে মঙ্গলবারের বৈঠকের পর দুই মাসের জন্য ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট স্থগিত করে মালিক সমিতি। কিন্তু অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট পালনে অনড় থাকে শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ। বাস্তবতা হলো দাবি আদায়ে এখন অনেকটাই মুখোমুখি অবস্থানে মালিক-শ্রমিকরা। পাশাপাশি একপক্ষ অন্যপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা-হামলাসহ ভাংচুরের অভিযোগ করে যাচ্ছে। এর প্রেক্ষিতে সমস্যার সমাধান কতোটুকু মিলবে তাই এখন দেখার বিষয়।
শুক্রবার অটোরিক্সা মালিক সমিতির এক নেতা জনকণ্ঠকে বলেন, শ্রমিক ও চালকদের কাছে আমরা এখন নিরাপদ নই। তারা আমাদের ওপর হামলা করছে। রাস্তায় গাড়ি নামানো হলে ভাংচুর করছে। মোবাইলে মালিকদের হুমকি দিচ্ছে। এই অবস্থায় আমরা মনে করি দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন।
রাজধানীজুড়ে শ্রমিকদের মিছিল সমাবেশ ॥ ১০ দফা দাবি আদায় ও সমাবেশে হামলার প্রতিবাদে শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মিছিল সমাবেশ করেছে ঢাকা জেলা অটোরিক্সা ও ঢাকা অটোরিক্সা শ্রমিক ইউনিয়ন। রাজধানীর রায়েরবাগ, শনির আখড়া, ধনিয়া, ধোলাইপাড়, জুড়াইন, শ্যামপুর, কাঠেরপুল, মীরহাজিরবাগ, লালবাগ, মানিকনগর, মুগদা, বাসাবো, খিলগাঁও, রমনা, মালিবাগ, চৌধুরীপাড়া, রামপুরা, ওয়াবদা রোড, মেরুলবাড্ডা, কুড়িল, গেন্ডারিয়া, শংকর, বেগুনবাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকায় শুক্রবার দিনভর সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
তৃতীয় দিনের মতো অটোরিক্সা বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে দেখা গেছে। ঢাকা জেলা অটোরিক্সা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাকির হোসেন জনকণ্ঠকে বলেন, ১০ দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। আমরা আশাকরি সরকারের পক্ষ থেকে দাবি পূরণে কার্যকর উদ্যোগ নেয়া হবে।
অটোরিক্সা মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করে বলেন, বৃহস্পতিবার যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ধর্মঘট নিয়ে শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করতে বিআরটিএ’র চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেন। কিন্তু প্রায় ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গলেও এ ব্যাপারে কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
সিএনজি অটোরিক্সা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফরিদুল আলম খসরু জনকণ্ঠকে বলেন, আমরা আশাকরি দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হবে। তাহলে নগরবাসীর দুর্ভোগ কমবে।

No comments

Powered by Blogger.