জুয়েল ও পলাশের যতসব অপকর্ম

ইয়ারব হোসেন, সাতক্ষীরা থেকে: ধর্ষণ মামলার আসামি সদ্যবিলুপ্ত সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জুয়েল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক নাজমূল হুদা পলাশের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কয়েকজন শীর্ষ নেতার প্রশ্রয়ে জুয়েল ও পলাশ এক বছরের অধিক সময়ের ব্যবধানে এহেন কোন অপকর্ম নেই যা তারা করেনি। সাতক্ষীরা জেলা শহরের সরকারি, বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা থেকে শুরু করে খোদ পুলিশের কর্মকর্তাও ওই দুই ছাত্রলীগ নেতার কারণে আতঙ্কে থাকতেন। পুলিশ কনস্টেবল পদে নিজদের পছন্দের প্রার্থীর চাকরি না হওয়ায় সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারের অফিস ঘেরাও এবং শহরের পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করে। জেলার সর্বোচ্চ পুলিশ কর্মকর্তা চাকরি দিতে না পেরে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে জুয়েল ও পলাশকে শান্ত করেন। এর পর থেকে জেলার ৮ থানার ওসি ছাত্রলীগের দুই নেতার কাছে অসহায় হয়ে পড়েন। টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, নারী গঠিত ব্যাপার ছিল তাদের কাছে মামুলি ঘটনা। জুয়েল হাসান ও নাজমূল হুদা পলাশের অপকর্ম খুঁজতে বেরিয়ে আসে বিচিত্র সব অজানা কাহিনী। অনুসন্ধানে জানা গেছে, জুয়েল ও পলাশ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতাদের ম্যানেজ করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতাদের খুশি করে সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের নির্বাচিত কমিটি ভেঙে দিয়ে ২০১০ সালের ১৯শে অক্টোবর তিন সদস্যের একটি জেলা কমিটি করাতে সমর্থ হয়। কেন্দ্র থেকে সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের কমিটির দায়িত্ব পান সভাপতি জুয়েল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক নাজমূল হুদা পলাশ এবং সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয় সাইফুল আযম জিমিকে। সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের এ কমিটি বাতিলের দাবিতে সাতক্ষীরায় নেতৃত্ব প্রত্যাশী ও সাধারণ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে কয়েক দিন ধরে। এমনকি তৎকালীন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নামে সাতক্ষীরায় আদালতে মামলা করে বিক্ষুব্ধ ছাত্রলীগ নেতারা। বর্তমানে মামলাটির কার্যক্রম চলছে। এদিকে তিন সদস্যের জেলা ছাত্রলীগের কমিটি কার্যক্রম চালাতে স্বৈরাচারী পন্থা অবলম্বন করে জুয়েল ও পলাশ। তারা একে একে জেলার ৭টি উপজেলা ও কলেজ ছাত্রলীগের কমিটিগুলো সম্মেলন ছাড়াই বাতিল করে। তারা মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে দেয় নতুন নতুন কমিটি। ফলে অছাত্র ও মাদকাসক্ত এবং একাধিক বিতর্কিত ব্যক্তিরাই ছাত্রলীগের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদে চলে আসে। জুয়েল ও পলাশের এসব ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতারা বিব্রতবোধ করেন। অনেক স্থানে জেলা ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডে বিরুদ্ধে মিছিল, মানববন্ধন, কেন্দ্রীয় নেতা ও জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে প্রতিকার চান তৃণমূল ছাত্রলীগ নেতারা। আর এই ছাত্রলীগের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের শেল্টার দেয়া না দেয়া নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের গ্রুপিং শুরু হয়।

No comments

Powered by Blogger.