আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল শান্ত, ৫০ শতাংশ কারখানা খুলেছে

টানা চার দিন শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষ, সড়ক অবরোধের মতো ঘটনার পর আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলের পরিস্থিতি শান্ত হয়ে এসেছে। গতকাল শুক্রবার ৫০ শতাংশ কারখানায় শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছেন। অস্থিরতার কারণে মঙ্গলবার অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হা-মীম গ্রুপের প্রতিষ্ঠান আর্টিস্টিক ডিজাইন লিমিটেডেও গতকাল কাজ শুরু হয়েছে।


স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু হা-মীম গ্রুপের পোশাক কারখানায় বৃহস্পতিবার শ্রমিকপক্ষ ও মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি ও বাড়িভাড়া না বাড়ানোর আশ্বাস দেওয়ার পর গতকাল পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসে।
শিল্প পুলিশ-১ আশুলিয়া জোনের পরিদর্শক মোখলেছুর রহমান কালের কণ্ঠকে জানান, আশুলিয়ার কয়েকটি এলাকার কারখানায় শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকে। তবে গতকাল ছুটির দিনেও এলাকার ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ কারখানায় স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করেছে। কাজ হয়েছে শতাধিক কারখানায়। তবে শ্রমিক উপস্থিতি তুলনামূলক কম ছিল।
এদিকে আশুলিয়ার জিরাবো-সাভার সড়কের পুকুরপার এলাকায় অরনিমা স্পোর্টসের শ্রমিকরা গতকাল কাজ করার সময় সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ২০-২৫ জন উচ্ছৃঙ্খল শ্রমিক এসে কারখানার পেছন থেকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় শ্রমিকরা আতঙ্কিত হয়ে কারখানার বাইরে বেরিয়ে আসেন। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী শ্রমিকদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। ঘোষবাগ এলাকার রেডিয়েন্স কারখানার শ্রমিকরাও বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে এদিন বিক্ষোভ করেছেন।
আশুলিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মনোয়ার হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, শিল্প এলাকায় গতকাল পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক ছিল। আবদুল্লাহপুর-বাইপাইল ও নবীনগর-কালিয়াকৈর সড়কে যানবাহন চলাচল ছিল স্বাভাবিক। সড়কের দুই পাশের দোকানপাট খোলা ছিল। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ, শিল্প পুলিশ ও আর্মড পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার সংঘর্ষ চলাকালে মাছরাঙা টেলিভিশনের একটি গাড়ি পোড়ানোর ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় মামলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিক অসন্তোষের কারণে সোমবার থেকে টানা চার দিন আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলের অধিকাংশ কারখানা বন্ধ ছিল। এই কয়েক দিন আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। আবদুল্লাহপুর-বাইপাইল সড়কে প্রতিদিন তিন থেকে পাঁচ ঘণ্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। ভাঙচুরের শিকার হয় যানবাহন ও কারখানা ভবন। সংঘর্ষে শ্রমিক, পুলিশ ও পথচারী মিলিয়ে আহত হয় পাঁচ শতাধিক।

No comments

Powered by Blogger.