লিবিয়ায় বিদ্রোহীদের সংঘাত বাড়ছে

লিবিয়ার বিদ্রোহী কয়েকটি দলের সংঘর্ষে গত কয়েকদিন কমপক্ষে ১০ জন অস্ত্রধারী মারা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে উৎখাতে অংশ নেওয়া বিদ্রোহী কয়েকটি দলের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণে এসব সংঘর্ষ হয়েছে। দলগুলো রাজধানী ত্রিপোলি ও তার আশপাশের কয়েকটি এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে।ত্রিপোলির পশ্চিমাঞ্চলীয় জাউয়িয়াহ শহরে গতকাল রবিবার অন্তত দুই যোদ্ধা মারা যায়। গত শনিবার থেকে সংঘর্ষ চলছে সেখানে।


জাউয়িয়াহর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যোদ্ধা বলেন, 'নতুন এক যুদ্ধক্ষেত্রে বড় ধরনের যুদ্ধ বেধে গেছে। আমরা ওয়েরশিফান্না গোত্রের সঙ্গে লড়াই করছি। গাদ্দাফির অনুগতরা এ গোত্রের মধ্যে আছে।' ইমাইয়া সামরিক ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েই মূলত এ দুটি গোত্রের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।
জাউয়িয়াহর মিলিশিয়া কমান্ডার খালিদ কেসাব জানান, গত শনিবার ওই অঞ্চলে সংঘর্ষ বাধার পর তাঁর তিনজন যোদ্ধা নিহত হয়েছে। এর আগের দিন শুক্রবার দুজন এবং গত বৃহস্পতিবার আরো তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। শতাধিকের বেশি যোদ্ধা জাউয়িয়াহর বিভিন্ন প্রান্তে নিরাপত্তা চৌকি বসিয়েছে এবং ট্রাকে ভারী অস্ত্রশস্ত্র মোতায়েন করেছে। তাদের ধারণা, ওয়েরশিফান্না নিয়ন্ত্রিত হাশান এলাকায় গাদ্দাফির ছেলে সাইফ আল-ইসলাম লুকিয়ে আছে। বিদ্রোহীদের অন্তর্বর্তী জাতীয় পরিষদ (এনটিসি) চেয়ারম্যান গত শনিবারই জাউয়িয়াহ ও ওয়েরশিফান্নার যোদ্ধাদের মধ্যে সমঝোতা স্থাপনের উদ্যোগ নেন। এর পরও সংঘর্ষ অব্যাহত আছে।
গাদ্দাফির পতনের পর বেশ কয়েকটি উপজাতীয় ও মিলিশিয়া গোষ্ঠী ত্রিপোলির বিভিন্ন অংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
গাদ্দাফি সরকারের পতনের প্রায় এক মাস হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত পুলিশ বাহিনী সেখানে পুরোপুরি সক্রিয় হয়ে উঠতে পারেনি। দুই সপ্তাহ আগে ত্রিপোলির কেন্দ্রীয় একটি হাসপাতালের নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে মিসরাতা ও জিনতান এলাকার বিদ্রোহীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। ত্রিপোলির অভিজাত হাই আল-আন্দালুস এলাকায় ত্রিপোলির স্থানীয় একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে জিনতানি মিলিশিয়াদের গুলিবিনিময়ের কমপক্ষে তিনটি ঘটনা ঘটে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, বিদ্রোহীদের পুরোপুরি নিরস্ত্র করার আগ পর্যন্ত এ ধরনের সংঘর্ষ চলতেই থাকবে। মনোনীত অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী আবদুর রাহিম আল-কিবের নেতৃত্বে নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের আগে অস্ত্র জমা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা সম্ভব নয় বলেও ধারণা করছেন তাঁরা। সূত্র : আলজাজিরা, ওয়াশিংটন পোস্ট।

No comments

Powered by Blogger.