ভোটারের দুয়ারে প্রার্থীরা

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনকে ঘিরে পুরো নগরে বিরাজ করছে নির্বাচনী আমেজ। মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে যাচ্ছেন। ভোটাররাও এ সুযোগে বিভিন্ন নাগরিক সমস্যা ও দাবি-দাওয়া তুলে ধরছেন। আচরণবিধি পালনে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা কঠোর অবস্থান নেওয়ায় নানা কৌশলে ভোটারদের সঙ্গে জনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। আগামী ১৪ ডিসেম্বরের পর থেকে আনুষ্ঠানিক প্রচার


শুরু হবে।এদিকে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের প্রথম দিন রোববার সকালে এক মেয়র প্রার্থী এবং সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদের ৫ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করাহয়েছে। বিকেলে ২২ থেকে ২৭ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়। এতে ৭ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। এদিকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র মনোনয়নপত্রের সঙ্গে না দেওয়ায় বেশ ক'জন কাউন্সিলরের মনোনয়নপত্র স্থগিত করা হয়েছে। তাদের ওই সব কাগজপত্র জমা দিতে সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার এক থেকে ২১ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হবে। স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী সাংবাদিক হাসানুল আলম জামানতের ব্যাংক ড্রাফট জমা না দেওয়ায় তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। এর ফলে ৯ মেয়র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হলো। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট আফজল খান, বিএনপির মনিরুল হক সাক্কু, জাতীয় পার্টির এয়ার আহমেদ সেলিম, আওয়ামী লীগের দুই বিদ্রোহী প্রার্থী অ্যাডভোকেট আনিছুর রহমান মিঠু ও নূর উর রহমান মাহমুদ তানিম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) শিরিন আক্তার, স্বতন্ত্র প্রার্থী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য চঞ্চল কুমার ঘোষ, মেজর (অব.) মামুনূর রশিদ ও মোঃ সালমান সাঈদ। রিটার্নিং কর্মকর্তা মোঃ আবদুল বাতেন বলেন, উপযুক্ত কারণেই মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। তিনি বলেন, যাদের মনোনয়নপত্র স্থগিত করা হয়েছে অধিকতর যাচাই-বাছাই শেষে আজ সোমবারের মধ্যে তাদের ফল জানানো হবে। তিনি জানান, যাদের মনোনয়নপত্র বাতিল হলো তারা পরবর্তী ৩ দিনের মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কাছে আপিল করতে পারবেন। আপিল জমা হওয়ার তিন দিনের মধ্যে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। প্রার্থীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে কুমিল্লা সার্কিট হাউজে বিভাগীয় কমিশনারের আপিল কার্যালয় স্থাপন করা হয়েছে।
এদিকে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন ২৮ নভেম্বর কুমিল্লা জেলা পরিষদে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় প্রার্থীরা সঙ্গী-সাথী ছাড়া ভোটারদের বাড়ি বাড়ি যেতে পারবেন বলে উল্লেখ করেছিলেন। অন্য কোনোভাবে প্রচার চালালে আচরণবিধি লঙ্ঘন হবে । প্রার্থীরা সেভাবেই বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন।
এদিকে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী শিরিন আক্তার তাকে মোবাইলে কে বা কারা হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা তাকে পুলিশের শরণাপন্ন হয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে বলেছেন। তিনি বলেন, ওই ফোন নাম্বার থেকে তাকে নির্বাচন না করতে বার বার হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে। কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ মহিউদ্দিন মাহমুদ বলেন, শিরিন আক্তার বিষয়টি আমাদের জানাননি।
৩ নম্বর ওয়ার্ডে সর্বাধিক এবং ৯ ও ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে সবচেয়ে কম কাউন্সিলর প্রার্থী :২৭টি সাধারণ ওয়ার্ডের মধ্যে শাসনগাছা, রেইসকোর্স ও কালিয়াজুরির অংশ নিয়ে গঠিত ৩ নম্বর ওয়ার্ডে সর্বোচ্চসংখ্যক ১৬ জন কাউন্সিলর প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। অন্যদিকে বাগিচাগাঁও ও নতুন চৌধুরীপাড়া নিয়ে গঠিত ৯ নম্বর ওয়ার্ড ও সদর দক্ষিণ কোটবাড়ী এলাকা নিয়ে গঠিত ২৫ নম্বর ওয়ার্ড থেকে সবচেয়ে কমসংখ্যক ৪ জন করে কাউন্সিলর প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ২৭টি ওয়ার্ডে সর্বমোট ২৪২ জন কাউন্সিলর প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র জমা দেন।

No comments

Powered by Blogger.