পাকিস্তানের বিমানঘাঁটি ছাড়ছে যুক্তরাষ্ট্র

দু'দেশের মধ্যে নাজুক সম্পর্ক মেরামতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানির সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন। সীমান্তে ন্যাটো হামলায় ২৪ পাকিস্তানি সেনা নিহত হওয়ায় শনিবার নতুন করে শোক প্রকাশ করেন হিলারি। এ সময় তিনি আফগান সম্মেলন বয়কটের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানান। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর এ তথ্য জানিয়েছে। লাদেন হত্যার পর এবার ২৪ সেনা নিহতের ঘটনায় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে দুই


ঘনিষ্ঠ সহযোগী দেশ পাক-মার্কিন সম্পর্কের ব্যাপক অবনতি ঘটে। এদিকে পাকিস্তানের শামসি বিমানঘাঁটি ছাড়তে শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল একটি মার্কিন ওয়ারক্রাফট পাকিস্তানের শামসি বিমানঘাঁটিতে আসে এবং যুক্তরাষ্ট্রের পথে উড়ে যায়। একটি টেলিভিশন চ্যানেল জানিয়েছে কঠোর গোপনীয়তার মধ্য দিয়ে তারা বিমানঘাঁটি ছাড়ছে। এফবিআই কর্মকর্তারা এর দেখভাল করছে। এ ঘাঁটি থেকেই ড্রোন হামলা চালাত যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়ে কোনো দেশের কর্মকর্তাই মুখ খুলছেন না। খবর : এএফপি, আলজাজিরা, ডন নিউজ, সিএনএন।
আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ প্রশ্নে জার্মানির বনে আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরুর দু'দিন আগে শনিবার গিলানিকে ফোন করলেন হিলারি। পাকিস্তান ওই সম্মেলন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে।
ফোনালাপে হিলারি বলেন, গত সপ্তাহে মোহমান্দে ২৪ পাকিস্তান সেনার অনিচ্ছাকৃত ও মর্মান্তিক মৃত্যুর জন্য নিহতের পরিবার ও পাকিস্তানি জনগণের কাছে আমরা গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, পাকিস্তানের সার্বভৌমত্বকে শ্রদ্ধা করে যুক্তরাষ্ট্র। পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও স্বার্থের ভিত্তিতে যৌথ অংশীদারিত্বে দু'দেশের প্রতিশ্রুতির প্রতি যুক্তরাষ্ট্র শ্রদ্ধাশীল বলে উল্লেখ করেন তিনি। এ সময় হিলারি পাক প্রধানমন্ত্রীকে আজ শুরু হওয়া বন সম্মেলন বয়কট করার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানান।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এ ঘটনাকে ট্র্যাজেডি আখ্যা দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করার পর এবার হিলারিও এ ঘটনায় শোক প্রকাশ করলেন। তবে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ওবামা এ ঘটনায় ক্ষমা চাইবেন না বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলতে থাকায় এবং তদন্ত প্রাথমিক অবস্থায় থাকায় এখনই ঘটনার জন্য ক্ষমা চাওয়া ঠিক হবে না।
২৫ নভেম্বর শুক্রবার গভীর রাতে পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের আফগান সীমান্তে মোহমান্দ এলাকায় পাকিস্তানের একটি সেনা চৌকির ওপর হামলা চালায় আফগানিস্তানে মোতায়েন ন্যাটো বাহিনী। এতে ২৪ পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়।
এর আগে গত মে মাসে আল কায়দার প্রধান নেতা ওসামা বিন লাদেন হত্যা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তান সম্পর্কে প্রকাশ্য টানাপড়েন শুরু হয়। এ ঘটনায় পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘিত হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। আরও কিছু বিষয় নিয়ে দু'দেশের ভুল বোঝাবুঝি বাড়তে থাকে।
ঠিক সে সময়টিতেই যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ন্যাটো বাহিনীর হামলায় পাকিস্তানের ২৪ সেনা নিহত হয়।
পাকিস্তানকে ছাড়া আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ প্রশ্নের কোনো সুরাহা হওয়া সম্ভব নয়। তাই ২০১৪ সালের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে ন্যাটো বাহিনী প্রত্যাহারের পর ওই এলাকায় প্রভাব বজায় রাখতে পাকিস্তানকে দরকার যুক্তরাষ্ট্রের।

No comments

Powered by Blogger.