পবিত্র কোরআনের আলো-বদর যুদ্ধের পটভূমি এবং মুসলিম জাতির অভ্যুদয়ের তাৎপর্য

. কামা আখ্রাজাকা রাব্বুকা মিম্ বাইতিকা বিল্হাক্কি; ওয়া ইন্না ফারীক্বাম মিনাল মু'মিনীনা লাকা-রিহূন। ৬. ইউজা-দিলূনাকা ফিল হাক্কি বা'দা মা তাবাইয়্যানা কা-আন্নামা ইউছা-ক্বূনা ইলাল মাওতি ওয়া হুম ইয়ানযুরূন।৭. ওয়া ইয ইয়ায়ি'দুকুমুল্লা-হু ইহ্দাত তা-য়িফাতাইনি আন্নাহা লাকুম ওয়া তাওয়াদ্দূনা আন্না গাইরা যা-তিশ্ শাওকাতি তাকূনু লাকুম ওয়াইউরীদুল্লা-হু আন ইউহিক্কাল হাক্কা বিকালিমাতিহি ওয়া ইয়াক্ব্ত্বাআ' দা-বিরাল কা-ফিরীন।


৮. লিইউহিক্কাল হাক্কা ওয়া ইউবতি্বলাল বা-তি্বলা ওয়া লাও কারিহাল মুজরিমূন। ৯. ইয তাছতাগীছূনা রাব্বাকুম ফাছ্তাজা-বা লাকুম আন্নী মুমিদ্দুকুম বিআলফিম্ মিনাল মালা-য়িকাতি মুরদিফীন। [সুরা : আল-আনফাল, আয়াত : ০৫-০৯]
অনুবাদ : ৫. (হে নবী!) আপনার প্রভু আপনাকে নিজ ঘর থেকে বের করে এনেছেন সঠিক পথেই, কিন্তু মুমিনদেরই একটি অংশ এ কাজটি পছন্দ করছিল না।
৬. সত্য স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার পরও তারা আপনার সঙ্গে এমনভাবে তর্ক করছে, যেন তাদের মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে আর তারা যেন তা দিব্যি দেখতে পাচ্ছে।
৭. সেই সময়কে স্মরণ করো, যখন আল্লাহ তোমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে দুটি দলের মধ্যে কোনো একটি দল তোমাদের হাতে পরাজিত হবে। আর তোমাদের কামনা ছিল নিষ্কণ্টক বা কম সশস্ত্র দলটির সঙ্গে তোমাদের মোকাবিলা হোক। আল্লাহ তায়ালা তাঁর বাণী দিয়ে সত্যকে সত্যরূপে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন এবং কাফিরদের শেকড় কেটে দিতে চেয়েছিলেন।
৮. এভাবেই তিনি সত্যকে সত্যরূপে এবং অসত্যকে অসত্যরূপে প্রমাণ করতে চান, পাপাচারীরা তা যতই অপছন্দ করুক না কেন।
৯. স্মরণ করো, যখন তোমরা নিজ প্রতিপালকের কাছে ফরিয়াদ করেছিলে। তখন তিনি তোমাদের ফরিয়াদে সাড়া দিয়ে বললেন, আমি তোমাদের সাহায্যার্থে এক হাজার ফেরেশতার একটি বাহিনী পাঠাচ্ছি, যারা ধারাবাহিকভাবে আসবে।
ব্যাখ্যা : আনসার মুসলিমদের এক নেতা সাদ ইবনে মুয়াজ একবার কাবা জিয়ারতে মক্কায় গিয়েছিলেন। তখন আবু জাহেল তাকে বলল, তোমরা আমাদের শত্রুদের আশ্রয় দিয়েছ। এখন যদি তুমি আমাদের এক সর্দারের আশ্রয়ে না থাকতে, তবে তোমাকে জীবিত ফিরে যেতে দেওয়া হতো না। এতেই বোঝা গেল মদিনার কোনো মানুষ মক্কায় এলে তাকে হত্যা করা হবে। এর প্রতিউত্তরে মুয়াজও সেদিন হুমকি দিয়ে এসেছিলেন, কুরাইশরা শামে বাণিজ্য করতে গেলে পথে তাদের আটকানো হবে। উল্লেখ্য, শামের রাস্তা মদিনার ওপর দিয়েই ছিল। এরপর দুটি ঘটনা ঘটেছিল। মক্কার একটি বাহিনী মদিনার নিকটবর্তী এলাকা থেকে মুসলমানদের গবাদিপশু লুট করে নিয়ে এসেছিল। আর অপর ঘটনাটি হলো, আবু সুফিয়ানের নেতৃত্বে মক্কার একটি বিশাল বাণিজ্য কাফেলা শামে গিয়েছিল। এক হাজার মালবাহী উটের এ বাণিজ্য বহরের পাহারায় ছিল ৪০ জন সশস্ত্র অশ্বারোহী যোদ্ধা। ব্যবসা করে তারা যখন ফিরে আসছিল, তখন সাদ ইবনে মুয়াজের চ্যালেঞ্জ মোতাবেক তাদের ওপর হামলা করার সিদ্ধান্ত নিল মুসলমানরা। আবু সুফিয়ান এ খবর পেয়ে দ্রুত সাহায্যের জন্য মক্কায় খবর পাঠায়। আর তৎক্ষণাৎ আবু জাহেলের নেতৃত্বে এক হাজার যোদ্ধার এক বাহিনী নিয়ে মদিনা আক্রমণের জন্য বের হয়ে পড়ে। মুসলমানদের সামনে তখন বিতর্কের প্রশ্ন ছিল এই যে তারা কোন দলটিকে প্রতিরোধ করতে যাবে। অর্থাৎ তারা আবু সুফিয়ানের বাণিজ্য দলকে আক্রমণ করতে যাবে, নাকি আবু জাহেলের বাহিনীকে প্রতিরোধ করতে যাবে। অনেকের অভিমত ছিল অপেক্ষাকৃত দুর্বল বাণিজ্য দলকে আক্রমণ করতে যাওয়া। তবে রাসুল (সা.) চাইছিলেন আবু জাহেলের দলকে মোকাবিলা করতে যাওয়া। দুটোই ছিল সঠিক সিদ্ধান্ত। এই আয়াতগুলোতে সে কথাই পরিষ্কার করে বলা হয়েছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী

No comments

Powered by Blogger.