হাইকোর্টের রুল-স্কুলে ভর্তিতে বাড়তি টাকা নিলে কেন শাস্তি নয়

রকারি নীতি লঙ্ঘন করে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে বাড়তি অর্থ আদায়ের ঘটনা তদন্ত করে এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। গতকাল সোমবার বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ একটি রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রুল জারির পাশাপাশি অন্তর্বর্তীকালীন ওই নির্দেশনা দেন। তিন সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে নীতিমালার বাইরে
বাড়তি অর্থ আদায় কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে। ঘটনা তদন্ত করে বাড়তি অর্থ কেন ফেরত দেওয়া হবে না এবং বাড়তি অর্থ আদায়কারীদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।
রুলে নীতিমালার আলোকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ব্যর্থতা কেন অবৈধ হবে না, তা ও জানতে চাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া নীতিমালা দ্রুত কার্যকরের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তাও রুলে জানতে চাওয়া হয়।
রিট আবেদনে শিক্ষাসচিব, অর্থসচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, দেশের নয়টি সাধারণ ও মাদ্রাসা বোর্ডের চেয়ারম্যান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ ১৪ জনকে বিবাদী করা হয়েছে।
সম্প্রতি বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে বাড়তি ফি নেওয়া হচ্ছে। এ মর্মে প্রথম আলোসহ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বাড়তি ফি নেওয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এবং নিম্নমাধ্যমিক, মাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে অনুসরণীয় নীতিমালা-২০১১ দ্রুত কার্যকরের নির্দেশনা চেয়ে রিট আবেদনটি করা হয়। ২০১১ সালের ১৪ ডিসেম্বর নীতিমালাটি করা হয়েছিল।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধূরী এবং বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) উপপরিচালক ফরিদা ইয়াসমিন আবেদনকারী হয়ে রিটটি করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেওয়া আশরাফুল হাদী বলেন, এই নীতিমালার ৯ ধারা অনুসারে ঢাকা মহানগরে ভর্তির জন্য সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার, অন্য মহানগরে সর্বোচ্চ তিন হাজার এবং পৌর এলাকায় সর্বোচ্চ দুই হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া নীতিমালার ১০ ধারা অনুসারে নীতিমালা লঙ্ঘন করলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের এমপিও বাতিলসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়। কিন্তু ভর্তির ক্ষেত্রে নির্ধারিত ফিসের বাইরে অর্থ নেওয়া হচ্ছে বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। আশরাফুল হাদী আরও বলেন, সংবিধানের ১৬, ১৭, ২৭ ও ৩১ অনুচ্ছেদ অনুসারে রাষ্ট্র সবার শিক্ষা নিশ্চিত করবে। কিন্তু বাড়তি ফি নেওয়ার ফলে অনেকে শিক্ষার সুযোগ ও অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে। ফলে এটা হবে বৈষম্যমূলক। এ ছাড়া নীতিমালা বাস্তবায়ন না হলে তা কাগুজে আইনে পরিণত হবে।
আশরাফুল হাদী আদেশ প্রসঙ্গে প্রথম আলোকে বলেন, নীতিমালার বাইরে বাড়তি ফি আদায়ের ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ জাতীয় ঘটনা তদন্ত করে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা প্রতিবেদন দিয়ে জানাতে বলা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.