বিএসএফপ্রধানের আপত্তিকর বক্তব্য by রজতকান্তি বর্মণ

ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)প্রধানের বক্তব্য এবং আমাদের মন্ত্রী তথা আওয়ামী লীগ তাতে সায় বা আশকারা দেওয়ায় বাংলাদেশের মানুষের মনে নানা প্রশ্ন ও উদ্বেগ জন্ম নিয়েছে। বিএসএফপ্রধান ইউ কে বানশাল গত ৭ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, সীমান্তে গুলি চালানো বন্ধ করা পুরোপুরি সম্ভব নয়।


যতদিন ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে অপরাধমূলক কাজ হতে থাকবে, ততদিন অপরাধ আটকাতে হবে বিএসএফকেই। বিএসএফপ্রধান ইউ কে বানশাল বিবিসির সঙ্গে সীমান্তে গুলি চলবে সংক্রান্ত বিবৃতিটি এমন একসময় দিলেন, যখন বিভিন্ন ইস্যুতে ভারত ও বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ আরও কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে। বিএসএফের গুলিতে গত বছরে ২১ বাংলাদেশি নিহত হয়েছে, এতে অন্তত ১০ জন ভারতীয় অপরাধীও নিহত হওয়ার কথা। তা কি হয়েছে? চোরাচালানে অংশ নিচ্ছে উভয় দেশের নাগরিক, অথচ অপরাধী শুধু বাংলাদেশিরা।
বিএসএফপ্রধান বানশালের এ ধরনের বিবৃতির মূলে রয়েছে বাংলাদেশের মন্ত্রী, উপদেষ্টা এবং আওয়ামী লীগ নেতাদের আশকারামূলক বক্তব্য। যেমন_ ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার আটরশিয়া গ্রামের হাবিবুর রহমানের নির্মম নির্যাতনের ভিডিওচিত্র যেদিন দেশ-বিদেশে প্রকাশিত হয়, এর পরের দিন ২১ জানুয়ারি এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, সীমান্তে যা কিছু ঘটছে, তা নিয়ে রাষ্ট্র চিন্তিত নয়। এসব অতীতে ঘটেছে, এখনও ঘটছে এবং ভবিষ্যতেও ঘটবে। এগুলোর দিকে দৃষ্টি দেওয়ার প্রয়োজন আছে বলে সরকার মনে করে না। একজন বাংলাদেশিকে বিবস্ত্র করে হাত-পা বেঁধে বুটজুতা ও লাঠি দিয়ে নির্দয়ভাবে আঘাত করছে, ভবিষ্যতেও ঘটবে, সরকার এ বিষয়ে চিন্তিত নয়। বিএসএফ এর আগে ১৫ বছরের বাংলাদেশি কিশোরী ফেলানীকে গুলি চালিয়ে হত্যা করে তার লাশ পাঁচ ঘণ্টা কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলিয়ে রাখে। এটি নির্মমতা, মধ্যযুগীয় বর্বরতা। আমাদের নতজানুর কারণে বিএসএফ ফেলানীর লাশ ঝুলিয়ে রেখেই তাদের নির্মমতা শেষ করেনি। তীব্র প্রতিবাদের পর বর্বরতার পরাকাষ্ঠা প্রদর্শনের জন্য ফেলানীর লাশ মৃত পশুর মতো বেঁধে ঝুলিয়ে নিয়ে যায় বিএসএফ ক্যাম্পে। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে মৃত ফেলানীর ওপর বর্বরতার যথোপযুক্ত প্রতিবাদ হয়নি বলেই আরেক বাংলাদেশি হাবিবুরকে বিবস্ত্র হতে হয়েছে।
য় গাইবান্ধা

No comments

Powered by Blogger.