যুক্তরাজ্যের কারণে সম্পর্ক খারাপ করবেন না

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইউরোপের দেশগুলোর প্রতি ‘যুক্তরাজ্যের কারণে’ ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ না করার আহ্বান জানিয়েছে। লন্ডন ত্যাগ করা ইরানি কূটনীতিকদের গতকাল শনিবার তেহরানে স্বাগত জানানোর সময় দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রামিন মেহমানপারাস্ত এ আহ্বান জানান।
বিমানবন্দরে ইরানি মুখপাত্র বলেন, ‘যুক্তরাজ্য সরকার আমাদের দ্বিপক্ষীয় ইস্যুতে ইউরোপের অন্যান্য দেশকে টেনে আনার চেষ্টা করছেন। কিন্তু আমি ইউরোপের দেশগুলোকে বলতে চাই, যুক্তরাজ্যের কারণে ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করবেন না।’ ইরানের ফার্স বার্তা সংস্থা এ কথা জানায়।
কূটনীতিকদের স্বাগত জানাতে শতাধিক শিক্ষার্থী ফুলের মালা নিয়ে তেহরান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গিয়েছিল। তারা ‘যুক্তরাজ্য নিপাত যাক’ স্লোগান দেয়। ‘গুপ্তচর দূতাবাস চিরতরে বন্ধ হয়েছে’—এমন কথা লেখা প্ল্যাকার্ড ছিল অনেকের হাতে।
গত মঙ্গলবার তেহরানে অবস্থিত ব্রিটিশ দূতাবাসে বিক্ষোভকারীদের হামলার জের ধরে লন্ডন থেকে ইরানের দূতাবাস সরিয়ে নিতে ৪৮ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম হেগ। ওই সময়সীমা গত শুক্রবার সন্ধ্যায় শেষ হয়। ইরানের কূটনীতিকেরা রাতেই লন্ডন থেকে স্বদেশগামী বিমানে চড়েন। এর আগে গত বুধবার যুক্তরাজ্য তাদের তেহরান দূতাবাস থেকে সব কর্মকর্তা প্রত্যাহার করে নেয়। এ হামলার পর যুক্তরাজ্যের প্রতি সংহতি প্রকাশ করতে ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও নেদারল্যান্ড তেহরান থেকে তাঁদের রাষ্ট্রদূতদের প্রত্যাহার করে নেয়। যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তারা বলেছেন, ঘটনার পেছনে ইরান সরকারের সমর্থন ছিল বলে তাঁদের বিশ্বাস।
সম্ভাব্য পরমাণু অস্ত্রসংক্রান্ত পরীক্ষার পর যুক্তরাজ্য ইরানের বিরুদ্ধে নতুন আর্থিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পর এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে ব্রিটিশ দূতাবাসে হামলার সমর্থনে গত শুক্রবারও তেহরানে নতুন করে বিক্ষোভ হয়েছে। ইরানের সরকারি বার্তা সংস্থা ইরনা এ তথ্য জানায়।
যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত ডমিনিক চিলকট ব্রিটিশ গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তেহরানে দূতাবাসে হামলার বিবরণ দিয়েছেন। চিলকট বলেন, ওই হামলার পেছনে সরকারের উচ্চপর্যায়ের সমর্থন ছিল—এ ব্যাপারে তাঁর কোনো সন্দেহ নেই।
গত বৃহস্পতিবার সর্বসম্মতভাবে মার্কিন সিনেটে ইরানের ওপর নতুন করে কঠিন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তাব পাস হয়েছে। ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংককে বিশ্ব অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন করার লক্ষ্যে অবরোধ আরোপের নতুন এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নও (ইইউ) ইরানের ১৪১টি প্রতিষ্ঠান ও ৩৯ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য তুরস্কের প্রতি আহ্বান জানান।
কূটনীতিক কমাবে ফ্রান্স: তেহরানে ফরাসি দূতাবাসের আকার কমিয়ে আনতে কিছু কূটনীতিককে সরিয়ে নেওয়া হতে পারে। ব্রিটিশ দূতাবাসে হামলার পর সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে এ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে ফ্রান্সের এক কূটনীতিক জানান।

No comments

Powered by Blogger.