বাড়লে দাম তেল আর গ্যাস এই নিয়া ক্যান প্যাঁচাল দ্যাস!

ইএমএফ আরও যেসব শর্ত দিতে পারেআন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল_ আইএমএফের পরামর্শেই বাড়ানো হয়েছে দাম। তাদের খবরদারি-মাতব্বরি করার ক্ষেত্রের শেষ নেই। সুযোগ বুঝেই যে কোনো জায়গায় হাত গলিয়ে দেয়! খবরদারিতে মানুষ বিরক্ত হলেও সরকারের 'ইয়েস' না বলে উপায় থাকে না! দেখা যাক, আইএমএফ ভবিষ্যতে বাংলাদেশ সরকারকে আরও কী কী বিষয়ে লেসন দিতে পারে_


তোমাদের স্কুলগুলোতে পড়ানো হয়, সূর্য পূর্ব দিকে ওঠে। ব্রিটেনের সূর্য কখনও অস্ত যায় না, এটা পড়ানো হয় না কেন?
ষ সব সময় ছেলেরা মেয়েদের বিয়ে করে। কেন মেয়েরা নিষ্ক্রিয় থাকবে, কোন যুক্তিতে? তারা কি পারে না ছেলেদের বিয়ে করতে!
ষ হরতাল বন্ধ করার কথা বললে শুনবে না। তাহলে সংক্ষিপ্ত না করে, একেবারে বছর দশেকের জন্য দীর্ঘ হরতাল ডাকো!
রাতের বেলা তোমরা ঘুমাও আর দিনের বেলায় কাজ করো। এখন থেকে দিনের বেলা ঘুমাবে, রাতে কাজ করবে!
কমের চেয়ে সবকিছু বেশিই ভালো। দ্রব্যমূল্য বেশি তো ক্ষতি কী, জনগণকে অভ্যস্ত করাও! ক্রয় ক্ষমতা বাড়াও।'

মূল্য বৃদ্ধির ইতিবাচক দিক
দাম বাড়ানো নিয়ে অনেকেই নেতিবাচক অনেক কথা বলবে; কিন্তু শেষ কথা হচ্ছে, সবকিছুরই ইতিবাচক দিক আছে। আমরা ইতিটা না খুঁজে নেতি নিয়ে বেশি মাতামাতি করি! দেখা যাক, এ মূল্য বৃদ্ধি কোন কোন ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে_
বাংলাদেশিদের নাকি ধৈর্য-সহ্যশক্তি কম! মূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানুষের সহ্যশক্তি আরও একদফা বাড়বে!
সব সরকারই আগের সরকারের সবকিছু খারিজ করে দিয়ে নিজেদের সফলতা দাবি করে। আগামীতে অন্য কোনো সরকার ক্ষমতায় এলে বর্তমান সরকার বুক ফুলিয়ে বলতে পারবে_ আমাদের সময় তেল-গ্যাসের মূল্য ছিল মাত্র অত টাকা!
হ বেকার সমস্যার এ দেশে মানুষ আলোচনা করার বিষয় পায় না বললেই চলে। মূল্য বৃদ্ধির কারণে কিছুদিন অনায়াসেই চায়ের কাপে ঝড় তোলা যাবে!
স্থবির থাকার চেয়ে ভালো-মন্দ কিছু একটা হওয়াটাই বড় কথা। তো হলো! আমরা স্থবির নেই!
'জনস্বার্থ বিবেচনায়' বিইআরসি মূল্য বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে। 'জনস্বার্থ' যে আসলে কী, জনগণ এর মাধ্যমে অবগত হওয়ার সুযোগ পেল!


তেল-গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রভাব
নিউটনের সূত্রমতে, সবকিছুর সমান এবং বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে। সুতরাং তেল-গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে যতই হাউকাউ করা হোক না কেন, এর উপযোগিতাও কম নয়_
বিরোধী দল সব সময়ই আন্দোলন-সংগ্রামের ইস্যু সংকটে ভোগে। মূল্য বৃদ্ধি তাদের একটা হরতাল করার মওকা এনে দিল।
সিএনজিওলাদের বালখিল্য আবদার 'মিটারে যামু না, ঠিকা... ট্যাকা দিতে হইব'। এই আবদার সব সময় থাকেই। এখন বলতে পারবে, 'গ্যাসের দাম বাড়ছে, মিটারের ডাবল দিতে হইব'!
ষ তেল-গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধিতে লোকাল বাসে লাগবে ক্যাচাল। বাস কর্তৃপক্ষ বনাম যাত্রী। এতে বিতর্কচর্চায় নতুন দিগন্ত প্রসারিত হবে_ তর্কাতর্কি, যুক্তি আর পাল্টা যুক্তি উপস্থাপন তো এক ধরণের বিতর্কই!
সিএনজি, ডিজেল ও গ্যাসচালিত বাসের ভাড়া বাড়ানো হয়েছে কিলোমিটারপ্রতি ৫ পয়সা, অন্যদিকে অটোরিকশার ভাড়া বেড়েছে কিলোমিটারপ্রতি ১৪ পয়সা; প্রতি মিনিট বিরতিকালীন চার্জ বেড়েছে ১০ পয়সা। এ ধরনের খুচরা-খাচরা হিসাব গণিত চর্চায় অসামান্য ভূমিকা রাখবে!
ষ অর্থনীতিবিদরা ফাঁকতালে একটু বিশ্লেষণ এবং মতামত দেওয়ার মওকা পেলেন। এমনিতে অর্থনীতিবিদগণ জটিল-কঠিন তত্ত্ব ও তথ্য দেওয়ার সুযোগ পান না বললেই চলে!

মূল্য বৃদ্ধিতে বিশেষজ্ঞ মন্তব্য
ভালো-মন্দ যা-ই ঘটুক না কেন, এ দেশে বিশ্লেষক এবং বিশেষজ্ঞের অভাব হয় না। যেমন অভাব হয়নি তেল-গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির ক্ষেত্রেও। জেনে নিই বিশেষজ্ঞদের মতামত_
সরকার সমর্থক : দাম বাড়ছে তো কী হইছে! তোর না পোষাইলে তুই কিনবি না!
বিরোধী দলের কর্মী : আমাদের দল কখনোই এমন অমানবিকভাবে দাম বাড়াতে পারত না!
রিকশাওলা : দাম বাড়ছে, খারাপ অয় নাই, এহন তাল মিলাইয়া আমার ভাড়াও বাড়ছে!
গ্রাম্য গৃহকর্তা : প্রকৃতিই আমাগো আপন! মাইনে কেরোসিনের কুপি না জ্বালাইয়া সূর্য আর চান্দের আলোয় কাম সারতে অইবো!
পেট্রোল পাম্প মালিক : এটা কিন্তু অনাচার! দাম বাড়ার আগে আমরা যেমন লিটার প্রতি তেলে ৭ টাকা পেতাম। দাম বাড়ার পর এখনও ৭ টাকাই পাই! হ্রাস-বৃদ্ধিতে অর্থনীতিবিদ মোকছেদের তত্ত্ব হচ্ছে...!
প্যাঁচআল পাঠক : প্যাঁচআল এমন যে, সে তক্কে তক্কে থাকে কখন একটা অঘটন ঘটে! এই যেমন এবারও সে ঠিকই এ অঘটনকে কেন্দ্র করে প্যাঁচাল পাড়বে!
প্যাঁচআল সম্পাদক : আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়লে এখানে কী করে...। ধ্যাৎ কী বলতে চাই আর মুখ দিয়ে কী আসে!

No comments

Powered by Blogger.