তদন্ত কমিশনে সাক্ষ্য দিলেন নওয়াজ-হাক্কানি-মেমোগেট বিতর্ক

মেমোগেট কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করলেন ওয়াশিংটনে নিযুক্ত সাবেক পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূত হুসাইন হাক্কানি। গত সোমবার মেমোগেট কেলেঙ্কারি তদন্তে গঠিত বিচার বিভাগীয় কমিশনে হাজিরা দেওয়ার আগে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, মার্কিন কর্মকর্তাদের হাতে ওই মেমোগেট হস্তান্তর কিংবা লেখা কোনোটার সঙ্গেই তিনি জড়িত ছিলেন না। তদন্ত কমিশনে হাজির হয়েছিলেন পাকিস্তান মুসলিম লীগের (এন) নেতা নওয়াজ শরিফও।


তিনি সাংবাদিকদের জানান, মেমোগেট কেলেঙ্কারি পাকিস্তানের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। এ ষড়যন্ত্রের জন্য দায়ীদের শাস্তি দেওয়ার দাবি জানান তিনি। এদিকে সুপ্রিম কোর্টে পাক সেনাপ্রধান আশফাক পারভেজ কায়ানি এবং আইএসআই প্রধান আহমেদ সুজা পাশা যে বিবৃতি জমা দিয়েছেন তা অসাংবিধানিক এবং অবৈধ বলে মন্তব্য করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি। তিনি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী ওই বিবৃতি পাঠানোর আগে অনুমোদনের জন্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো উচিত ছিল। সেনাপ্রধান কায়ানি এবং আইএসআই প্রধান পাশা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়াই বিবৃতি জমা দিয়েছেন, যা অসাংবিধানিক। চীনের পিপলস ডেইলি অনলাইনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। খবর ডন নিউজের।
সোমবার মেমোগেট কেলেঙ্কারি ইস্যুতে তদন্ত কমিশনের শুনানিতে হাজির হন হাক্কানি। এ সময় আদালত তার বক্তব্য রেকর্ড করেন। হাক্কানির আইনজীবী এ সময় মেমোগেট ফাঁস কেলেঙ্কারির মূল হোতা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ব্যবসায়ী মনসুর ইজাজ ও হাক্কানির ব্ল্যাকবেরি কথোপকথন আদালতে জমা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করা সরকারের দায়িত্ব। এ সময় কমিশন হাক্কানিকে যখন ডাকা হবে তখনই হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। হাক্কানি সাংবাদিকদের জানান, তিনি প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনের পাশের একটি বাসভবনে অবস্থান করছেন। এদিকে ওই মেমোগেট কেলেঙ্কারির মূল হোতা মনসুর ইজাজকে পাকিস্তানে আসার জন্য ভিসা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাকে শিগগিরই পাকিস্তানে আসার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাক অ্যাটর্নি জেনারেল মৌলভী আনোয়ারুল হক বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনকে জানিয়েছেন, মনসুর ইজাজ দেশে ফিরলে তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা হবে না এ নিরাপত্তা সরকার দিতে পারে না। তবে তার বিরুদ্ধে এখনও কোনো মামলা হয়নি বলে জানান তিনি। উল্লেখ্য, পাকিস্তান আসলে মনসুরের বিরুদ্ধে মামলা হতে পারে এ আশঙ্কার পরিপ্রেক্ষিতে অ্যাটর্নি জেনারেল এ বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, লন্ডনের পাকিস্তান দূতাবাসকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে মনসুর ইজাজ আবেদন করার সঙ্গে সঙ্গেই যেন তাকে ভিসা দেওয়া হয়। এদিন তদন্ত কমিশনে এক লিখিত বিবৃতি পাঠিয়েছেন সেনাপ্রধান আশফাক পারভেজ কায়ানি। আইএসআই প্রধান আহমেদ সুজা পাশার পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন ব্রিগেডিয়ার নওবাহার।
এদিকে মনসুর ইজাজের আইনজীবী আকরাম শায়খ জানিয়েছেন, মনসুর ১৬ জানুয়ারির তদন্ত কমিশনের সামনে হাজির হতে রাজি রয়েছেন। শায়খ বলেন, মনসুর ইজাজ এবং হাক্কানির মধ্যে ব্ল্যাকবেরি ফোনে যে কথোপকথন হয়েছে তা কমিশনে জমা দিতেই পাকিস্তান আসছেন মনসুর। এ বিষয়ে ইজাজ ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট টেলিফোন অপারেটরকে এসব কথোপকথন জমা দেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। মনসুর ইজাজকে পাকিস্তানে যাতে কোনো প্রকার গ্রেফতারের শিকার না হতে হয় তার দাবি জানিয়েছেন তার আইনজীবী। তিনি বলেন, মনসুর পাকিস্তানে ফিরলে মিথ্যা মামলা করে তাকে হয়রানি করতে পারে সরকার।

No comments

Powered by Blogger.