ধোলাইখালে মশক বৈঠক

বৃহত্তর ঢাকা মশক ইউনিয়ন নেতারা জরুরি বৈঠক ডেকেছেন। ধোলাইখাল সংলগ্ন ড্রেনের ওপর ঢাকার বিভিন্ন এলাকার মশারা উপস্থিত হলেন। প্রথমে জনৈক মশক নেতা বললেন, 'আপনারা অবগত আছেন, ঢাকা সিটি করপোরেশনকে দুই ভাগ করা হয়েছে। ডিসিসি উত্তর এবং ডিসিসি দক্ষিণ। কর্তৃপক্ষের ধারণা, এর ফলে তাদের কর্মক্ষমতা এবং কর্মদক্ষতা বাড়বে। যদি তাই হয় তাহলে সেটা হবে আমাদের জন্য চিন্তার বিষয়।
এ ব্যাপারে আমাদের করণীয় নির্ধারণ জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে।'ইউনিয়নের শিয়ালবাড়ি অঞ্চলের সাধারণ সম্পাদক বললেন, 'ডিসিসি দুই ভাগ হলে হোক কিন্তু মশা মারার ওষুধ কি আগের সিস্টেমে কিনবে না নতুন কোনো সিস্টেম অ্যাপ্লাই করবে তা জানা দরকার।'
মশক ইউনিয়নের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান সার্জেন্ট মতিনকে ফ্লোর দেওয়া হলো, 'আমি যতদূর খবর পেয়েছি তা হলো, দুই ভাগ হলেও কেনাকাটা আগের সিস্টেমেই হবে। মানে বরাদ্দ টাকার অর্ধেক ক্রয় প্রক্রিয়ার শুরুতেই হাপিস এবং বাকি অর্ধেক দিয়ে নিম্নমানের ওষুধ ক্রয় হবে। সেই ওষুধের ৮০ শতাংশ মশার কয়েল কোম্পানির কাছে বিক্রি করে বাকি ২০ শতাংশ ছিটানোর জন্য রাখা হবে। ওদিকে এই ওষুধ ছিটানোর জন্য বরাদ্দ দিতে দেরি হতে থাকবে এবং এক পর্যায়ে ডেট এক্সপিয়ার হয়ে সেই ওষুধ তার কার্যক্ষমতা হারাবে। ঘটনার এই পর্যায়ে মিলবে ছিটানোর বরাদ্দ। তারপর এক সময় সেটা ছিটানো হবে।'
উত্তরা থেকে আসা প্রতিনিধি ফ্লোর পেলেন, 'শেষ পর্যন্ত যা ছিটানো হয় তা আমাদের জন্য কতটুকু বিপজ্জনক?' মশক পরিষদের সেন্ট্রাল চিকিৎসক ডা. চম্মন বাহার বললেন, 'ডেট ওভার হয়ে যাওয়া মশার ওষুধ মশাদের জন্য তেমন ক্ষতিকর নয়। অতিরিক্ত সেবনে ডায়রিয়াজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে সেটা জীবনহানিকর নয়।'
ডাক্তারের বক্তব্য শুনে সবাই হাততালি দিয়ে উঠলেন। হাততালি শেষে ঠাঠারীবাজার শাখার সভাপতি বললেন, 'সাবাস। তাহলে খুব একটা চিন্তার কিছু নেই।' সেন্ট্রাল প্রেসিডেন্ট বললেন, 'কিন্তু আমি অন্য একটা জিনিস নিয়ে চিন্তিত। সেটা হচ্ছে দলীয় শৃঙ্খলা। আমি আপনাদের আগেই বলেছিলাম, ডিসিসিতে চাকরি করে এমন কারও বাসায় যাবেন না। তাদের কামড়াবেন না। এতে তারা ভাববে দেশে মশক নেই। দেশ মশকমুক্ত। কিন্তু সংগঠনের আদেশ না শুনে আপনারা প্রায়ই নিষিদ্ধ বাড়িতে যান এবং নিষিদ্ধ মানুষকে কামড়ান। আমার মনে আছে, আপনারা একবার স্বয়ং মেয়রকে কামড়ে ডেঙ্গু বানিয়ে দিয়েছিলেন। এবারও আপনারা নিশ্চয়ই তেমন কিছু করেছেন। তা না হলে এমন সিদ্ধান্ত মানুষরা নিল কেন? যাহোক, সিটি করপোরেশন দুই ভাগ হওয়া নিয়ে আমাদের টেনশনের কিছু নেই। সুতরাং ডিসিসি দুই ভাগ হওয়া উপলক্ষে আগামীকাল ফাইফস্টারে ঢাকা মশক ইউনিয়নের পার্টি। আপনারা সবাই উপস্থিত থাকবেন।'

No comments

Powered by Blogger.